আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) শুনানির দ্বিতীয় দিনে মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরবেন দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি।
শান্তিতে নোবেলজয়ী এই নেত্রী যে নিজের বক্তব্যে মিয়ানমারের পক্ষে সাফাই গাইবেন তা নিশ্চিত। তবুও আজ তিনি মিয়ানমারের পক্ষে আনা গণহত্যার অভিযোগ ঢাকতে কি বলতে পারেন তা নিয়ে সবার মনেই জন্ম নিয়েছে কৌতূহল।
রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার যে অভিযান চালিয়েছে তা সম্পূর্ণ বৈধ- আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সু চি এমনটিই বলবেন বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। তাছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার এর মধ্যে নিজেদের দেশে তদন্ত শুরু করেছে। সেটাও উল্লেখ করতে পারেন তিনি। তাছাড়া তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের ‘অভিবাসী’ (বিশেষ করে বাংলাদেশি) প্রমাণের চেষ্টা করবেন। খবর ‘ইরাবতী’।
অবশ্য ইতোমধ্যেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনা মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিন তুন। কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, স্থানীয়রা নয়, রাখাইন সংকটের কারণ বহিরাগতরা। আর আমরা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মামলায় সেই বিষয়টিই ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব।
তিনি স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আদি জনগোষ্ঠীর অংশ নয়। তারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ্য মিন তুনের দাবি, এই ব্যাপারটি আন্তর্জাতিকভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। গুরুত্ব দেওয়া হয় কেবল দলবদ্ধভাবে তাদের বাংলাদেশে প্রবেশকে। আন্তর্জাতিক আদালতের শুনানিতে মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা সেটিই ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবে।
এ দিকে গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু বলেছেন, সু চি যদি মিয়ানমারের অপরাধ অস্বীকারের চেষ্টা করেন, তবে তা হবে চরম হতাশাজনক।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের মুখে জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে নতুন করে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
গত ১১ নভেম্বর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ অ্যাখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। আদালত মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন। এর ফলে রোহিঙ্গাদের হত্যা-নিপীড়নের জন্য সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো তদন্তের সুযোগ তৈরি হয়। শুরুতে আন্তর্জাতিক আদালতের দেওয়া তদন্তের নির্দেশ প্রত্যাখ্যানের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত মামলা লড়ার ঘোষণা দেয় মিয়ানমার সরকার।
ওডি/এসসা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড