• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাস্তার জলে হাবুডুবু খায় কাগজের সন্তানেরা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ মে ২০২০, ১১:৪০
কলেজ স্ট্রিট

দুই পাশে সারি সারি দোকান। কত দোকান আছে তো তার চাল নেই। মাঝে জলে থৈথৈ রাস্তা। আর সেখানে ভাসছে রং-বেরঙের মলাট, বই। আম্ফান কবেই উড়িয়ে নিয়ে গেছে চাল, দরজা-জানালা। আর রাস্তা আর দোকানের পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলা, ইংরেজিসহ কত ভাষার কাগুজে দলিল, গল্প। এশিয়ার বৃহত্তম বইয়ের বাজার কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এই করুণ দশা। শব্দহীন এই রাস্তায় আজ নেই বই হকারদের ডাক, শুধু তাদের আফসোস পড়ে আছে।

ভারত বাংলাদেশের বইপ্রেমীদের প্রত্যেকের কাছেই সুপরিচিত এই কলেজ স্ট্রিটের প্রাণবন্ত চেহারাটা বদলে দিয়েছে আম্ফান। পুরোপুরি তছনছ করে দিয়েছে বইপ্রেমীদের ভালোবাসার কলেজ স্ট্রিটকে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য অনুসারে, প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আম্ফানের তাণ্ডবে।

লকডাউনের কবলে আগেই ছন্দ হারিয়েছিল বইয়ের ব্যবসা। এবার সেই বইপাড়ায় যুক্ত তান্ডব চালিয়ে গেল আম্ফান। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বই-বিক্রেতাদের একাংশ প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ওই বইগুলোকেই কোনও রকম শুকিয়ে অর্ধেক দামে বিক্রি করে কিছুটা আয়ের পথ দেখার চেষ্টা করছেন। আবার ব্যবসায়ীদের অনেকেই আবার বইপাড়ার মায়া ত্যাগ করে সবজির ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন। কারণ, এই ক্ষতি সামলানোর মতো সামর্থ তাদের নেই।

গত বুধবারের ঝড়ের রাত কাটতে না কাটতেই বিধ্বস্ত কলেজ স্ট্রিটের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বইপ্রেমীদের অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়াতে চান। ভালবাসার বইপাড়াকে চেনা ছন্দে ফিরিয়ে আনা। যে ভাবেই হোক আবার হাসি ফোটানোর চেষ্টা বইপাড়ার মুখে। বই এর এ মহল্লাকে বাঁচাতে শুরু হয়েছে ফেসবুক অনলাইন মাধ্যমে বই বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ। সেই অর্থ তুলে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট বইগুলির বিক্রেতা ও প্রকাশকদের হাতে। জানা যায়, ইতিমধ্যেই প্রচুর মানুষ তাদের এই উদ্যোগে সাড়া দিয়েছেন। অনেকেই যোগাযোগ করেছেন বই কেনার ইচ্ছা জানিয়ে।

কলেজ স্ট্রিটের অনেক প্রকাশক বা বিক্রেতার কাছে বই তাদের সন্তানের মতো। কাগজ কেনা থেকে বাঁধানো— সবটাই তিলে তিলে হয়ে ওঠে তাদেরই উৎসাহে। তাই ভালবাসার বইগুলিকে কতগুলি ভিজে কাগজের মণ্ড হিসাবে কেজি দরে বিক্রি করতে তারা নারাজ। এই উদ্যোগে প্রকাশকরাও তাই কিছুটা আশার আলো দেখছেন।