আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছিলেন, বৈঠকে ভারত এবং চীনের মধ্যে সুর নরম ছিল না। সেটারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত কিছুটা কৌশলে পরস্পরের দিকে আঙুল তুলেছেন।
সব মিলিয়ে কূটনীতিকদের মতে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে থাকা দুই পক্ষের সেনাবাহিনী সাময়িকভাবে হয়তো পিছু হটবে। কিন্তু গালওয়ান উপত্যকাকে পুরোপুরি ড্রাগনের নিঃশ্বাস মুক্ত করার জন্য এখনো লম্বা পথ বাকি।
ভারতের অভিযোগ, একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার স্থিতাবস্থা এবং সীমান্ত চুক্তি ভঙ্গ করেছে চীন। মে মাসের শুরুতেই বিপুল সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে সেখানে। প্রায় একই সময়ে দিল্লিতে চীনের রাষ্ট্রদূত এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভারত যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এমনকি গত ১৫ জুনের ঘটনার দায়ও চীনের নয়।
এ ধরনের টানাপড়েনের মধ্যেই গালওয়ান-কাণ্ডের ১০ দিন পর গতকাল চীন স্বীকার করল, সেদিন নিহত হয়েছেন তাদের সেনাবাহিনীও। তবে সংখ্যা বেশি নয়।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ভারত-চীনের মধ্যে ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশনের (ডব্লিউএমসিসি) বৈঠকেই চীনের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, ভারত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এই সংঘাতে উস্কানি দিয়েছে।
একই সময়ে চীনের প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ করে, ১৫ জুন রাতের ঘটনা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে ভারত। গতকালের ডব্লিউএমসিসি পর্যায়ের বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বক্তব্য, পিছু হটার যে প্রক্রিয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তা এক দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার হতে চলেছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে যা যা পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে তা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার এ পারে অর্থাৎ আমাদের নিজেদের দিকে। ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পার হয়ে স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেনি।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু চীন একই ভূমিকা নেয়নি। যার কারণে বারবার সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। মে মাসের গোড়া থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীন বিপুল সেনা মোতায়েন করতে থাকে। এটা ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বাধ্য হয়েই ভারতকে পাল্টা সেনা মোতায়েন করতে হয়। সব মিলিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়।
৬ জুন দুই পক্ষের সেনা প্রতিনিধির মধ্যে তৈরি হওয়া ঐকমত্য থেকে সরে এসে চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন : নেপাল-ভুটানের সঙ্গেও এবার সংঘাতে জড়াল ভারত
এ দিকে চীনা রাষ্ট্রদূত সুং ওয়েংদুং বলেছেন, গালওয়ানে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের দায় চীনের নয়। আমরা আশা করছি ভারত এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যা সীমান্ত পরিস্থিতিকে জটিল করে তোলে। বরং তারা এমন ব্যবস্থা নেবে যাতে সীমান্তে সুস্থিতি আসে।
সূত্র : আনন্দবাজার
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড