আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের বন্দর নগরী করাচিতে চীনের সেনাদের সামরিক মহড়া চালানোর একটি ভিডিও টুইটারে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্ত উৎসের এবং প্রকাশ্যেই পাওয়া উপগ্রহ থেকে তোলা এমন সব ছবি ও ভিডিওর ভাণ্ডার ঘেঁটে এটি সংগ্রহ করা হয়েছ।
বাণিজ্যিক উপগ্রহের তোলা ছবি ও ভিডিও ঘেঁটে এটি বের করেছেন ডি-আটিস নামের টুইটার ব্যবহারকারী। এতে দেখা যায়, পাকিস্তান নৌবাহিনীর হোভারক্রাফট করাচির মানোরা সৈকতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পিএনএস কাসিম নামের পাক নৌবাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থল ঘাঁটির পাশেই এটির অবস্থান।
অবশ্য, অন্যান্য সূত্র থেকে জানা গেছে, হোভারক্রাফটিতে পাকিস্তান ও চীন উভয় দেশের নৌ সেনারা রয়েছেন। হোভারক্রাফট থেকে দুই দেশের সেনার পাশাপাশি সৈকতে নামছেন এবং সৈকতে পাশাপাশি দৌড়ে যাচ্ছেন এ দৃশ্য দেখা গেছে। তবে এমনটি হয়ত মহড়ার দৃশ্য ক্যামেরায় নান্দনিক ভাবে তুলে ধরার কথা ভেবে করা হয়েছে। যুদ্ধের সময় এ ভাবে সেনা নামানো হয় না।
এ কথা সত্যি যে উভয় দেশের মহড়া ক্যামেরার কথা ভেবে করা হয় নি। বরং দেশ দুইটির মধ্যে বিরাজমান গভীর প্রতিরক্ষা সম্পর্কের বিষয় এর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এ সম্পর্ক শিল্পক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে। চীন কেবল পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী দেশই নয় বরং পাকিস্তানের জাহাজনির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠায়ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
মহড়ায় চীন একটি বিমান প্রতিরক্ষা ডেস্ট্রয়ার, একটি ফ্রিগেট এবং একটি সরবরাহকারী জাহাজ মোতায়েন করেছিল। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায় যে চীনা জাহাজগুলি পাকিস্তানি নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে ভিড়ে নি। বরং করাচির কনটেইনার টার্মিনালের কাছে নোঙর করেছে।
চীনের ডেস্ট্রয়ারটি ছিল টাইপ -০২৫ ডি লুয়াং-তৃতীয় শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ ইনচুয়ান (১৭৫)। সাড়ে সাত হাজার টনের জাহাজের এইচএইচকিউ -৯ দীর্ঘপাল্লার এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহনের সক্ষমতা আছে। এতে মার্কিন নৌবাহিনীর এজিআইএস ডেস্ট্রয়ারগুলির মতো বড়মাপের ফেজ অ্যারে রাডার রয়েছে। চীনা গণমুক্তি ফৌজের এ ধরণের ৮ টি জাহাজ আছে এবং আরও তৈরি করা হচ্ছে।
ফ্রিগেটটি ছিল জিয়াংকাই -২ শ্রেণির । এটি সজ্জিত হয়েছে রাশিয়ার তৈরি বিমান বিধ্বংসী বাক ক্ষেপণাস্ত্রের চীনা সংস্করণ দিয়ে। চীনের এ ধরণের ৩০টি জাহাজ আছে।
মহড়ায় চীন একটি ডুবোজাহাজ উদ্ধারকারী জাহাজও মোতায়েন করেছিল। একে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। পাকিস্তান নৌবাহিনীকে ইউয়ান শ্রেণির ৮ ডুবোজাহাজ সরবরাহ করছে চীন। এরমধ্যে চারটি চীনে এবং বাকী চারটি পাকিস্তানে নির্মাণ করা হবে। ডুবোজাহাজের ক্ষেত্রে ঐতিহ্য অনেক পুরানো হলেও পাক নৌবাহিনীর কোনও উদ্ধারকারী জাহাজ নেই।
চীনের এ সফরের মধ্য দিয়ে পাক নৌবাহিনীকে ডুবোজাহাজ উদ্ধারকারী জাহাজ ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। সম্ভবত মহড়ায় এটি ব্যবহার করেছে পাকিস্তান।
বলা হয়েছে, মহড়ায় পাক নৌবাহিনীর দুটি ফ্রিগেট, দুটি ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ এবং কয়েকটি বিমানের অংশ নিয়েছে। আরব সাগরে অনুষ্ঠিত এ মহড়ার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। এতে নৌবাহিনীর অন্যান্য জাহাজ বা বিমানও অংশ নিয়ে থাকতে পারে।
চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সুদৃঢ় পর্যায়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে এমন মহড়া আরও ঘন ঘন হতে পারে। এ জাতীয় মহড়া দুদেশের জন্য আরও কাঠামোগতও হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্য দিয়ে আরব সাগরে লড়াইয়ের বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে চীন। চীনা নৌবাহিনী বৈশ্বিক হওয়ার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে আর এটিই হয়ত তার দ্বার খুলে দেয়ার সুযোগ এনে দেবে।
ওডি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড