আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আজারবাইজানের ভূখণ্ডে আর্মেনীয় আগ্রাসনের বন্ধের প্রকাশ্য হুঁশিয়ারি দিয়েছে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসি। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জোটের পক্ষ থেকে বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ সময় বিদ্যমান সংঘাতের একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসি আর্মেনীয় সামরিক বাহিনীর দফায় দফায় উস্কানি ও আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানায়। একই সঙ্গে আমরা আজারবাইজানের প্রতি আমাদের সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছি।
ওআইসির বিবৃতিতে আরও বলা ছিল, আর্মেনিয়া যেভাবে আজারবাইজানের বিভিন্ন এলাকায় আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে তাতে ওআইসি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং এতে করে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
ইসলামিক সংগঠনটি আরও জানায়, আজারবাইজানের যে ভূখণ্ড আর্মেনিয়া দখল করে রেখেছে সেখান থেকে তাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে ওআইসি। একই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ইরাক থেকে দূতাবাস সরাচ্ছে রকেট হামলায় দিশেহারা যুক্তরাষ্ট্র
এমন পরিস্থিতিতে আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছাড়তে আর্মেনিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের পক্ষে নিয়ে তিনি বলেছেন, আর্মেনিয়াকে অবিলম্বে আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছেড়ে চলে যেতে হবে। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইস্তানবুলে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এর আগে রাশিয়ায় নিয়োজিত আর্মেনিয়ার রাষ্ট্রদূত অভিযোগ করেছেন, আজারবাইজানে দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক তাদের ৪ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এ সেনারা এতদিন সিরিয়ায় নিয়োজিত ছিল। এখন তারা নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে।
মূলত এর পরপরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সহযোগী গাদঝিয়েভ। অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, সিরিয়া থেকে সেনা সরিয়ে আজারবাইজানে মোতায়েন করার গুজব উঠেছে। এটি আর্মেনীয় পক্ষের আরেকটি উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড। একেবারেই বাজে কথা।
আরও পড়ুন : চীনে থাবা বসাতে সীমান্তে সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের
বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়।
কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। মূলত এ নিয়েই সংঘাতের সূত্রপাত।
আরও পড়ুন : ইরানে আঘাত হানল আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের বিধ্বংসী মর্টার
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘ বিবাদের জেরে ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। আজারবাইজানের ভূখণ্ড হলেও আর্মেনিয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। নতুন করে সংঘাতের জন্য আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান একে অপরকে দায়ী করেছে।
সূত্র : আল-জাজিরা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড