• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সৌদিতে পতনের ঘণ্টা বাজছে সালমানের!

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:২৮
সৌদিতে পতনের ঘণ্টা বাজছে সালমানের!
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ (ছবি : আল-জাজিরা)

রাষ্ট্রীয় সহায়তায় সাংবাদিক জামাল খাসোগির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি রাজত্বের পিছুটান শুরু হয়েছে। উপসাগরীয় ও মধ্যপ্রাচ্যীয় আঞ্চলিক রাজনীতিতে ধীরে ধীরে প্রভাব হারাতে শুরু করেছে রিয়াদ। সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব ও প্রভাব প্রতিপত্তি হারানোর কারণে তেলসমৃদ্ধ দেশটির অবস্থা এখন নাজুক হয়ে পড়েছে।

ওপেকের নেতৃস্থানীয় সদস্য এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে যতটা ঊর্ধ্বে নিজেদের তুলে ধরেছিল দেশটি, ৫০ বছর পর এখন নিজেদের পতনের ধ্বনি শুনতে পাচ্ছে। তাদের ভুল পথে পরিচালিত নীতিগুলো এখন বুমেরাংয়ের মতো ফিরে আসতে শুরু করেছে।

দেশটির জন্য গত ৫ বছর ছিল ধ্বংসাত্মক সময়, একই সঙ্গে বেদনাদায়কও। ম্যাকিয়াভেলির বৈশিষ্ট্য নিয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) যে উচ্চাভিলাষী কর্মকাণ্ড শুরু করেছিলেন, তা শিগগিরই তার বেপরোয়া মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তার পরমার্শদাতা হিসেবে পরিচিত আরেক ম্যাকিয়াভেলি আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের (এমবিজেড) অনুপ্রেরণায় তিনি সব কিছুকে হঠকারী মানসিকতা দ্বারাই বিচার করতে শুরু করেছেন।

পরিহাসের ব্যাপার হলো, তিউনিসিয়া ও লিবিয়ার মতো দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং মিশরে স্বৈরশাসক সিসিকে সমর্থন দেয়া সৌদি আরবের দেউলিয়া অবস্থা উন্মোচনের মতোই হয়েছে। বাশার আল-আসাদকে নিয়েও একই অবস্থা এখন দেশটির। তাদের নিজেদের ভুলের কারণে এখন আমিরাত এগিয়ে চলেছে টেক্কা দিয়ে আর সৌদি আরব ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। কিংবা এমনও বলা যায়, নতুন উদ্যমে চলতে শুরু করা আমিরাতের লেজুড় হয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছে এমবিএসের সৌদি আরব।

আরও পড়ুন : ষড়যন্ত্রের শিকার ইমরান খান! সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোপন বৈঠকে আইএসআই

১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর মিসরের প্যান আরব প্রকল্পের পতন ও মিশরীয় নেতা জামাল আবদেল নাসেরের মৃত্যুর পর সৌদি আরবের প্রথম উত্থান দেখা যায়। ১৯৭০ সালে ওপেকের একজন শীর্ষস্থানীয় সদস্য হিসেবে ওআইসির প্রথম বৈঠকের আয়োজন করেছিল দেশটি। সে সময় বিশ্ব রাজনীতিতে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা-সমর্থনপুষ্ট দেশ, বিশেষ করে মিশর, ইরাক ও সিরিয়ার সমর্থন পেয়ে তাদের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।

১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ওপেক বয়কটের কারণে সৌদি আরবকে আরও সমৃদ্ধ হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন সৌদি আরববে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে চিহ্নিত করে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অপরিহার্য মিত্র দেশের মর্যাদা অর্জন করে তারা। আশির দশকে ইরাক-ইরান যুদ্ধ দেশটিকে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়।

আরও পড়ুন : ইরান ইস্যুতে চীন-রাশিয়াকে ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

৮০-র দশকে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র জোট এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। কারণ রিয়াদ সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন করেছিল। বিশেষ করে আফগান মুজাহিদিনদের জন্য তাদের সফল গোপন খুব কার্যকর হয়েছিল। আফগান মুজাহিদিনদের তৎপরতা আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বিতাড়নে খুব কার্যকর হয়েছিল।

আরও পড়ুন : চীনের হামলা, ধসে পরছে ভারতের সাইবার সুরক্ষা

অবশ্য এত কিছুর পরও দেশটি স্থিতিশীলতার কোনো ক্ষেত্র খুঁজে পায়নি। ইরানের ক্রমবর্ধমান উত্থান এখন তাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ও দিকে ইয়েমেনে আগ্রাসনের জন্য আমিরাতকে যতটা না দায়ী মনে করা হয়, সৌদি আরবকে তার চেয়ে বেশি দায়ী বলে বিবেচনা করা হয়।

আরও পড়ুন : কাশ্মীর ইস্যুতে ফের ভারতের রোষানলে পাকিস্তান!

যদিও সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাতে সৌদি আরব এখন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আমিরাতের ক্রীড়নক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এখান থেকেই সৌদি যুগের পতন শুরু বলেই ধারণা করতে শুরু করেছেন অনেক পর্যবেক্ষক।

সূত্র : আল-জাজিরা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড