আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আজ ২৬ নভেম্বর। ১২ বছর আগে আজকের দিনে ভারতের মুম্বাইয়ে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। আরব সাগর হয়ে মুম্বাইয়ে এসে হামলা চালায় ১০ জন সন্ত্রাসী। ভয়াবহ সেই হামলা শুধু ভারতকেই নয়, নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। জঙ্গিদের নির্বিচারে গুলিতে নিহত হয় ১৮০ জন। আহত হয় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ।
২০০৮ সালে মুম্বাই উপকূলের কোলাবার সমুদ্রতটে ডিঙ্গি নৌকায় করে আসা জঙ্গিরা মুম্বাইয়ের নানা জায়গায় গুলি, বোমা ও গ্রেনেড দিয়ে এই দিনে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালায়। যে হত্যাকাণ্ডে অন্তত ৩০ জন বিদেশি নাগরিক মারা যান। যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্সসহ বিশ্বের ১৬টি রাষ্ট্রের নাগরিকেরা ছিলেন।
পাশ্চাত্যের পর্যটকেরা যে ওই হামলার নিশানায় ছিলেন তাতে সন্দেহ ছিল না। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন আরও অন্তত সাতটি দেশের নাগরিক। আহত ও নিহতদের প্রায় সবাই ছিলেন মুম্বাইয়ের তাজমহল প্যালেস হোটেল বা নরিম্যান পয়েন্টে ওবেরয় হোটেলের অতিথি। কিংবা তারা খেতে এসেছিলেন কোলাবার লিওপোল্ড ক্যাফে রেস্তোরাঁয়।
‘২৬/১১’ নামে পরিচিত ওই হামলায় সেদিন গোটা বিশ্ব কেঁপে উঠেছিল। আজ সে ঘটনার পর ১২ বছর পেরিয়ে গেছে। ভারতের মাটিতে শুধু ‘২৬/১১’-এর মুম্বাই হামলাই নয়, গত ২০ বছরের ভারতের মাটিতে বিভিন্ন জঙ্গি হামলা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতকে।
আরও পড়ুন : বাইডেনকে ট্রাম্পের মতো সন্ত্রাসী না হতে বলছে ইরান
২০০১ সালে ভারতে জঙ্গি হামলা হয় পার্লামেন্ট ভবনে। সে সময় পার্লামেন্টে শীতকালীন অধিবেশন চললেও লোকসভা ও রাজ্যসভার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। কেউ ভাবতেও পারেনি জঙ্গিরা দেশের পার্লামেন্টে পৌঁছে যেতে পারে। লস্কর-ই-তৈয়বা, জয়েশ-ই-মোহাম্মদের জঙ্গিরা ওই হামলা চালায়। নিরাপত্তারক্ষীরা পাঁচ জঙ্গিকে হত্যা করলেও, জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় নয় জনের।
এরপর ২০০৬ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে লোকাল ট্রেনে সাতটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ‘ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন’ এই বিস্ফোরণে জড়িত ছিল বলে জানা যায়। ওই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ২১০ জনের। আহত হয় ৭১৫ জন। ২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে জঙ্গিরা তিনটি বিস্ফোরণ ঘটায়। যে বিস্ফোরণে নিহত হয় প্রায় ৩২ জন। আহত হয় ১০০ জনেরও বেশি।
২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দিল্লি থেকে পাকিস্তানের লাহোর যাওয়ার পথে এক্সপ্রেস ট্রেনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। যে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৬০ জনেরও বেশি মানুষের। আহত হয় ১২ জন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন পাকিস্তানের নাগরিক।
আরও পড়ুন : ইসরায়েলকে ক্রিমিনাল বলে কাতারকে সতর্ক করল ইরান
এরপর ২০০৮ সালের ১৩ মে জয়পুরে বিস্ফোরণে নিহত হয় ৮০ জন। আহত হয় ১৭০ জন। ২০০৮ সালে আমেদাবাদে সিরিয়াল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মোট ২১টি বিস্ফোরণ ঘটে। মৃত্যু হয় কমপক্ষে ৫০ জনের। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর গুয়াহাটির বিভিন্ন জায়গায় ১৮টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যে ঘটনায় ৮০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। এরপর ২৬ নভেম্বর ভয়ংকর সেই মুম্বাই হামলা। যা ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ কালো দিন হিসেবে আজও পরিগণিত হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ২৫ জুন ভারতের কাশ্মীরের পম্পেরে জঙ্গি হানার শিকার হয় সিআরপিএফের একটি বাহিনী। ওই হামলায় নিহত হয় কমপক্ষে ২০ জন জওয়ান।
আরও পড়ুন : নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত নেতানিয়াহু-এমবিজেড
এর তিন বছর পর ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই ঘটনায় মারা যান ৪০ জওয়ান।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড