আমিরাতের পর শর্তসাপেক্ষে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করছে সৌদি!

মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অনুসরণ করবে না মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরব। নির্যাতিত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের সঙ্গে ইসরায়েল যতক্ষণ শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে না ততক্ষণ রিয়াদ এ ধরণের কোনো চুক্তির বিষয়ে চিন্তা করবে না বলে সাফ জানিয়েছেন সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজপুত্র ফয়সাল বিন ফারহান।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রথম উপসাগরীয় এবং তৃতীয় আরব দেশ হিসেবে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। পরবর্তীকালে একই ধরণের চুক্তি করতে সৌদি আরবের ওপরও চাপ প্রয়োগ করে ওয়াশিংটন। যদিও গত কয়েক দিন ধরে ওই চুক্তির বিষয়ে নীরব ছিল রিয়াদ।

অবশেষে বার্লিন সফরে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েল-আমিরাত চুক্তিকে স্বাগত জানান সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। এ চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক অবদান রাখবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। যদিও তার দেশ এ ধরণের চুক্তি করবে না বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় নিজেদের শক্তিশালী করছে ইরান-সিরিয়া

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বার্লিন সফরে থাকা সৌদির এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তির পূর্বশর্ত দিয়েছেন। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, আগে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে অবশ্যই শান্তি অর্জিত হতে হবে।’ ‘আর একবার তা অর্জিত হলে সব কিছুই সম্ভব।

আরও পড়ুন : তাইওয়ানকে ৬৬টি যুদ্ধবিমান দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, চিন্তা বাড়ল চীনের

এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমি আশা করছি আমিরাত-ইসরায়েল চুক্তিতে যোগ দেবে সৌদি আরব। গত ১৩ আগস্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সমঝোতায় পৌঁছেছে। এই লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

আরও পড়ুন : শত্রুদের গুড়িয়ে দিতে একঝাঁক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন ইরানের

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণার পর ইসরায়েল ও আরবের মধ্যে এটি তৃতীয় চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে ও জর্ডান ১৯৯৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল।

আরও পড়ুন : সামরিক শক্তিতে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে পারবে তুরস্ক?

এখন পর্যন্ত উপসাগরীয় কোনো আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। যদিও ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব মোকাবিলায় ইসরায়েলের সঙ্গে এসব দেশের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন : উত্তেজনা বাড়িয়ে ইসরায়েলের বন্ধু আমিরাতের জাহাজ আটক করল ইরান

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, চুক্তির আওতায় আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইসরায়েল ও আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান চলাচল, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও দূতাবাস স্থাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।

আরও পড়ুন : বিধ্বংসী লেজার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকাশ্যে আনল ইরান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি স্বাক্ষর ইস্যুতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়, তাদের আশা এই বিরাট ঐতিহাসিক পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির অগ্রগতিকে এগিয়ে নেবে।