• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

যেভাবে ও যতদিনের মধ্যে করোনার ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি মিলবে

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ মার্চ ২০২০, ১০:৪৬
করোনা ভাইরাস
করোনা ভাইরাস (ছবি : শিনহুয়া)

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্বই এখন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। উৎপত্তিস্থল চীনের সীমা অতিক্রম করে ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রায় ১৮০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এর মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বিশ্বের বড় বড় শহরগুলো। বন্ধ হয়ে গেছে মানুষের চলাচল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত। করোনার কারণে গোটা বিশ্বই যেন এখন থমকে গেছে।

কিন্তু এর শেষ কোথায়? মানুষ কবে নাগাদ তাদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন জীবনে ফিরতে পারবে? এ প্রশ্ন সবার।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, আগামী ১২ সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভাইরাসের ‘ঢেউ উল্টোপথে ঘুরিয়ে’ দিতে সক্ষম হবে ব্রিটেন।

এছাড়া আরও অনেক বিশ্বনেতাই তিন মাসের মধ্যে করোনার বিস্তার ঠেকিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে করোনার বিস্তার ঠেকানো এবং আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসলেও ভাইরাসটির সংক্রমণ পুরোপুরি শেষ হতে অনেক সময় লাগবে। এমনকি তিন বছরের বেশি সময়ও লেগে যেতে পারে।

কিন্তু করোনা আতঙ্কে যেভাবে বড় বড় শহর বন্ধ রাখার পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন চলাফেরার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হচ্ছে, সেটি দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এভাবে সবকিছু বন্ধ থাকলে সমাজ ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তাই এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দ্রুত কার্যকর কৌশল খুঁজে বের করতে হবে দেশগুলোকে। খুঁজতে হবে বিধিনিষেধগুলো প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার উপায়।

এ বিষয়ে এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ বিষয়ের অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ বিবিসিকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসাটা মোটেই সহজ হবে না। কেননা এ ব্যাপারে কোনো দেশই এখন পর্যন্ত কৌশল ঠিক করেনি। তাই এটি অনেক বড় একটি সমস্যা। আর এই কৌশল ঠিক করা বড় ধরনের বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ।

তবে এ ক্ষেত্রে তিনটি উপায়ের কথা বলেছেন মার্ক উলহাউজ। এগুলো হলো- টিকা দেওয়া, অসংখ্য মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের ফলে তাদের শরীরে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে কিংবা স্থায়ীভাবে মানুষ ও সমাজের আচার-আচরণে পরিবর্তন নিয়ে আসা।

টিকা আসতে সময় লাগবে ১২ থেকে ১৮ মাস। এই টিকা গ্রহণ করলে করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসলেও কেউ অসুস্থ হবে না। যত বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে ততই ভালো। যদি মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়, তাহলে এই ভাইরাস আর ছড়িয়ে পড়বে না।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলার জন্য ব্রিটেন যে কৌশল নিয়েছে সেটি হচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। এতে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা কম হবে। অন্যদিকে হাসপাতালগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেলে আইসিইউতে জায়গা পাওয়া যাবে না। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।

ব্রিটেনের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালান্সি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কখন কোন পর্যায়ে যাবে সেটি নিয়ে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া সম্ভব নয়।

লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেন, আমরা সংক্রমণের মাত্রা কমিয়ে রাখার কথা বলছি, যাতে দেশের কম সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়। আমরা যদি দুই বছরের বেশি সময় ধরে এটা করতে পারি তাহলে দেশের একটি বড় অংশ ধীরে ধীরে আক্রান্ত হবে। এর ফলে স্বাভাবিক নিয়মে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে।

আরও পড়ুন : সমন্বিত পদক্ষেপ না নিলে মৃত্যু হবে লাখ লাখ মানুষের : জাতিসংঘ

এ দিকে অধ্যাপক উলহাউজ আরেকটি বিষয়ের কথা বলেছেন। সেটি হলো, মানুষের আচার-আচরণে স্থায়ী পরিবর্তন নিয়ে আসা। এমন পরিবর্তন যাতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মাত্রা বেশি না হয়।

ওডি/এসসা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড