• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাপানি প্রমোদতরীতে করোনায় আক্রান্ত বেড়ে ১৭৫

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৫৬
জাপানি প্রমোদতরীতে করোনায় আক্রান্ত বেড়ে ১৭৫
করোনা ভাইরাসে আক্রান্তকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে (ছবি : সিএনবিসি)

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসে এখন পর্যন্ত এক হাজার একশ ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা ৪৪ হাজারের অধিক।

গোটা বিশ্ব যখন মহামারি এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত, ঠিক তখনই করোনা আতঙ্কে ৩ হাজার ৭১১ যাত্রীসহ এক প্রমোদতরীকে আটক করেছিল জাপান। যদিও রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কোয়ারেন্টাইন করে রাখা সকল যাত্রীকে জাহাজ থেকে নামিয়ে আনা হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানায়, ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ‘ডায়মন্ড প্রিন্সেস’ নামে ওই যাত্রীবাহী প্রমোদতরীকে জাপানের একটি বন্দরে কোয়ারেন্টাইন করেছিল প্রশাসন।

যদিও ক্রুজ শিপে থাকাকালীন মরণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন শতাধিক লোক। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭৫ জনে পৌঁছেছে। তাদের সকলকেই বর্তমানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা উপসাগরীয় বন্দরে পৌঁছায় জাহাজটি। তখন সেখানকার ১০ যাত্রীর শরীরে জ্বরসহ করোনা ভাইরাসের অন্যান্য লক্ষণগুলো দেখা দেয়। এদের মধ্যে ৮০ বছর বয়সী এক যাত্রীর শরীরে ভাইরাসের আলামত পাওয়ার পর প্রমোদতরীটি কোয়ারেন্টাইন করে জাপান সরকার। মূলত এর পরপরই সেখানকার অন্য যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়।

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

এমনকি সিঙ্গাপুরে দুই বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দুইজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

এ দিকে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান তেদরোস আদহানম করোনা ভাইরাসের নতুন নাম ঘোষণা করেছেন। তিনি জানান, নতুন ভাইরাসটি এখন থেকে COVID-19 নামে পরিচিত হবে।

নামের ব্যাখ্যায় তেদরোস আদহানম বলেন, ভাইরাসটির নামের CO দিয়ে করোনা, VI দিয়ে ভাইরাস, D দিয়ে ডিজিজ (রোগ) বোঝানো হয়েছে। আর 19 দিয়ে ২০১৯ সালকে নির্দেশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

আরও পড়ুন : চীনে করোনা আক্রান্ত দেহ পোড়ানোর আলামত!

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

ওডি/কেএইচআর