আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আকসাই চীন, ডোকলামে সামরিক কাঠামো বানাচ্ছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন। তিব্বত ও জিনজিয়াং এলাকায় প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার রেঞ্জের সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম বসিয়েছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। চীনা মিসাইল সিস্টেমের পাল্টা ভারত আরও শক্তিশালী ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করেছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা তথা এলএসিতে।
লাল সেনার মিসাইলের মোকাবিলায় ভারত তৈরি রেখেছে সর্বাধুনিক সুপারসনিক ব্রাহ্মস মিসাইল, নির্ভয় ক্রুজ মিসাইল এবং আকাশ সারফেস টু এয়ার মিসাইল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
লাদাখে ইতোমধ্যে কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল মোতায়েন করেছে ভারত। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে আরও মজবুত করতে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) বানানো বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার ‘অস্ত্র’ মিসাইল এবং সারফেস-টু-সারফেস ল্যান্ড অ্যাটাক ‘নির্ভয়’ ক্রুজ মিসাইল প্রস্তুত রেখেছে ভারতীয় বাহিনী।
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গেছে, আকসাই চীন শুধু নয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার রেঞ্জে কাশগড়, হোটান, নিংচিতে মিসাইল সিস্টেম তৈরি করছে চীনের সেনা। তাই চীনা বাহিনীকে সবদিক থেকে ঠেকাতে ভারতও নিজেদের সেরা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকেই সামনের সারিতে রেখেছে।
আরও পড়ুন : ইরানে আঘাত হানল আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের বিধ্বংসী মর্টার
রাশিয়ার এনপিওএম সংস্থার তৈরি ব্রাহ্মস ক্রুজ মিসাইল মাঝারি পাল্লার। রাশিয়া বাহিনী হাতে এই মাঝারি পাল্লার ব্রাহ্মসই আছে। কিন্তু ভারতের ডিআরডিও এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা আরও বাড়িয়ে তাকে ক্ষিপ্র ও বিধ্বংসী করে তুলেছে।
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে থাকা ব্রাহ্মস পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুতগতির অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল। এটি সারফেস-টু-সারফেস, এয়ার-টু-সারফেস এবং যুদ্ধজাহাজ থেকেও ছোড়া যায়। ল্যান্ড লঞ্চড, শিপ লঞ্চড ও এয়ার লঞ্চড ভ্যারিয়ান্ট রয়েছে।
ভারতীয় সেনা সূত্রে আরও জানা গেছে, ৩০০ কিলোগ্রাম ওয়ারহেডের ব্রাহ্মস মিসাইল এমনভাবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে যাতে তিব্বত ও জিনজিয়াং বেস থেকে উড়ে আসে ফাইটার এয়ারক্রাফটকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন : আজারবাইজানের ভূখণ্ড ছাড়তে আর্মেনিয়াকে হুঁশিয়ারি এরদোগানের
তিন হাজার কিলোগ্রাম ওজনের ব্রাহ্মস লম্বায় প্রায় ২৮ ফুট। তবে এর এয়ার-লঞ্চড ভার্সনের ওজন আড়াই হাজার কিলোগ্রামের কাছাকাছি। এটি নিক্ষেপ করার জন্য রয়েছে সলিড রকেট বুস্টার ইঞ্জিন (প্রথম দফায়) ও লিকুইড র্যামজেট ইঞ্জিন। এর গতি ঘণ্টায় ৩৭০০ কিলোমিটার।
হাজার কিলোমিটার পাল্লার সারফেস-টু-সারফেস ল্যান্ড অ্যাটাক ‘নির্ভয়’ ক্রুজ মিসাইল বানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। ২০১৩ সাল থেকেই নির্ভয় ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চলছে। মাঝে নানা প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই মিসাইলের টেস্ট-ফায়ার বন্ধ রাখা হয়। পরে এই ক্ষেপণাস্ত্রেরই আধুনিকীকরণ করে এর আপগ্রেডেড ভার্সন বানায় ডিআরডিও।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘নির্ভয়’ হলো দূরপাল্লার অর্থাৎ লং রেঞ্জ ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল। যুদ্ধজাহাজ থেকে আগে হাজার কিলোমিটার পাল্লায় নিক্ষেপ করা যেত এই ক্ষেপণাস্ত্র। বর্তমানে এর নতুন সংস্করণ যে কোনো যুদ্ধজাহাজ থেকে ১৫০০ কিলোমিটার পাল্লা অবধি নিক্ষেপ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন : ধর্মই কি মূল কারণ আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের নেপথ্যে?
এটি ‘ট্রাই-সার্ভিস’ মিসাইল সিস্টেম। এর এয়ার লঞ্চড ভার্সন আছে আবার ন্যাভাল-ভার্সনও রয়েছে। নতুন প্রযুক্তিতে গ্রাউন্ড লঞ্চের জন্যও এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োগ করতে পারবে বায়ুসেনা। সঠিক নিশানা লাগাতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে টার্গেট করা সম্ভব।
সূত্র : দ্য ওয়াল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড