• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনার কারণে বিশ্বের যে খবরগুলো আড়ালে থেকে গেল

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৩ জুলাই ২০২০, ১৬:২৬
খবর

পৃথিবীজুড়ে সমস্ত সংবাদপত্রের যাবতীয় শিরোনাম এখন করোনার দখলে। পুরো বিশ্বে এক ত্রাস সৃষ্টি করেছে করোনা। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে হাজারে হাজারে মানুষ। আর এর কারণেই আর করোনাকে অতিক্রম করে অন্য খবরগুলো মানুষের বিশেষ নজর কাড়তে পারেনি।

সুলেইমানি-পরবর্তী ইরান

বলা হয়, গত কয়েক দশকে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের প্রভাব বিস্তারের মূলে যে ব্যক্তিটি ছিলেন তার নাম কাসেম সোলেমানি। সেনাবাহিনীর সাধারণ জওয়ান থেকে দেশের সর্বময় কর্তার প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠা সোলেমানি শুধুমাত্র ইরানের তুখড় কুর্দ বাহিনীর প্রধানই ছিলেন না, তার ইশারাতে চলত এই অঞ্চলের আরও একাধিক সশস্ত্র বাহিনীর কার্যকলাপ। আমেরিকা সোলেমানিকে মারতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে। যার জবাবে পথে নামে ইরান। দাবি ওঠে বদলার। ফলস্বরূপ, সম্ভবত এই প্রথম মার্কিন সেনাকে নিশানা করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। পাল্লা দিয়ে চলে বাগযুদ্ধও। সংঘাতের বলি হন একটি বিমানের ১৭৬ জন যাত্রী, ভুলবশত যাদের টার্গেট করে বসে তেহরান।

পঙ্গপাল

করোনার মতো এদের হানাতেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। তবে, এরা ভাইরাস নয়, পঙ্গপাল! এখন যাদের হানায় ত্রস্ত ভারতের একাধিক রাজ্য, কিছু দিন আগে তারাই প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষের। দক্ষিণ এশিয়ায় ঢোকার আগে আরবের কিছু দেশেও প্রবল ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছিল এই পঙ্গপালেরা। মাঠের সবুজ ফসলই মূলত এদের খাবার। এক বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হানা দেওয়া একটি ঝাঁক দিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার খেয়ে নিতে পারে! ফলে, পঙ্গপালের হানা মানেই চাষবাসের সর্বনাশ। আফ্রিকার দেশগুলিতে আগে থেকেই খাদ্যসঙ্কট চরমে, তার উপর পঙ্গপালের হানা। একটা সময়ে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে জাতিসংঘকে বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়, ‘খাদ্যসুরক্ষা এবং সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

দীর্ঘতম লড়াইয়ে ইতি আমেরিকার

এটাই আমেরিকার ইতিহাসের দীর্ঘতম লড়াই, যা গত ১৯ বছর ধরে লড়ে চলেছে তারা। মাঝে তিন জন প্রেসিডেন্ট দেখে ফেলেছে হোয়াইট হাউস, ৪০ হাজারের বেশি নিরীহ মানুষের প্রাণ গিয়েছে, কিন্তু যুদ্ধ থামেনি। এই লড়াই আমেরিকার সঙ্গে তালেবানের। ট্রাম্প প্রশাসনের হাত ধরে যাতে ইতি পড়ার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তালেবানের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের একটি শান্তিচুক্তি হয়েছে। কাগজে কলমে তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, মার্কিন সেনাকে টার্গেট না করার। আর আমেরিকা কথা দিয়েছে, ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগে আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার। লাভের দিক থেকে এই চুক্তিতে তালেবানই এগিয়ে, কারণ আলোচনার টেবিল থেকে আফগান সরকারকে সরিয়ে রাখতে পেরেছে তারা। চুক্তির ভবিষ্যৎ ঘিরে সংশয়ের বীজ অবশ্য এখানেই লুকিয়ে। কারণ কাবুলে এখনও সরকার বনাম তালেবান যুদ্ধ চলছেই।

ট্রাম্প বনাম বাইডেন

করোনার তাণ্ডবের মধ্যে অনেকেই ভুলে গিয়েছেন যে আর কয়েকমাস পরেই আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউস দখলের জন্য ঝাঁপাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার উল্টোদিকে ডেমোক্র্যাটদের সেনাপতি কে? লাস ভেগাসের প্রাইমারিতে বার্নি স্যান্ডার্সের জয়ের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বারের লড়াইটা ট্রাম্প বনাম বার্নিই হতে চলেছে। কিন্তু, ডেমোক্র্যাটদের ঘরোয়া ভোট যত এগোতে থাকে, ততই স্পষ্ট হয়ে যায়, বার্নি নয়, জো বাইডেনই প্রথম পছন্দ উদারপন্থী ভোটারদের। বারাক ওবামার ডেপুটি বাইডেন ক্লিন্টনদেরও কাছের লোক। ফলে, বার্নি লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বাকিদের ম্যানেজ করতেও তাঁর বেশি সময় লাগেনি। ফলে, আমেরিকার আসন্ন সংগ্রামের নাম — ট্রাম্প বনাম বাইডেন। দুর্নীতির অভিযোগ বাইডেনকে ব্যথা দেয় কি না, সেটাই এখন দেখার।

উষ্ণ আন্টার্কটিকা

তারিখটা ছিল ৬ ফেব্রুয়ারি। আবহাওয়া অফিসের খবর বলছিল, আন্টার্কটিকার উত্তর অংশ আর লস অ্যাঞ্জেলসের তাপমাত্রা সমান হয়ে গিয়েছে! দুই জায়গাতেই তখন ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। বিপদের আঁচটা তখনই পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। আশঙ্কা মিলেও যায়। টানা ৯ দিনের এই উষ্ণ-প্রবাহে তুষারাবৃত মহাদেশের ২০ শতাংশ বরফ গলে যায়! বিস্মিত বিজ্ঞানীরা বলেন, কুমেরু এলাকায় যে এত দ্রুত বরফ গলা জলের পুকুর তৈরি হতে পারে, তা না দেখলে কোনও দিনও বিশ্বাস করতাম না। পরে জানা যায়, এমন আজব ঘটনাক্রমের কারণ দক্ষিণ আমেরিকায় তৈরি হওয়া উচ্চচাপ বলয় এবং আশপাশের এলাকায় সমুদ্রের পৃষ্ঠদেশের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া। কারণ যাই হোক না কেন, পরিসংখ্যান বলছে, গত ৫০ বছরে প্রায় ৩ ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে কুমেরুর তাপমাত্রা। গলছে বরফ, বাড়ছে জলস্তর। লাগামছাড়া বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে আর কী-ই বা হতে পারে!

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড