আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহামারি করোনা মোকাবেলায় ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে ভারত। আর এতে বিপাকে পড়েছে দেশটির শত কোটি মানুষ। বিশেষ করে দিনমজুর, গৃহহীন ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুক্তভোগীদের অবস্থা খুবই করুণ। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া দেশ লকডাউন করায় মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন অনেকেই।
গত ১০ দিনের মধ্যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুইবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে একবারও মানুষজন তাদের জরুরি চাহিদা কীভাবে মেটাবে তা পরিষ্কার করেননি তিনি।
সপ্তাহখানেক ধরেই ভারতে পথচারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া, যানবাহনের টায়ার ফুটো করে দেয়ার অসংখ্য ছবি ও ভিডিও দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় শহরগুলোতে আটকে পড়া লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিকের নিত্য পণ্যের যোগান বা ঘরে ফেরার বিষয়ে কোনও সুব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারণে গাড়িঘোড়া না থাকায় বহু মানুষ শত শত কিলোমিটার হেঁটেই বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন।
ইতোমধ্যেই মধ্যপ্রদেশে এমন এক অভিবাসী কর্মীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রণবীর সিং নামে ওই ব্যক্তি দিল্লির একটি রেস্টুরেন্ট কাজ করতেন। লকডাউনের কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। গাড়ি না পেয়ে হেঁটেই ৩০০ কিলোমিটার পাড়ি দিচ্ছিলেন। কিন্তু ২০০ কিলোমিটার যাওয়ার পরেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে যান রণবীর এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
চরম দুর্দশা এইচআইভি আক্রান্তদের জন্যেও। ২০১৭ সালের হিসাবে, বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ এইডস আক্রান্ত দেশ ভারত। সেখানে অন্তত ২ কোটি ১৪ লাখ এইডস আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত এবং নিয়মিত সরকারি হাসপাতালে গিয়ে অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) নেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন থেরাপি নিতে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন : লকডাউনে ইউরোপের বায়ুদূষণ কমছে
এছাড়াও, দেশটিতে প্রতিবছর প্রায় ছয় হাজার কিডনি, দেড় হাজার লিভার ও ২৫ হাজার কর্নিয়াল ট্রান্সপ্লান্ট (প্রতিস্থান) হয়। আছে হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস প্রতিস্থাপনও। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব অস্ত্রোপচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্যকর্মী ও অল ইন্ডিয়া ড্রাগ অ্যাকশন নেটওয়ার্কের সহ-আহ্বায়ক মালিনী আইসোলা বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই একটি নন-কোভিড মানবিক সংকটের মুখোমুখি হতে পারি, যদি সরকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে না পারে; বিশেষত করে গুরুতর রোগীদের, যাদের স্থায়ী চিকিৎসা বা ওষুধ দরকার।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড