• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নাগরিকত্ব ইস্যুতে সপ্তাহজুড়ে উত্তাল দিল্লি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০১ মার্চ ২০২০, ১৪:৩২
নাগরিকত্ব ইস্যুতে উত্তরপ্রদেশের পর উত্তাল দিল্লি
সড়কে বিক্ষুব্ধ জনতা (ছবি : ইন্ডিয়া টুডে)

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যকার সহিংসতার জেরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত কয়েকদিনের সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে। চলমান সহিংসতার ঘটনায় থানায় দায়ের হয়েছে ১৪৮টি মামলা।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এমএস রণধাওয়া জানিয়েছেন, সহিংসতার ঘটনা তদন্তের জন্য ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিকে ডাকা হয়েছে। তদন্তকারীরা এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষস্থলে গেছেন এবং নমুনা সংগ্রহ করেছেন।

তাছাড়া দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে ২৫টিই অস্ত্র আইনে বলেও জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের এই মুখপাত্র।

এমন প্রেক্ষাপটে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজধানীতেও সহিংসতার দায়ে জনগণের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। গত ডিসেম্বরে উত্তরপ্রদেশেও এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লি পুলিশের দুই কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এমনকি ক্ষতিপূরণ আদায়ে জরিমানা বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলেও দাবি তাদের।

যদিও দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তিনি বলেন, দিল্লিতে যে ঘটনা ঘটছে তার জন্য আমি বিচলিত, উদ্বিগ্ন, দুঃখিত এবং মর্মাহত। শান্তি ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি। আক্রান্তদের পরিবারও খুব অসহায়। তাদের সহযোগিতা করা উচিত।

এ দিকে রাজধানীর কোথাও কোনো ধরনের সহিংসতা নেই বলে জানিয়েছেন দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শনিবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আজ আমরা সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেছি। দিল্লির কোনো এলাকা থেকেই সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, এমন সহিংস পরিস্থিতিতে দিল্লির মসজিদ ও মন্দির রক্ষায় একে অপরকে সহায়তা করছে স্থানীও হিন্দু ও মুসলিমরা।

সহিংসতার উত্তাপ টের পাওয়া মাত্রই মৌজপুর এলাকার হনুমান মন্দির পাহারা দিয়েছেন মুসলিমরা। অন্যদিকে হিন্দুরা পাহারা দিয়েছেন আজিজিয়া মসজিদ।

এলাকার বাসিন্দা ফয়জান বলেন, আমাদের এলাকায় কোনো হিন্দু-মুসলিম বিভেদ নেই। আমাদের শৈশব কেটেছে মন্দির ও মসজিদে। সহিংসতার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর, একদল মন্দিরের পাশ থেকে গলিতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। তারা উভয় উপাসনালয়ে আক্রমণ করতে চেয়েছিল। আমরা একসঙ্গে তা প্রতিরোধ করেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল কুমারের মতে, আমাদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রয়েছে। আহত হয়ে অনেকেই আমাদের এলাকায় চিকিৎসার জন্য এসেছেন। আমরা তাদের সুস্থ করে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। আগামীতেও আমাদের এই সম্প্রীতি একই রকম থাকবে।

অপরদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে কোনো নাগরিকত্ব সনদ নেই। তিনি মূলত জন্মসূত্রে সেখানকার নাগরিক। শনিবার এমনটাই জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (পিএমও)। ভারতীয় তথ্য অধিকার আইনে (আরটিআই) মোদীর নাগরিকত্ব নিয়ে করা এক ব্যক্তির প্রশ্নের জবাবে দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি শুভঙ্কর সরকার নামে ওই ব্যক্তি আরটিআইয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিকত্ব ইস্যুতে প্রশ্ন করেন।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সচিব প্রবীণ কুমার বলেছেন, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক। তাই নথিভুক্তিকরণের মাধ্যমে ভারতীয় হলে যে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়, তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না।

মূলত এমন জবাবে বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট রয়েছে বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। তাছাড়া বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চলা বিক্ষোভের মধ্যেই তথ্যটি উত্তেজনা বাড়াচ্ছে বলেও মত বিশ্লেষকদের।

আরও পড়ুন : শপথ নিলেন মালয়েশিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন

সমালোচকদের ভাষ্য, যে দেশে প্রধানমন্ত্রীর নিজেরই কোনো নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট নেই। তিনি কেবল জন্মসূত্রে ভারতীয় বলে দাবি করছেন। তার পক্ষ থেকে অন্যদের কাছে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়া অবান্তর একটি বিষয় মাত্র।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড