আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আমেরিকার অনেকদিনের ইচ্ছে ভারত ও চীন সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হোক এমনই মত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের। কারণ আমেরিকা ও চীনের মধ্যকার যুদ্ধে কোনও পক্ষই সরাসরি একে অপরের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চায় না। এদিকে আমেরিকার দীর্ঘদিনের বন্ধু পাকিস্তান এখন চীনপন্থী। আর এ কারণেই মূলত, ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।
বাণিজ্যিকভাবে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরেই উন্নতির দিকে এগিয়েছে। তবে সামরিক দিক দিয়ে ভারত এখনও রাশিয়ার উপর বেশি ভরসা করে। এদিকে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমে গত কয়েক বছরে চীনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভালো হয়েছিল। শি জিনপিংয়ের ভারত সফরে তা আরও দৃঢ় হয়েছিল। তবে সেই সম্পর্ক ভেস্তে যায় গালওয়ান সংঘর্ষের পর।
চীনের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যেতে চায় না আমেরিকা। বরং সরাসরি যুদ্ধে না গিয়ে এক বন্ধু রাষ্ট্রের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করার যে কৌশল আমেরিকা গ্রহণ করেছে তাতে ওয়াশিংটনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সামিল। প্রয়োজনে যুদ্ধ হলে আমেরিকা ভারতকে সৈন্য দিয়ে সাহায্য করবে ঠিক, কিন্তু সরাসরি যুদ্ধে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে ভারতকেই। পাশাপাশি চীন ভারতের বাজার বাণিজ্যিক সম্পর্ক নষ্ট হলে লাভবান হবে আমেরিকা।
এদিকে কয়েকদিন আগেই মার্কিন চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোজকে উদ্ধৃত করে এক সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, 'চীন বা অন্য কাউকে কোনও এলাকাতেই দাদাগিরি করতে দেব না। এই বার্তা স্পষ্টই। ভারত চীন পরিস্থিতি হোক বা অন্যত্র, আমাদের সেনারও শক্তিশালী অবস্থান নিবে।'
আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ন্যাটোভুক্ত দেশগুলি চীনকে সতর্ক করেছে। ইউরোপ থেকে এশিয়ায় সেনা সরিয়ে আনে আমেরিকা। দক্ষিণ চিন সাগরে পাঠিয়ে দেয় রণতরীও। তবে এসবই করা হচ্ছে হংকং, তাইওয়ান, ভারতের মতো দেশগুলিকে ঘুঁটি হিসাবে সাজিয়ে। এই বড় বড় শক্তিশালী দেশগুলি চীনের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিতে ভারতের মতো দেশগুলির আড়ালে যাচ্ছে।
তবে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতকে নয়, লাদাখে এই উত্তেজনা সৃষ্টি করার পিছনে আমেরিকাকে বার্তা দেওয়াই মূল লক্ষ্য বেজিংয়ের। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে গিয়েছে চীন। বাণিজ্য যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নাজেহাল করেছে এই সুপারপাওয়ার। এই আবহে ভারত বা অন্যান্য রাষ্ট্রগুলি দাবার ঘুঁটি ছাড়া আর কিছুই নয়।