• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে মেঘালয় ছাড়া করার পাঁয়তারা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ অক্টোবর ২০২০, ১৪:১১
বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে মেঘালয় ছাড়া করার পাঁয়তারা
মেঘালয়ে বাঙালিদের সঙ্গে খাসি গোষ্ঠীর লোকদের সংঘর্ষ (ছবি : দ্য হিন্দু)

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ের সব বাঙালিকেই এবার ‘বাংলাদেশি’ বলে দাবি করা শুরু হয়েছে। আর এমন দাবি তুলেছে স্থানীয় খাসি ছাত্র সংগঠন (কেএসইউ)। যা নিয়ে এরই মধ্যে সেখানে নতুন করে তীব্র উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মেঘালয়ের ইছামতীতে ভারতের মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলনে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে এক খাসি ট্যাক্সি চালকের মৃত্যু হয়। মূলত এর জেরে গ্রেপ্তারের আতঙ্কে স্থানীয় বাঙালিদের গ্রাম ছেড়ে পালাতে হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তখন এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অনেককেই ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তী কালে মেঘালয়ের জঙ্গি সংগঠন এইচএনএলসি পর্যন্ত অবিলম্বে বাঙালিদের রাজ্য ছাড়া করার হুমকি দেয়।

সম্প্রতি ফের অভিযোগ ওঠে ইছামতীর পুরুষদের এখনো গ্রামে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তাদের কোনো ধরনের ব্যবসাও করতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামে থাকা নারী-শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যা নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশন রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করে। যদিও তদন্তে ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের বক্তব্যে নির্যাতনের কথা প্রমাণিত হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে বরাকের আমরা বাঙালি সংগঠন, সিআরপিসি আন্দোলনে নেমেছে। সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেস সভাপতি সুস্মিতা দেবও মেঘালয়ের বাঙালি নিগ্রহ নিয়ে মুখ খুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি সরকারের কাছে নালিশ জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন : আজারবাইজানে আর্মেনীয় গোলাবর্ষণ বন্ধে এবার মাঠে যুক্তরাষ্ট্র

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি ও আমরা বাঙালি আসাম-মেঘালয় সীমান্তে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। কাছাড় জেলার মালিডহরে গিয়ে শতাধিক মানুষ মেঘালয় সরকারের কাছে বাংলাভাষীদের নিরাপত্তা চেয়ে স্লোগান দেয়। কাটিগড়ায় ধর্না দেন যুব কংগ্রেস সদস্যরা।

বাঙালি সংগঠনের প্রতিনিধিরা মেঘালয়ের রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করেন, বাঙালিদের বিরুদ্ধে পুলিশ, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, ছাত্র সংগঠন, জঙ্গি- সবাই একজোট হয়েছে।

এরপরই বুধবার (২১ অক্টোবর) মেঘালয়ের সব বাঙালিদের বাংলাদেশি বলে পোস্টার সাঁটে কেএসইউ। কোথাও লেখা হয়, ‘বাংলাদেশিরা মেঘালয়, ত্রিপুরা, অসম ও মিজোরামে অত্যাচার বন্ধ কর।’ সুস্মিতা দেবকেও মেঘালয়ের ব্যাপারে নাক না-গলাতে সতর্ক করা হয়। সুস্মিতা দেবী সেই পোস্টারের ছবি-সহ প্রধানমন্ত্রী ও মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে ট্যাগ করে টুইট করেছেন।

তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার তো দূরের কথা, মেঘালয়েই এমন ব্যানার! স্বদেশে বাঙালিদের ওপর নির্যাতনের আরও প্রমাণ লাগে কী? যদিও পরে পুলিশ গিয়ে সেখানকার সব ব্যানার সরিয়ে ফেলে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক বা ভাষিক বিভেদ কখনওই কাম্য নয়।

আরও পড়ুন : ফ্রন্টলাইনের যুদ্ধে আর্মেনিয়া থেকে হাজার গুণ এগিয়ে আজারবাইজান

মেঘালয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লাকমেন রিম্বুই বলেছেন, বাংলা ও আসামে নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে সুস্মিতা দেব হঠাৎ করে মেঘালয়ের বাঙালিদের ব্যবহার করে খামোকা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাইছেন। এতে কারও ভালো হবে না।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বক্তব্য, পরিস্থিতি যাতে খারাপ না-হয় তাই আমরা খাসি ও বাঙালি সংগঠনগুলোর সঙ্গে কথা বলছি। কেন্দ্রের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ভারতের রাজনীতিতে ‘বাংলাদেশি’ ইস্যু নতুন নয়। ২০১৯ সালের গোড়ার দিকে কথিত অনুপ্রবেশকারীদের (বাংলাভাষী মুসলিম) ‘উইপোকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন বিজেপি নেতা ও ভারতের বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

তার মতে, অনুপ্রবেশকারীরা বাংলার মাটিতে উইপোকার মতো। বিজেপি সরকার তাদের এক এক করে তুলে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলবে।

আরও পড়ুন : আজারবাইজানের আক্রমণ থামাতে এবার ইরানের দ্বারস্থ আর্মেনিয়া

অমিত শাহ তার বক্তব্যে অবৈধ মুসলিম অভিবাসী বলতে তাদের বাংলাদেশি হিসেবে ইঙ্গিত করেন। এর আগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরেও মুসলমান অভিবাসীদের উইপোকা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন অমিত শাহ। সে সময় দলীয় এক সমাবেশে তিনি বলেন, ভারতে থাকা ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ শনাক্ত করে তাদের এক এক করে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।

সূত্র : আনন্দবাজার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড