আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অর্থনীতির চাকা সচল করতে লকডাউনের বিধিনিষেধ তোলার বিপরীতে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কর্মকর্তাদের হিমশিম খাওয়ার মধ্যেই ভারতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেল।
এর মধ্যে কেবল বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাতেই নতুন ১৯ হাজার ১৪৮ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
একই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৩৪ জনের। সবমিলিয়ে ভারতে কোভিড-১৯ এ মৃতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৩৪ জনে দাঁড়াল।
৩০ জানুয়ারি কেরালায় প্রথম আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৬ লাখ ৪ হাজার ৬৪১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলল; এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৮০ হাজার পেরিয়ে গেছে।
লকডাউন শিথিলে সোমবার থেকে ‘আনলক ২’ শুরুর পর পশ্চিমাঞ্চলীয় এ রাজ্যটিতে বুধবার নতুন করে রেকর্ড ৫ হাজার ৫৩৭ জনের দেহে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে কোভিড-১৯ এ মোট মৃত্যুও পেরিয়েছে ৮ হাজার।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য সরকার মুম্বাইসহ বিভিন্ন ‘হটস্পটে’ নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল লকডাউন শিথিলই নয়, সরকারি কোয়ারেন্টিন স্থাপনাগুলোর দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণেও উপসর্গ আছে এমন অনেকেই কোভিড-১৯ শনাক্তে পরীক্ষা করাতে উৎসাহ পান না। এসব কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই নিত্যনতুন রেকর্ড টপকাচ্ছে।
আনন্দবাজারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রথম এক লাখ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১১০ দিনে। মার্চের শেষে ভারতজুড়ে দেয়া কঠোর লকডাউনের কারণেই দেশটিতে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত জনসংখ্যা অনুপাতে রোগী মিলছিল সামান্যই। কিন্তু লকডাউন শিথিলের পর থেকে পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে যায়।
শনাক্ত রোগী এক থেকে দুই লাখে পৌঁছায় মাত্র ১৫ দিনে। দুই থেকে তিন লাখে ১০ দিনে, তিন থেকে চার লাখে ৮ দিনে, চার থেকে পাঁচ লাখে পৌঁছাতে লাগে ছয় দিন। শেষ এক লাখ যোগ হতে লেগেছে আরও কম সময়, মাত্র ৫ দিন।
মহারাষ্ট্র ছাড়াও দিল্লি, তামিল নাডু, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু হু হু করে বাড়ছে।
আসামে টানা বৃষ্টিপাতের পর বন্যা ও ভূমিধসে ৫৭ মৃত্যু এবং ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির কর্মকর্তাদের জন্য দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সংক্রমণ মোকাবেলায় কমিউনিটি হল, স্কুল ও সরকারি যেসব ভবনে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে, সেসব স্থানে নতুন করোনাভাইরাস শনাক্তে আগ্রাসীভাবে পরীক্ষা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসামের স্বাস্থ্য মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা।
“পরিস্থিতি খুবই সংকটাপন্ন, আমরা নতুন করোনাভাইরাসের হটস্পটগুলোকে আলাদা করার চেষ্টা করছি,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন তিনি।
লকডাউন শিথিলের পর থেকে পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬১১ জন নিয়ে রাজ্যটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ হাজার ১৭০ এ দাঁড়িয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে কোভিড-১৯ এ মোট মৃ্ত্যুর সংখ্যাও সাতশ’র কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
ওডি/
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড