• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে ইরানে শক্তিশালী আইন পাস 

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:২১
পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে ইরানে শক্তিশালী আইন পাস 
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি (ছবি : ইরনা)

নিজেদের পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে নতুন একটি আইন পাস করেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পার্লামেন্ট। পরমাণু উৎপাদন কেন্দ্রে জাতিসংঘের পরিদর্শন বন্ধ করতে এবং ইউরেনিয়ামের উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে আইনটি পাস করা হলো।

সদ্য পাস হওয়া আইন অনুযায়ী, আগামী দুই মাসে ইরানের ওপর থেকে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে সরকার ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী সম্মত ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম উৎপাদন করবে।

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যার পর এই পদক্ষেপ নিলো তেহরান। গত শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানী তেহরানের বাইরে রাস্তার পাশে রহস্যমূলক এক হামলার মাধ্যমে হত্যা করা হয় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির স্থপতি মহসেন ফখরিজাদেহকে।

ইরান বিশ্বাস করে, ইসরায়েল এবং একটি নির্বাসিত একটি বিরোধী গোষ্ঠী রিমোট-কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত অস্ত্র ব্যবহার করে ফখরিজাদেহকে গুলি করে হত্যা করেছে।

আরও পড়ুন : আজারবাইজানে পরমাণু হামলা চালাতে বলছে মার্কিন মিডিয়া

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে ফখরিজাদেহের। তবে দেশটির সরকার বারবারই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মযজ্ঞ পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।

পরমাণু অস্ত্র যাতে উৎপাদন করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বরাবরই নানা ধরণের পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়ে আসছে দেশটি।

নতুন আইন কতটা প্রভাব ফেলবে?

ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদিত আইন অনুযায়ী, ২০১৫ সালে পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলোকে দুই মাস সময় দেওয়া হবে দেশটির তেল এবং অর্থনৈতিক খাতের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তি থেকে সরে আসলে ওই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনঃ আরোপ করা হয়েছিল।

এই সময়ের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে সরকার ইউরেনিয়াম উৎপাদন ২০ শতাংশ বাড়াবে এবং উন্নত সেন্ট্রিফিউজ বসাবে যা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে কাজ করবে। দেশটির নাতান্জ এবং ফর্দো পরমাণু উৎপাদন কেন্দ্রে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : আজই আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় বুরেভি

এই উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকারও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) ইরানের ফার্স সংবাদ সংস্থার খবরে বলা হয়, আজ এক চিঠিতে নতুন আইন কার্যকর করতে প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার।

আইনটি অনুমোদনের আগে প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেছেন, তার সরকার এই প্রস্তাবের সঙ্গে একমত নয়। একে কূটনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের মে মাসে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে আসেন এবং তেহরানের বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

আরও পড়ুন : আমিরাতে ভয়ঙ্কর হামলার হুঁশিয়ারি ইরানের

নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবশ্য বলেছেন, তিনি চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনবেন এবং তেহরান যদি ‘পরমাণু চুক্তির শর্ত কঠোরভাবে মেনে চলে’ তাহলে নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হবে। আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করতে যাচ্ছেন বাইডেন।

চুক্তি অনুযায়ী পরমাণু উৎপাদনের মাত্রা ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে সীমিত রাখার শর্ত ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ভঙ্গ করেছে ইরান। এর পর থেকে এই হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশে স্থিতিশীল রয়েছে।

নিম্ন মাত্রায় পরমাণু উৎপাদন যাতে মূলত ৩-৫ শতাংশ ইউরেনিয়াম-২৩৫ থাকে, তা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অস্ত্র তৈরি করতে হলে ৯০ শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম থাকতে হবে।

আরও পড়ুন : বাংলাদেশে ঢুকে মাছ ধরায় ভারতের ১৭ জেলে আটক

পরমাণু বোমা তৈরির কর্মকাণ্ডকে ঢাকতেই ইরান পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করতো- এমন সন্দেহ থেকে ২০১০ সালে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৫ সালের চুক্তিটি ছিল এই কর্মসূচিকে সীমিত করা এবং তা নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা।

সূত্র : বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড