আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মাথায় তা লঙ্ঘন করে আজারবাইজানের গ্রামে গোলাবর্ষণ করেছে আর্মেনিয়া। মূলত এর পরপরই আজেরি সেনারাও পাল্টা আক্রমণ চালায়। শনিবার (১৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দিবাগত রাতে ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য সমঝোতা হয়েছিল।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র চার মিনিটের মাথায় আর্টিলারি শেল ও রকেট ছুড়ে তা লঙ্ঘন করে আজারবাইজান। যদিও এই দাবির প্রেক্ষিতে আর্মেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে প্রথমে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ তুলেছে আজারবাইজান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, গত সপ্তাহান্তে কয়েকটি চুক্তিতে সম্মতি আসার কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তবে এর পরও সংঘর্ষ চলেছে।
গত মাসে এমন একটি এলাকা নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল যা আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ বলে স্বীকৃতি থাকলেও জাতিগত আর্মেনীয়রা এটি পরিচালনা করে। এই সংঘাতে কয়েকশ মানুষ নিহত হয়।
আরও পড়ুন : ইয়েমেনের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় সম্পন্ন, সৌদির মাথায় হাত
এলাকাটিতে ১৯৯৪ সালে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ছয় বছরের সংঘাতের অবসান হওয়ার পর এটি সবচেয়ে ভয়াবহ নৃশংসতা।
এর আগে শনিবার দুই দেশই রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আনে। এই বিবৃতির পর এমন সন্দেহ আরও স্থায়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজেরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টদের দেয়া বিবৃতির উপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাগোরনো-কারাবাখ সংঘাতে মধ্যস্থতা করার জন্য ওই তিন দেশের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে ওএসসিই মিনস্ক গ্রুপ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়।
আরও পড়ুন : অস্ত্র কেনা-বেচায় আর কোনো বাধা নেই ইরানের
আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আন্না নাঘদালিয়ান টুইট বার্তায়ও একই বিবৃতি তুলে ধরে বলেন, দেশটি যুদ্ধাঞ্চলে 'যুদ্ধবিরতি এবং উত্তেজনা' প্রশমনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যিনি এর আগের সপ্তাহে হওয়া চুক্তির মধ্যস্থতা করেছিলেন তিনি দুই দেশেরই পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি তাদেরকে বলেছেন যে দুই দেশেরই আগের চুক্তিটির শর্ত 'কঠোরভাবে মেনে চলা' উচিত।
আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শুশান স্টিপানিয়ান টুইটারে লেখেন, শত্রুপক্ষ স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১২টা ৪ মিনিটে উত্তর দিকে আর্টিলারি শেল নিক্ষেপ করে এবং রাত ২টা ২০ থেকে ২টা ৪৫ মিনিটের সময় দক্ষিণ দিকে রকেট নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন : রাশিয়ার কারণে এরদোগানকে ভয়ঙ্কর হুঙ্কার ট্রাম্পের
আজারবাইজান অভিযোগ করে যে, আর্মেনিয়া শনিবার সকালে গানজা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে যাতে ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৫ জন আহত হয়। গানজা শহরটি যুদ্ধাঞ্চল থেকে দূরে বলেও জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয় যে আর্মেনিয়া 'স্বেচ্ছায় এবং নির্বিচারে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করছে।
আর্মেনিয়া হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগে বলেছে যে আজারবাইজানই মূলত বেসামরিক এলাকায় হামলা করছে। স্টিপানিয়ান ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে, নাগোরনো-কারাবাখ এলাকায় ধ্বংসস্তূপ দেখা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন : আর্মেনিয়ার গোলায় আজারবাইজানের ১৩ নাগরিক হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশ
তিনি অভিযোগ করেন, আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী নাগোরনো-কারাবাখের রাজধানী স্টিপানাকার্টসহ বেসামরিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড