• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইসরায়েল ইস্যুতে প্রকাশ্য বিরোধে সৌদি বাদশাহ-যুবরাজ!

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১১:৩২
ইসরায়েল ইস্যুতে প্রকাশ্য বিরোধে সৌদি বাদশাহ-যুবরাজ!
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ (ছবি : আল-জাজিরা)

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে কথিত মুসলিম রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। মূলত বিতর্কিত সেই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে গুঞ্জন চলছে- সৌদি আরবও নাকি আমিরাত-বাহরাইনের পথেই হাঁটতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি বাদশাহ সালমান এবং তার ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে মতবিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।

প্রতিবেদনে বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে যুবরাজকে আগ্রহী দেখা গেলেও অসম্মতি রয়েছে সৌদি বাদশাহর।

গত ১৩ আগস্ট ইসরায়েল ও আমিরাতে মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা পর স্তম্ভিত হয়েছিলেন ৮৪ বছর বয়সী বাদশাহ।

আরও পড়ুন : মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে বন্দি বিনিময়ে প্রস্তুত ইরান

এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে আমিরাত ও বাহরাইন।

ঐতিহাসিক এই চুক্তিকে ‘নতুন মধ্যপ্রাচ্যের সূর্যোদয়’ বলে প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে আরবদের এই চুক্তিকে বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে অভিহিত করেছে।

আরও পড়ুন : শান্তি আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন আফগানিস্তানে

আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল চুক্তির অধীনে আরও আরব দেশকে নিয়ে আসতে আগ্রহী ট্রাম্প প্রশাসন।

এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সৌদি আরব তেল আবিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে দ্বারপ্রান্তে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। দেশটি ‘সঠিক সময়ে’ সেটা করবে।

ফিলিস্তিনের প্রতি সৌদি বাদশাহ সালমান বরাবরই সমর্থন দিয়ে আসছেন। কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্যের পাশাপাশি তাদের বেশির ভাগ নেতার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন : ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

বাদশাহের অসম্মতি থাকলেও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে ইচ্ছুক যুবরাজ। ইরানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জোটবদ্ধ গড়ে তুলতে সেই সঙ্গে ব্যবসা-বিনিয়োগের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠতে চান বিন সালমান।

সৌদি মালিকানাধীন একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত মতামতে সৌদি রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হলে জেরুজালেমকে রাজধানী করে ফিলিস্তিনকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে চূড়ান্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সৌদি আরব একটি মূল্য নির্ধারণ করেছে। আর তা হল, প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর উদ্যোগ অনুসরণ করে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে সার্বভৌম একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা।

আরও পড়ুন : ট্রাম্পকে আঘাত করেই সোলাইমানি হত্যার বদলা নেবে ইরান

যদিও ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যকার চুক্তির বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের জাতীয় সুরক্ষা কাউন্সিলে ‘ইরান ও উপসাগরীয় ডেস্ক’ এর সাবেক পরিচালক ইওয়েল গুজানস্কি।

তার মতে, চুক্তির বিষয়টি অনেক দূর এগিয়েছে। তবে এ জন্য ইসরায়েলকে অপেক্ষা করতে হবে। কখন এবং কী মূল্যে চুক্তি হবে, তা নিয়ে সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে নয়, হোয়াইট হাউসের সঙ্গে আলোচনা করছে।

২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বাদশাহ সালমান তাকে একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকার অধিকারেও বিশ্বাস করেন।

আরও পড়ুন : সৌদিতে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার রোমহর্ষক ভিডিও প্রকাশ

চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে টেলিফোনে বাদশাহ সালমান ফিলিস্তিন ইস্যু সমাধান নিয়ে তার আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জানান।

তবে ২০১৭ সালে সৌদি সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নিরাপত্তা ও বাণিজ্য নিয়ে ইসরায়েলের প্রতি অস্বাভাবিক আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন।

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ফিলিস্তিনি নেতাদের ব্যক্তিগতভাবে চাপ দেন যুবরাজ। যদিও ফিলিস্তিনি নেতারা বিষয়টিতে আপত্তি জানান।

আরও পড়ুন : চীন-রাশিয়া-ইরান-পাকিস্তানের ভয়ঙ্কর সামরিক মহড়া, উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

২০১৭ সালের অক্টোবরে যুবরাজ সৌদি আরব, জর্ডান ও মিশরের ইসরায়েল সংলগ্ন অংশে বিশাল এলাকায় প্রযুক্তি গবেষণার শহর ‘নিওম’ নির্মাণের পরিকল্পনা জানান। যেখানে ইসরায়েল বড় বিনিয়োগ করবে বলে আশাবাদী তিনি।

এ বিষয়ে যুবরাজের ঘনিষ্ঠ দুই উপদেষ্টা জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান তিনি। তবে যুবরাজ এটাও জানেন যে, যত দিন বাদশাহ বেঁচে আছেন তত দিন এটা প্রায় অসম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড