• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

উত্তাল উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের ‘ভয়’ ভাগ্য বরণ

  কে এইচ আর রাব্বী

০২ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৪৩
উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের বিক্ষোভ
উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভরত মুসলিম জনতা (ছবি : দ্য পলিটিকো)

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে সদ্য পাস হওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ যাবত চলা বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। গত ২০শে ডিসেম্বর রাজ্যটিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

বিশেষ করে এখানেই কেন পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ঘোলাটে হলো। বিষয়টি জানতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদকরা প্রদেশটির বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন। রাজ্যের কানপুর শহরের বাবুপুরা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শরিফ। জায়গাটি ভীষণ সংকীর্ণ, সরু গলি দিয়ে যাতায়াত করতে হয় সকলকে। সেখানেই ছোট একটি ঘরে বসবাস করেন তিনি, যার একটা অংশে দিনের বেলাতে রান্না হয়, আর রাতে পুরোটাই হয়ে যায় শোয়ার কক্ষ।

ঘরের সামনেই বসে ছিলেন মোহাম্মদ শরিফ। সাংবাদিকদের দেখে তিনি উঠে দাঁড়ান, সবাইকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কয়েক মিনিট কারও মুখে কোনো কথা নেই।

চোখের পানি সামলানোর চেষ্টা করতে করতে শরিফ বলেন, ‘আমি সব হারিয়েছি। আমার আর বাঁচার কোনো ইচ্ছা নেই। কী দোষ ছিল আমার ছেলের, কেন পুলিশ তাকে গুলি করল?’

গত ২৩ ডিসেম্বর তার ছেলে মোহাম্মদ রইসের মৃত্যু হয়। ত্রিশ বছরের রইসের পেটে গুলি লেগেছিল। টানা তিনদিন অসুস্থ অবস্থায় বেঁচে থাকার পর শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হেরে যান তিনি।

উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী মুসলিমরা (ছবি : এনডিটিভি)

শরিফ বলেছেন, ‘আমার সন্তান তো কোনো বিক্ষোভ করছিল না। সে সড়কে বসে জিনিসপত্র বিক্রি করছিল। আর সেখানেই বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘটনাচক্রে সে যদি বিক্ষোভ করেও থাকে, তাহলেও পুলিশ কি তাকে হত্যা করতে পারে?’

তিনি বলছিলেন, ‘আজ আমরা মুসলিম বলেই কি তাকে মরতে হলো? আমরা কি ভারতের নাগরিক নই? আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ প্রশ্ন করে যাব!’

নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভে মোহাম্মদ রইসের মৃত্যু হয়, উত্তরপ্রদেশের অনেক স্থানে এ রকম আরও বিক্ষোভ এখনো চলছে। আন্দোলন হয়েছে ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও। কোথাও কোথাও পাথর ছুড়তে থাকা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সশস্ত্র সংঘর্ষও ঘটেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম এই উত্তরপ্রদেশ। এখানে বিক্ষোভের সময় সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক পুলিশ আহত হন। যদিও বিক্ষোভকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগও রয়েছে বাহিনীটির বিরুদ্ধে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদানের সুযোগ দিচ্ছে। যা মুসলিমদের জন্য বৈষম্যসূচক।

তবে দেশটির ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি বলছে, যেসব ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে এখানে এসেছে আইনটি কেবল তাদেরই সুরক্ষা দেবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জোর দিয়ে বলেছেন, আইনটি কখনোই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়। তবে এর জন্য সবাইকেই কিছু প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে।

এরপরও প্রায় চার কোটি মুসলিমের রাজ্য উত্তরপ্রদেশসহ গোটা ভারতে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, যারা সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা হবে। এমনকি তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি পোষানো হবে।

যার প্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশ এই নির্দেশ মানতে শুরু করেছে। তারা বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করেছে, যাদের অধিকাংশই মুসলিম। এমনকি কানপুর জুড়ে দেয়ালে দেয়ালে তাদের পোস্টারও লাগানো হয়েছে। এর ফলেই স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

বাবুপুরওয়ায় দেখা মিলল কয়েকজন মহিলার। যারা বলেছিলেন তাদের স্বামী-সন্তানরা গ্রেফতার ও নির্যাতনের ভয়ে অন্য রাজ্যে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্যে তাদের ১০ বছরের ছেলে সন্তানও রয়েছে।

উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদকারী মুসলিম নারীরা (ছবি : ইন্ডিয়া টুডে)

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, বর্তমানে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) কারণে এই আতঙ্ক আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

কানপুরের মুসলিম রাজনীতিবিদ নাসিরুদ্দিন বলেছেন, ‘এনআরসির কারণে মানুষকে এখন ভারতের নাগরিক কি না তা আগে প্রমাণ করতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ভেবে দেখুন, একটি মুসলিম পরিবার ও আরেকটি হিন্দু পরিবার উভয়েই নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হলো। তবে নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের (সিএএ) কারণে হিন্দু পরিবারটি এখন নাগরিকত্বের দাবি করতে পারছে আর মুসলিম পরিবারটি নাগরিকত্ব হারাচ্ছে।’

যদিও নয়াদিল্লির দাবি, এখনই তাদের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বাস্তবায়নের কোনো পরিকল্পনা নেই। এরপরও মুসলিম জনগোষ্ঠীগুলো ভয় পাচ্ছে, তারা হয়তো নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হবে।

মুসলিম নেতা নাসিরুদ্দিনের মতে, উত্তরপ্রদেশে মুসলিমরাই সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছে, কারণ তারা কখনোই ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপিকে বিশ্বাস করেন না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কী দোষ? এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এখানে কোনো বিষয়ে একমত না হলে সকলের প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আছে। তবে আমাদের রক্ষকই এখন ভক্ষক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিমরা কোথায় যাবে।’

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের আগেকার কিছু মুসলিমবিরোধী মন্তব্য স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়েছে। অতীতে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ভারতীয় মুসলিমদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেছেন।

এমনকি তিনি মুসলিম পুরুষদের বিরুদ্ধে হিন্দু মেয়েদের জোরপূর্বক বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ পর্যন্ত তুলেছেন। তাছাড়া বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের সঙ্গে তিনি পাকিস্তানি জঙ্গি হাফিজ সাঈদের তুলনা করেছেন।

উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভরত মুসলিম জনতা (ছবি : হিন্দুস্তান টাইমস)

‘বিবিসি নিউজের’ সংবাদদাতা ইয়োগিতা লিমায়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘এনডিটিভিকে’ বলেছেন, কানপুর থেকে প্রায় ৩৬০ মাইল দূরের মুজাফফর নগর জেলায় বেশকিছু মুসলিমদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, একটি বাড়িতে পুলিশ টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে এমন কয়েকজন পুরুষ ও বালকদের সাক্ষাৎ হয়েছে যারা বলেছে পুলিশ তাদের ব্যাপক মাত্রায় মারধর করেছে, এমনকি কয়েকদিন থানায় আটক করে রেখেছে।

তদন্তে রাজ্যের মীরাট ও বিজনোরের মতো অন্যান্য শহরগুলোতে পুলিশি বর্বরতার চিত্র ফুটে উঠেছে। কেননা এলাকাগুলোতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান অন্তত আটজন। নিহতদের পরিবারের লোকজন বলছে, পুলিশই গুলি চালিয়ে তাদের হত্যা করেছে। যদিও বাহিনীটির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে।

রাজ্যের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা পিভি রামাশাস্ত্রীর মতে, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী কেবল তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি 'ডিজিটাল তথ্য প্রমাণের' ভিত্তিতে বাকিদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।

পুলিশ ভিডিও দেখে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করলেও কেন নিজেদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করার স্বাধীনতা সকল মানুষের আছে। তারা অভিযোগ করুক, আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এসবের প্রেক্ষিতে স্থানীয় সমাজকর্মী সুমাইয়া রানা বলেছেন, এতগুলো মানুষ মারা গেল, এর দায় একমাত্র পুলিশকেই নিতে হবে। সহিংসতা দিয়ে কোনো সংকটের সমাধান হয় না, যা উভয় পক্ষের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তবে এর জন্য বিক্ষোভকারীদের গুলি করাই কি পুলিশের একমাত্র উপায়?

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে রাজ্য পুলিশের একজন কর্মকর্তা ‘এনডিটিভিকে’ বলেন, প্রচণ্ড চাপের মধ্যেই আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আদেশ এসেছে, যে কোনো মূল্যে বিক্ষোভ দমন করতে হবে।

উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ

উত্তরপ্রদেশে সিএএ বিরোধী প্রতিবাদকারী মুসলিম নারী (ছবি : আনন্দবাজার)

এ দিকে রাজনৈতিক দলগুলো বিক্ষোভের জন্য এরই মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ করছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি বলছে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে স্থানীয় বিরোধীদলগুলো মুসলিম যুবকদের বিভ্রান্ত করার জন্যই এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছে।

দলের রাজ্য প্রধান স্বতন্ত্র দেব সিং বলেছেন, আমরা তিন বছর আগে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখেছি। তবে এবার বিরোধীদের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির কারণেই সহিংসতা বেড়েছে।

তিনি বলেন, সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি সিএএর বিষয়ে মুসলিমদের ভুল বোঝাচ্ছে। তারা এসব বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে এবং উস্কানিও দিচ্ছে। সিএএ আইনটি কখনোই মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়। এমনকি কোনো ধর্মেরই বিরুদ্ধেও নয়।

বিজেপি নেতার ভাষায়, ‘আমাদের সরকার সবার জন্যই কাজ করছে। কোনো জাত কিংবা ধর্মের বিরুদ্ধে বৈষম্য করছে না। আমরা বিরোধীদের সমালোচনাকে স্বাগত জানাই।’

অপর দিকে সমাজবাদী পার্টির নেতা ও রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।

তার মতে, সরকারকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে যে, কারা এই লোকদের ওপর গুলি চালিয়েছে। কেন পুলিশ তখন কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিল না? বর্তমানে অভিযোগ করা খুব সহজ। এবারের বিক্ষোভেই দেখা গেল রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিজেপি কতটা ব্যর্থ।

এমন প্রেক্ষাপটে সংশয় প্রকাশ করে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে। এর পরপরই তারা আসামে নাগরিক তালিকা কার্যকর ও পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তৈরি করে দেখিয়েছে। যার অধিকাংশই মুসলিমবিরোধী সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুন :- ছবিতে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন জাগানো ২০১৯

এর ফলে উত্তরপ্রদেশের মুসলিমদের বিশ্বাস বিজেপির ওপর থেকে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো বিকল্প নেই।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড