শ্রমবাজার নিয়ে মাহাথিরের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর বৈঠক 

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার বৈঠকে বসেন তারা।

বৈঠকে ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের স্থগিত থাকা শ্রমবাজার দ্রুত খুলে দেয়া এবং সেদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ৬ নভেম্বর কুয়ালালামপুরে পার্লামেন্ট ভবনে যায়। ওই সময় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী এম. কুলাসেগারানের নেতৃত্বে সে দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রম অভিবাসন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মিলিত হয় তারা। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর চেষ্টায় শ্রমবাজারটিতে সফলতার মুখ দেখতে চলেছে বাংলাদেশিরা।

জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরেই দেশটিতে কর্মী পাঠাতে আগ্রহী বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে ২৪ বা ২৫ নভেম্বর ঢাকায় আসছে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিনিধি দল। ওই সময় নিরাপদে অভিবাসন নিশ্চিত করতে আরও কিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

আলোচনায় শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। উভয় দেশের নেতারা নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ, কর্মসংস্থান ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে মানসম্মত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। এ ছাড়াও অবৈধ নিয়োগের অপচেষ্টা রোধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তারা।

বৈঠকে যেসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে :

• উভয় দেশের যৌথ এবং সমন্বিত প্রচেষ্টায় অভিবাসন ব্যয়কে একটি গ্রহণযোগ্য সীমায় নিয়ে আসা।

• উভয় সরকার, মালয়েশিয়ার নিয়োগ সংস্থা এবং বাংলাদেশ নিয়োগ সংস্থার অংশগ্রহণ জড়িত এমন একটি প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন।

• বাংলাদেশ নিয়োগ এজেন্সিগুলোর প্রতিযোগিতামূলক বাজার এবং অভিবাসন ব্যয় কম রাখতে উৎসাহিত করবে। কিন্তু সক্ষমতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং দক্ষতার মানদণ্ড বজায় রাখবে। সব ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে সুরক্ষিত, সর্বজনীন এবং একীভূত অনলাইন সিস্টেম চালু করা যা উভয় সরকারের স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

• বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সঞ্চয় প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে মানবসম্পদ মন্ত্রীর প্রস্তাবের বিষয়ে মতবিনিময়। স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশ সরকার উত্থাপিত ব্যয় সম্পর্কে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মানবসম্পদ মন্ত্রীকে আরও তদন্ত করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি এসপিপিএ বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় তৎকালীন প্রবাসী ও বৈদেশিক কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম মালয়েশিয়া গিয়ে বৈঠক করলেও (২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮) শ্রমবাজার চালু করা সম্ভব হয়নি। এরপর ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নতুন করে কর্মী নেয়ার কিছু পদ্ধতি ঠিক হয়।

ওডি/ডিএইচ