আন্তর্জাতিক ডেস্ক
লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস যারা দেখিয়েছিল, তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চীনের সঙ্গে এই ‘লড়াই’ জেতার বিষয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। কিন্তু বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, এত কথার পরেও চীনা সেনার সীমান্ত পেরনো কিংবা ভারতের জমি দখলের বিষয়ে সরকার অবস্থান স্পষ্ট করছে না কেন? কেনই বা আমজনতার উদ্দেশে রেডিও বার্তা ‘মন কি বাত’-এ এক বারও ওই পড়শি দেশের নাম মুখে আনলেন না প্রধানমন্ত্রী?
প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশেরও জিজ্ঞাসা, যদি চীনের নাম মুখে আনতেই বাধে, তাহলে যোগ্য জবাব দেওয়ার দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা কতখানি? তাছাড়া সেনাবাহিনীর বয়ান অনুযায়ী চীনা সেনারা যদি ভারতের ভূখণ্ড দখল করে বসেই থাকে, কেমন ‘যোগ্য জবাব’ দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
রবিবার (২৮ জুন) এক রেডিও বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এই সঙ্কটের সময়ে গোটা পৃথিবী ভারতের বিশ্ববন্ধুত্বের ভাবনাকে আরও বেশি করে উপলব্ধি করেছে। কিন্তু তেমনই দেখেছে যে, অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারত কতটা শক্তিশালী এবং দায়বদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে যারা চোখ তুলে তাকানোর সাহস দেখিয়েছিল, তারা যোগ্য জবাব পেয়েছে। ভারত যেমন বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে জানে, তেমনই চোখে চোখ রেখে তাকানো এবং জবাব দেওয়ার সাহসও তার আছে। আমাদের বীর সেনারা দেখিয়ে দিয়েছেন যে, তারা কখনও ভারতমাতার গৌরবে আঁচ লাগতে দেবেন না।
এ দিকে বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, দেশের ভিতরে করোনা এবং লাদাখ সীমান্তে চীন দুটি লড়াইয়েই জয়ী হবে ভারত। অবশ্য অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চীনের মতো প্রবল শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে হঠাৎ যুদ্ধ ঘোষণা সম্ভব নয়।
বিশেষত অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন শাহের সাক্ষাৎকারের টুইটে তার নাম করে এএনআই প্রথমে লিখেছিল, দুই যুদ্ধে (ওয়ার) জেতার কথা। কিছু ক্ষণ পরেই সুর নামিয়ে লড়াই (ব্যাটল) করা হয় তাকে। বিরোধীদের কটাক্ষ, পাকিস্তানকে দিনে-রাতে ‘দুরমুশ করা’ মোদী সরকার চীনের বেলায় কিন্তু আদ্যন্ত সাবধানী।
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ অন্য দলগুলোর প্রশ্ন, যে বিষয় ঘিরে এত বিতর্ক, লাদাখ-সীমান্তে চীনের সেই জায়গা দখল করা, না-করা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল কোথায়?
‘মন কি বাত’ শুরুর আগেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর টুইট, “দেশ রক্ষা এবং সুরক্ষার কথা কবে হবে?” লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কটাক্ষ, একবার অন্তত ‘মন কি বাত’-এর বদলে ‘লাদাখ কি বাত’ হোক!”
তার প্রশ্ন, এ দেশের মাটিতে হানা দেওয়ার চেষ্টার পরেও কেন এক বারও চিনের নাম মুখে আনছেন না প্রধানমন্ত্রী? কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালারও প্রশ্ন, ৩৩ মিনিটের ‘মন কি বাত’-এ একবারও চীনের নাম বললেন না প্রধানমন্ত্রী! তিনি কি চীনকে ভয় পান?
আরও পড়ুন : চীনের জন্য সীমান্ত খুলছে নেপাল, উদ্বিগ্ন ভারত
মোদীর মুখে চীনের নাম না-শুনে কিছুটা অবাক প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশও।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড