• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধর্মই কি মূল কারণ আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের নেপথ্যে?

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:০৬
ধর্মই কি মূল কারণ আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের নেপথ্যে?
সীমান্তে গোলাবর্ষণ করছেন সেনারা (ছবি : প্রতীকী)

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে গেছে বিতর্কিত নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে। আজারবাইজানের অন্তত একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ফেলে দিয়েছে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের দাবি, আজারবাইজানই প্রথমে বিমান এবং আর্টিলারি হামলা চালিয়েছিল। অন্যদিকে আজারবাইজান বলছে, তারা আর্মেনিয়ার হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। তাদের অভিযোগ, পুরো রণক্ষেত্র বরাবর আর্মেনিয়ার সেনারা গোলা নিক্ষেপ করছিল।

এবার উভয় পক্ষ থেকেই জানানো হয়, ভয়াবহ এই লড়াইয়ে কিছু বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। যদিও সাম্প্রতিক সময়গুলোতে এই দ্বন্দ্ব আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৯১ সালের আগে পর্যন্ত আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান দুটি দেশই ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তারা আলাদা হয়ে যায়।

আরও পড়ুন : ভয়ঙ্কর ক্ষেপণাস্ত্র দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংসের হুঁশিয়ারি ইরানের

নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে গত চার দশক ধরে এই দুই দেশ দ্বন্দ্বে লিপ্ত। নাগোর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের বলেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। যদিও জাতিগতভাবে এটির নিয়ন্ত্রণ করে আর্মেনিয়ানরা।

দুই দেশের বিরোধিতার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে ধর্ম। আর্মেনিয়ার ৯৫ শতাংশ জনগণ খ্রিস্টান। যেখানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র আজারবাইজানের ৯৭ শতাংশ মানুষ মুসলিম। তাই খ্রিস্টান অধ্যুষিত রাষ্ট্রটির প্রতি ধর্ম নিয়েও ভীষণ ক্ষোভ রয়েছে এশিয়ার মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের।

গত জুলাই মাসেও দুই দেশের মধ্যে লড়াইয়ে ১৬ জন নিহত হয়। এ ঘটনার পর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিরাট বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। এই বিক্ষোভ থেকে নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল পুনর্দখলে পূর্ণ সামরিক শক্তি প্রয়োগের আহবান জানানো হয় সরকারের প্রতি।

দুই পক্ষ কী বলছে

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৮ টা ১০ মিনিটে নাগোর্নো-কারাবাখের বেসামরিক বসতির উপর হামলা শুরু হয়। হামলা চালানো হয় ওই অঞ্চলের রাজধানী স্টেপনাকার্টেও।

আরও পড়ুন : ক্ষমা চেয়েও পার পাচ্ছেন না কিম, তদন্তে নামছে দ. কোরিয়া

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলছে, তারা দুটি হেলিকপ্টার এবং তিনটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে। একই সঙ্গে তাদের সেনারা শত্রু পক্ষের তিনটি ট্যাংকও ধ্বংস করেছে।

মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা এর উচিৎ জবাব দেব এবং পরিস্থিতির সম্পূর্ণ দায়িত্ব আজারবাইজানের সামরিক-রাজনৈতিক নেতৃত্বকেই নিতে হবে।

পরে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুশান স্টেপানিয়ান বলেন, এবার আমাদের দেশের এক নারী এবং এক শিশু মারা গেছে। আরও যে সব হতাহতের খবর এসেছে সেগুলো যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

নাগোর্নো-কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ সেখানে সামরিক আইন জারি করেছে। সেখানে সব সক্ষম পুরুষকে সামরিক বাহিনীতে ডাকা হয়েছে।

আরও পড়ুন : আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সীমান্তে গোলাগুলিতে ২৩ জনের প্রাণহানি

এ দিকে আজারবাইজান ঘোষণা করেছে, পুরো রণক্ষেত্র বরাবর সশস্ত্র বাহিনীর পাল্টা হামলা শুরু হয়েছে যার লক্ষ্য আর্মেনিয়ার বাহিনীর হামলা প্রতিহত করা এবং বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা বিধান।

আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, কয়েকটি গ্রামের ওপর ব্যাপক গোলাবর্ষণের ফলে সেখানে অনেক বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে এবং সেখানকার অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তারা আরও বলছে, আমাদের একটি হেলিকপ্টার নষ্ট হয়েছে তবে হেলিকপ্টারের ক্রুরা বেঁচে আছেন। তারা আরও দাবি করছে, আর্মেনিয়ার ১২টি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। যদিও আর্মেনিয়া আরও যেসব ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়েছে সেগুলো আজারবাইজান পুরোপুরি অস্বীকার করছে।

আরও পড়ুন : আর্মেনিয়ার পাহাড় দখল করল আজারবাইজান, সীমান্তে উত্তেজনা

আজারবাইজান আর আর্মেনিয়ার এই বিরোধে বহু বছর ধরে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এন্ড কোঅপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই)।

উল্লেখ্য, একটি যুদ্ধবিরতির জন্য এই প্রচেষ্টায় জড়িত আছে মিনস্ক গ্রুপ নামে কূটনীতিকদের একটি দল। যেখানে আছেন ফ্রান্স, রাশিয়াসহ মার্কিন কূটনীতিকরা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড