আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গরু ও উটের মূত্র, ব্লিচ, অ্যালকোহল বা মিথানল খেলে করোনা সেরে যাবে এমনটা বিশ্বাস শুরু করেছিল মানুষ। মহামারীটির সংক্রমণের প্রথম দিকে এসব গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
ডয়চে ভেলে অনলাইন জানায়, করোনা নিয়ে ভুল তথ্য এবং ষড়যন্ত্রমূলক নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে। আর সেসব গুজব বিশ্বাস করে জীবন দিয়েছে হাজারো মানুষ।
আমেরিকান জার্নাল অব ট্রপিকাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন-এ প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে বিষয়টি উঠে আসে।
বিজ্ঞানীরা ৮৭টি দেশের ২৫ টি ভাষার মোট দুই হাজার ৩০০ রিপোর্ট নিয়ে গবেষণাটি করেছেন।
এতে জানা যায়, হাসপাতালে এমন হাজারো রোগী ভর্তি হয়েছিল যাদের বড় একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া গুজবে বিশ্বাস করেছিলো।
২০১৯ এর ডিসেম্বর থেকে ২০২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড এবং জাপানসহ বিভিন্ন দেশের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন আন্তর্জাতিক একদল বিজ্ঞানী।
গবেষণাটিতে উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, ভারতে করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে গোমূত্র বা সার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিলো। সৌদি আরবে উটের প্রস্রাবকে ম্যাজিক ওষুধ হিসেবে বলা হয়েছিলো।
চীনে যখন করোনার প্রকোপ শুরু হয়, তখনই ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং তার শাখা সংগঠনগুলোর নেতারা বলেছিলেন, গোমূত্র পান করলে করোনা হবে না।
ভারতে করোনাভাইরাস প্রবেশ করার পরে সেই আশ্চর্য কাজটিই প্রকাশ্যে করে দেখাল গেরুয়া শিবির। আয়োজন করা হয় গোমূত্র পানের পার্টি।
যেখানে প্রায় ২০০ জন যোগ দিয়েছিলেন। গোমূত্র, গোবর, দুধ, ঘি দিয়ে তৈরি হয়েছিল পানীয়। আগতরা খেলেনও তা ঢকঢক করে। এতেই না কি প্রতিহত হবে করোনা। বহু গরিব মানুষ নিছক অন্ধবিশ্বাস থেকে হাজির হয়েছিলেন সেখানে।
ভারতের বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকেরা এ নিয়ে সতর্ক করলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আরও কিছু গোমূত্র পানের পার্টি আয়োজিত হয়েছিল দেশটি জুড়ে।
আরও পড়ুন : সীমান্ত নিয়ে অবশেষে বৈঠকে বসছে ভারত-নেপাল
এ ছাড়া শরীরকে জীবাণুমুক্ত করতে অত্যন্ত ঘনীভূত অ্যালকোহল ব্যবহার করায় বিশ্বব্যাপী ৮০০ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। ইরানে মারা গেছে কয়েকশ মানুষ।
প্রায় ছয় হাজার মানুষকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে করোনা আতঙ্কে মিথানল পান করে। অন্ধ হয়ে গেছে ৬০ জন।
গবেষক দলটি ইন্টারনেটে করোনাবিষয়ক ভুল তথ্যগুলো মনিটর করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছে দাবি জানান।
সঠিক তথ্য প্রকাশের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও কাজ করার কথা বলেন তারা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড