আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনাভাইরাস মহামারিতে সৃষ্ট সংকটের ফলে সাধারণ মানুষের আর্থিক অনিশ্চয়তা কাটাতে জার্মানির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলো রবিবার এক সমঝোতায় এসেছে। এর আওতায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ইউরো অবিলম্বে ভুক্তভোগীদের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু হবে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) থেকেই রাজ্য সরকারগুলি বিশেষ তহবিল থেকে সেই সব মানুষ ও ছোট প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ হস্তান্তর করবে, করোনা সংকটের ফলে যাদের আয় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এখবর জানিয়েছে।
করোনা সংকটের জের ধরে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতো জার্মানিতেও জনজীবন প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে। দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সব বড় অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে শিল্পী, কলাকুশলী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ছোট আকারের কোম্পানি ও স্বনির্ভর মানুষও দিশাহারা হয়ে পড়েছে। খুব কম মানুষ অসুস্থতা বা অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন।
যে সব মানুষের পক্ষে ধারদেনা করে অথবা অন্য কোনোভাবে অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, মূলত তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে জার্মান সরকার। যে সব ছোট আকারের কোম্পানির সর্বোচ্চ পাঁচ জন পর্যন্ত কর্মী রয়েছে, সেগুলি আপাতত তিন মাস পর্যন্ত ৯ হাজার ইউরো সাহায্য পাবে। ১০ জন কর্মী থাকলে ১৫ হাজার ইউরো পর্যন্ত সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এ জন্য বর্তমান সংকটের আগে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল, এম প্রমাণ দিতে হবে।
জার্মানির অর্থবিষয়ক মন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার বলেন, ‘চাষিরাও এই সহায়তা পাবেন।’
জার্মানির সরকার বড় কোম্পানিগুলিকে সাহায্য করতে জন্য সহজ শর্তে ঋণ, সরকারি মালিকানার সুযোগ ইত্যাদি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে। কিন্তু কিছু কোম্পানির আচরণে সরকার অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে পড়ছে। অ্যাডিডাস ও এইচঅ্যান্ডএম-এর মতো বহুজাতিক কোম্পানি একতরফাভাবে দোকানের ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেবে বলে জানিয়েছে। করোনা সংকটের ফলে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে দোকান থেকে কোনো আয় হচ্ছে না, এই যুক্তি দেখিয়েছে কোম্পানিগুলি।
জার্মানির অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস এমন বেপরোয়া পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে সম্পত্তির মালিকদের ক্ষতি হবে। এর বদলে মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, জার্মান সরকার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভাড়ার সংকটের সমস্যা মেটাতেও সাময়িক সহায়তা করছে।
আইনমন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট এই সুযোগের অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশেষ করে আর্থিকভাবে শক্তিশালী কোম্পানি এমন সংকটের সময়ে ভাড়া দেওয়া বন্ধ রাখলে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অ্যাডিডাস ২০১৯ সালে ২০০ কোটি ইউরো মুনাফা করেছিল। আত্মপক্ষ সমর্থনে সেই কোম্পানির এক মুখপাত্র সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে জানিয়েছেন, যে দোকানের মালিকদের জানিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড