আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শেষ ও তৃতীয় দিনের শুনানিতে মিয়ানমারের মংডো শহরের একটি ফুটবল ম্যাচে উপস্থিত দর্শকদের ছবি দেখিয়েছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। ওই ছবি দেখিয়ে সু চি বলেন, মিয়ানমার সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে এবং তা চালিয়ে যেতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা আদালতের কাছে সেই সুযোগ চাই। ২০১৬-১৭ সালের মতো আবারও আন্ত-জাতিগত সংঘাত শুরু হোক আমরা তা কখনোই চাই না।
আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) শুনানির শেষ দিনে মিয়ানমারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ বক্তা হিসেবে সু চি এসব কথা বলেন।
মিয়ানমারের সামরিক বিচার ব্যবস্থার উন্নতি করার সুযোগ না দিয়ে এটা দেশের বাইরে বের করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন অং সান সু চি।
মামলায় দেশটির পক্ষে এজেন্ট সু চি তার আবেদনে বলেন, গাম্বিয়ার করা মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হোক। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও খারিজ করে দেওয়া হোক।
সামরিক অপরাধের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো মিয়ানমারেও সামরিক অপরাধের বিচার সামরিক বিচার ব্যবস্থায় হয়ে থাকে।
সু চি বক্তব্যের পর আদালতের প্রেসিডেন্ট ইউসুফ জানান, আদালত তার সিদ্ধান্ত যত দ্রুত সম্ভব উভয় পক্ষকে জানিয়ে দেবে। তার এই ঘোষণার মাধ্যমে তিন দিনব্যাপী শুনানি সমাপ্ত হয়।
আরও পড়ুন : নীরবতার কারণে সমালোচিত সু চি
এর আগে, রোহিঙ্গা গণহত্যায় নীরব থাকার কারণে সমালোচিত হন অং সান সু চি। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুনানির শেষ দিনে সু চির সমালোচনা করা হয়।
মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম নিউ স্ট্রেইটস টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর পরও নীরব রয়েছেন অং সান সু চি। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়েই কথা বলছেন তিনি। আর এটি নিয়েই সমালোচনা করেছেন গাম্বিয়ার আইনজীবীরা।
সু চির উদ্দেশে গাম্বিয়ান আইনজীবী ফিলিপে স্যান্ডস বলেন- ম্যাডাম এজেন্ট, আপনার নীরবতা উচ্চারিত শব্দের চেয়েও অনেক বেশি কথা বলছে। একসময় ধর্ষণ নিয়ে খুব সরব ছিলেন। কিন্তু এখন এত নীরব কেন?
এ দিন আরেক আইনজীবী পল রেইখলার বলেন, যেসব নবজাতককে মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নদীতে ছুড়ে ফেলা হয়েছে তাদের মধ্যে কয়জন সন্ত্রাসী ছিল। গণহত্যাকে অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষ উল্লেখ করে চাপা দেওয়া যাবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিশাল সামরিক অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা ওই রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। মূলত এই অভিযান নিয়েই ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড