• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

প্রতিশোধ পাল্টা প্রতিশোধে বাড়ছে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৫ জুলাই ২০২০, ১০:৪৪
চীন-যুক্তরাষ্ট্র
চীন-যুক্তরাষ্ট্র (ছবি : সংগৃহীত)

ট্রাম্প প্রশাসন হিউস্টনে চীনা কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়ার পর একই পথে হাঁটা শুরু করেছে বেইজিংও। ফলে প্রতিশোধ আর পাল্টা প্রতিশোধে ক্রমে তীব্র হচ্ছে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতা।

গতকাল শুক্রবার তারা চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চেংদু শহরের মার্কিন কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে চীনের তিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ভারত ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের সঙ্গেও উত্তেজনা চলছে চীনের। এর মধ্যে আছে করোনা মহামারি। সব মিলিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের এই বিরোধ বিশ্বরাজনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে।

এই দুই পরাশক্তির বৈরিতা কয়েক দশকের। আর বর্তমানে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার সূত্রপাত ২০১৮ সালের ৮ মার্চ। ওই দিন এক নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। তাতে চীনসহ একাধিক দেশ থেকে আমদানি করা কয়েকটি পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হয়। ওই সময় চীনও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা শতাধিক পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে ২০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের অভিযোগ, চীনের কারণে মার্কিন অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চীনের বিরুদ্ধে ‘মেধাচুরির’ অভিযোগও আছে ট্রাম্প প্রশাসনের। এখানেই শেষ নয়, ওই বছরের আগস্টে নতুন করে আরো ৩০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর ঘোষণা দেন তিনি। চীনও মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্ক বসায়।

দুই দেশের এই বাণিজ্যযুদ্ধের সঙ্গে সম্প্রতি আরো কয়েকটি ইস্যু যুক্ত হয়। করোনা মহামারি নিয়ে শুরু থেকেই তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আসছে। হংকংয়ের নিরাপত্তা আইন নিয়েও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওয়াশিংটন। হংকং ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও বিরোধে জড়িয়েছে বেইজিং। এ ছাড়া লাদাখ নিয়ে ভারতের সঙ্গে শি চিন পিং সরকারের যে উত্তেজনা চলছে, তা নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

এ অবস্থায় গত সপ্তাহে নতুন করে কূটনৈতিক লড়াই শুরু হয় দুই দেশের মধ্যে। গত মঙ্গলবার হিউস্টনে চীনা কনস্যুলেট বন্ধের নির্দেশ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এ ছাড়া ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, যেকোনো সময় তিনি আরো কয়েকটি চীনা কনস্যুলেট বন্ধ করে দিতে পারেন। এ ঘটনার জবাবে গতকাল চীনের চেংদুতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয় বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অযৌক্তিক পদক্ষেপের জবাব দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল।’

চেংদুর ওই কনস্যুলেট কৌশলগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিব্বতসহ ওই অঞ্চলের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ১৯৮৫ সালে কনস্যুলেটটি নির্মাণ করা হয়।

এদিকে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের তিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২৫টি শহরে বসবাসকারী আরো কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, ‘মেধাচুরি’ করতে চীন তাদের অনেক নাগরিকের পরিচয় গোপন করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে দিচ্ছে। তদন্ত করে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আসা এসব ব্যক্তি মূলত চীনের সেনাবাহিনীর সদস্য। যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখন চতুর্থ ব্যক্তিকে খোঁজা হচ্ছে।

মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণা, জুয়াং তাং নামের ওই নারী সান ফ্রান্সিসকোতে চীনা কনস্যুলেট ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। এফবিআই বলছে, ওই নারী ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক। জিজ্ঞাসাবাদে জুয়াং এফবিআইকে জানিয়েছিলেন, তিনি কখনো চীনের সেনাবাহিনীতে ছিলেন না। কিন্তু তদন্তে নেমে একটি ছবি পাওয়া গেছে। আর ওই ছবিতে তিনি চীনের সামরিক বাহিনীর পোশাক পরা ছিলেন। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

ওডি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড