আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভয়াল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে তছনছ হয়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। তাতে বাদ যায়নি কলকাতা বিমানবন্দরও। বিমানবন্দরের কাচ ভেঙে গেছে। একাধিক জায়গায় ভেঙে পড়েছে ফাইবারের শেটও। এই পরিস্থিতির মধ্যে বিমান চলাচল পরিষেবা স্বাভাবিক হবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আগামী ২৪ মে থেকে ভারতে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যার পর অতি প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কলকাতাসহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে। ঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৮৫ কিলোমিটার।
মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আম্ফানের তাণ্ডবে বিপুল ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যটি। বিমানবন্দরের চারপাশের এলাকাও বিপুল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ভেঙ্গে পড়েছে গাছ ও বিদ্যুতের খুটি। এছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায়।
আম্ফানের তাণ্ডবে বিমানবন্দরের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, একদিনে আমাদের এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হয়েছে রাজ্যে। এর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে। এরজন্য সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এটা একটা বড় বিপ বিপর্যয় (বিগ ডিজেস্টার)। এটা যে এতটা হবে তা আঁচ করা যায়নি। মানুষের সর্বনাশ হয়ে গেছে। দুই চব্বিশ পরগনা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপুল ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুষের।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে লন্ডভন্ড পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা শহরসহ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। এছাড়া হাওড়া, হুগলি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের অবস্থাও ভয়াবহ বলে জানাচ্ছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
হাজার হাজার বাড়ি এবং গাছপালা ভাঙার খবর পাওয়া গেছে। তবে বাস্তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এর অনেক গুণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবশেষ খবরে কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়ে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ৩ জন মারা গেছে কলকাতায়।
গোটা রাজ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে হাজার হাজার কাঁচা বাড়ি, জমির ফসল। উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। মোবাইল টাওয়ার। ভেঙে গেছে বহু পুরোনো বাড়িঘর। ভেঙেছে সুন্দরবন অঞ্চলের বহু নদীর বাঁধ। প্লাবিত হয়েছে আশপাশের গ্রাম। মারা গেছে বহু গবাদিপশু।
রাজ্যটির জেলাগুলো থেকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার পাশাপাশি উড়ে গেছে চাল। ভেঙে পড়েছে গাছপালা। উপকূল এলাকায় সমুদ্রে বেড়েছে জলোচ্ছ্বাস। আম্ফানের দাপট বিকেলের পর থেকে তা আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সর্বত্র ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ছিল বৃষ্টি। ঝড়ের আঘাতে ঘড়বাড়ি ভাঙার পাশাপাশি গাছপালা উপড়ে যায়। ভেঙে যায় জেটিও। সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয় উপকূলীয় এলাকায়। সকাল থেকেই ছিল সমুদ্র উত্তাল। প্রবল জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়। অনেক স্থানে বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
দুই চব্বিশ পরগণা শেষ এবং কলকাতা একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, গোটা ধ্বংসের চিত্র বুঝতে ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যাবে। একদিনে এই ক্ষয়ক্ষতি পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
ওডি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড