• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

‘সেদিন ইরানের হামলায় অন্ধ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র’

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৩৭
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। ৮ জানুয়ারির (বুধবার) ওই হামলার সময় মার্কিন সেনারা অন্ধ হয়ে যায় বলে উল্লেখ করেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি। সম্প্রতি ইরানের ওই হামলা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা। খবর পার্সটুডের।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আকাশে শক্তিশালী চোখ থাকার পরও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে পারেনি মার্কিন সেনারা। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় কয়েক ঘণ্টা পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল ইরাকে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটি। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে সেনারা আকাশে তাদের শক্তিশালী নজরদারির নিয়ন্ত্রণ হারায়। যেন কয়েক ঘণ্টার জন্য অন্ধ হয়ে যায় তারা।

একের পর এক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ইরাকের আইন আল-আসাদ মার্কিন বিমান ঘাঁটি। এ সময় আকাশে মার্কিন সেনাদের অতি শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল নজরদারি ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

সেদিনের হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অসহায়ত্বের চিত্রই ফুটে উঠেছে মার্কিন সেনাদের বক্তব্যে। আইন আল আসাদ ঘাঁটিতে যৌথ বাহিনী আয়োজিত গণমাধ্যমের পরিদর্শন অনুষ্ঠানে এএফপির সঙ্গে কথা হয় সেদিন ঘটনাস্থলে থাকা মার্কিন সেনাদের।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় ৮ জানুয়ারি বুধবার রাত ১টা ৩৫ মিনিটে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করে। ঘাঁটিতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী মোতায়েন ছিল। তখন পুরো ঘাঁটির নজরদারির জন্য ইরাকের আকাশজুড়ে উড়ছিল মার্কিন সেনাদের ৭টি ড্রোন। এসব ড্রোনে চারটি পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত ছিল।

এই ড্রোনগুলোর একজন পাইলট সার্জেন্ট কসটিন হেরউইগ বলেন, সংঘর্ষ হতে পারে ভেবে আমরা এয়ারক্রাফটগুলো (ড্রোন) চালু রেখেছিলাম। ইরান যখন মার্কিন ঘাঁটিতে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে, তখন হেরউইগ গ্রে ঈগল নামের ড্রোন চালাচ্ছিলেন।

হামলার আগাম সতর্কতার নির্দেশ পেয়ে ঘাঁটির দেড় হাজার সেনার বেশিরভাগই দুই ঘণ্টা ধরে বাঙ্কারে অবস্থান করছিল। তবে ১৪ জন পাইলটকে ঘোর কালো ভার্চুয়াল ককপিটে বসে যানগুলোকে রিমোট কন্ট্রোলে উড়াতে হচ্ছিল। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরায় চোখ রেখে চারপাশের পরিস্থিতি দেখছিলেন তারা।

হেরউইগ জানান, প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের শেল্টারে আঘাত হানে। তবে পাইলটদের আগের অবস্থানেই থাকতে হয়। এরপর একের পর এক আঘাত হতে থাকে। তিনি ভাগ্যকে বরণ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন।

সেনারা জানায়, তিন ঘণ্টা পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। পাইলটদের অপারেশন কক্ষ লাগোয়া ঘুমানোর কোয়ার্টারে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত লাগে। ফার্স্ট সার্জেন্ট ওয়েসলে কিলপ্যাট্রিক বলেন, শেষ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার এক মিনিটেরও কম সময়ে আমি বেশ কিছুটা পেছন দিকে দিয়ে ঘুরে বাঙ্কারের দিকে যাচ্ছিলাম। দেখলাম, আমাদের ফাইবার লাইনগুলো আগুনে পুড়ছে। ওই লাইনগুলো ভার্চুয়াল ককপিট থেকে এন্টেনা এবং স্যাটেলাইটের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এর মাধ্যমে গ্রে ঈগলসে সিগন্যাল পাঠানো হতো এবং ক্যামেরা থেকে পাওয়া ফিডব্যাক আইন আল-আসাদ ঘাঁটির স্ক্রিনে চলে যেত।

আরও পড়ুন : প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে ইসরায়েলে রকেট হামলা

কিলপ্যাট্রিক বলেন, ফাইবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেখানে আর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ফলে সেনারা ড্রোনগুলোর অবস্থান খুঁজে পাচ্ছিল না এবং আকাশে-মাটিতে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে কিছু জানতে পারছিল না। তারা ঘটনা সম্পর্কে পুরো অন্ধকারে চলে যায়। ওই সময় কোনো ড্রোনকে ভূপাতিত করা হলেও আইন আল-আসাদে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া বাহিনী খবর পেত না।

হেরউইগ বলেন, এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। একে তো ড্রোনগুলো অনেক ব্যয়বহুল। তা ছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে, আমরা চাই না তা অন্যের হাতে পড়ুক বা শত্রুপক্ষ পেয়ে যাক।

২০১৯ সালে মার্কিন সামরিক বাজেট অনুসারে, একটি গ্রে ঈগল ড্রোনের দাম ৭০ লাখ মার্কিন ডলার। ইরাকে মোতায়েনরত মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী ২০১৭ সাল থেকে এটি ব্যবহার করছে।

ওডি/ডিএইচ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড