ফের করোনার নিয়ন্ত্রণ হারাল যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যুর রেকর্ড

প্রথম দিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারিকে হেলাফেলা করার পরিণাম বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে বিশ্বে করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ড তাদের। অর্থনীতিতেও লেগেছে জোর ধাক্কা। মাঝে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে আবারও হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অন্তত ২ হাজার ৯৫৭ জন, যা গত ১৫ এপ্রিল থেকে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। গোটা মহামারির মধ্যে দেশটিতে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ডও এটাই।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ২৮৬ জন। আর মারা গেছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩০০ জন।

কোভিড ট্র্যাকিং প্রজেক্টের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। বুধবার (২ ডিসেম্বর) দেশটিতে এক লাখেরও বেশি রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আরও পড়ুন : করোনার নকল টিকা নিয়ে ইন্টারপোলের ভয়ঙ্কর সতর্কতা

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গড়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৪৮ জন, যা গত জুলাইয়ের চেয়ে প্রায় আড়াইগুণ বেশি।

গত গ্রীষ্মে করোনাজনিত কারণে দৈনিক গড়ে ১ হাজার ১৩০টি মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহে সেই সংখ্যা দেড় হাজার পার হয়ে গেছে।

আগামী দিনগুলোতে এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় দৈনিক প্রাণহানির সংখ্যা গড়ে দুই থেকে তিন হাজার হতে পারে। এমনকি তা চার হাজারের কাছাকাছিও চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন : বাংলাদেশে ঢুকে মাছ ধরায় ভারতের ১৭ জেলে আটক

ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের মেডিসিন বিভাগের সংক্রামক রোগ শাখার প্রধান ডা. ডেভিড আন্দেস জানান, তাদের হাসপাতালে ইতোমধ্যেই রোগী ধারণক্ষমতার ৯৮ শতাংশ পূরণ হয়ে গেছে। তার কথায়, সংখ্যাগুলো আমাদের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

চিকিৎসকের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন রোগীদের স্থান সঙ্কুলানে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক রোগীকেই শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বহু চিকিৎসককে মাত্রাতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন : করোনায় সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্টের মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. রবার্ট রেড ফিল্ড বলেছেন, আগামী কয়েক মাস দেশটির হাসপাতালগুলোতে রোগীর বাড়তি চাপ থাকতে পারে। তার কথায়, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি কঠিন সময় যাবে। আমি বিশ্বাস করি, দেশের জনস্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময় হতে যাচ্ছে সেটি।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান