আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী বর্তমানে নতুন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসে চীনে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাছাড়া ভাইরাসটির শনাক্তস্থলে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন হাজারো মানুষ। শুধু তাই নয়, চীনের সীমানা পেরিয়ে ভাইরাসটি এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আরও অন্তত তেরোটি দেশে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, কেবল ফ্রুট ব্যাট বা মেগাব্যাট ভাইরাসের সঙ্গে উহান প্রদেশে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের মিল রয়েছে। তাছাড়া ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ ও ছবিতে দেখা যায়, চীনা মানুষজন সাপ ও বাদুড়ের স্যুপ খাচ্ছেন।
সম্প্রতি চায়না সায়েন্স বুলেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, বাদুড় ও সাপের শরীরে পাওয়া যায় এমন একটি ভাইরাসের সঙ্গে নতুন করোনা ভাইরাসের অনেকাংশে মিল রয়েছে। এর আগে প্রাণঘাতী সার্স ও ইবোলা ভাইরাসের বিস্তারও উড়ন্ত কোনো স্তন্যপায়ী থেকে হয়েছিল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি ও হাত মেলানোর পর এবার ধারণা করা হচ্ছে চোখের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে ভয়াবহ এই ভাইরাস। খোদ বিজ্ঞানীরাই এমন কথা বলছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইলকে।
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, নতুন করে মারা যাওয়া অধিকাংশই উহান প্রদেশের। এখান থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল। আর সবমিলিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা প্রায় চার হাজারের অধিক।
বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।
এ দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নতুন একটি হাসপাতাল নির্মাণ শুরু করেছে চীন। মাত্র ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালটি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর সিএনবিসি।
সংবাদ মাধ্যমটিতে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ২৫ হাজার বর্গফুটের হাসপাতালটিতে শয্যা সংখ্যা থাকবে এক হাজার। আর আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালটিতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন।
অপরদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
আরও পড়ুন : ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরাসরি মার্কিন দূতাবাসে আঘাত হানে
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড