• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হতাশা কমাতে ওষুধ সেবন করছেন?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

০১ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:১১
অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট
ছবি : প্রতীকী

প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে একটু একটু করে আরও বেশি হতাশার গভীরে ডুবে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এই মানুষগুলোকে একটু হলেও মানসিক শান্তি দিতে, হতাশা থেকে বের করে আনতে চিকিৎসকেরা আরও নানা উপায়ের পাশাপাশি ব্যবহার করছেন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টও। তবে, মজার ব্যাপার হলো, সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, হতাশা রোধকারী এই ওষুধগুলো হতাশা দূর করে কয়েক সপ্তাহ পরে। প্রথমেই সেগুলো দূর করে একজন মানুষের মানসিক উদ্বিগ্নতা।

সাধারণত, মানুষ হতাশায় ভুগলে আনন্দদায়ক কোনো ব্যাপারকে অনুভব করতে ব্যর্থ হয়। কোন কিছুর প্রতি মনোযোগ দিতে না পারা, মন খারাপ থাকা- ইত্যাদি সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা। সেরট্রালাইন নামক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এক্ষেত্রে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন বা ‘হ্যাপি কেমিক্যাল’ তৈরি করে এবং মানুষকে মানসিকভাবে ভালো থাকতে সাহায্য করে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই ওষুধ মানুষের মস্তিষ্কে খুব বেশি প্রভাব রাখে না। ১২ সপ্তাহের পর মানুষের মধ্যে ওষুধের কারণে পরিবর্তন তৈরি হয়।

তথ্যটি বেশ হতাশাজনক, তাই না? ১২ সপ্তাহ খুব একটা কম সময় কিন্তু নয়! তবে, এই গবেষণার সময় অন্য একটি তথ্যও প্রকাশ পেয়েছে। আর সেটি হলো এই যে, হতাশা পুরোপুরি দূর না হলেও মানসিক যে উদ্বিগ্নতা আক্রান্তদের মধ্যে থাকে সেটাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যেই কমিয়ে আনতে সাহায্য করে এই অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সাইকিয়াট্রির গবেষক ও প্রভাষক গেমা লুইসের মতে, আপাতদৃষ্টিতে ফলাফলটিকে হতাশার জন্য পরে এবং উদ্বিগ্নতার জন্য আগে কাজ করতে সক্ষম একটি পদ্ধতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ব্যবহারের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। মানুষ হতাশা নিয়ে বেশি সচেতন হচ্ছে। হতাশায় ভুগছে বেশি। একটু একটু করে চারপাশের পরিবেশ ও পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার সাথে সাথে এই হতাশার পরিমাণটাও বাড়ছে। ইতিপূর্বে, এ নিয়ে মানুষ খুব একটা সচেতন ছিলেন না। এখন বেড়ে গিয়েছে চিকিৎসক, বেড়েছে চিকিৎসা নিচে ইচ্ছুক রোগীদের সংখ্যাও।

অতীতে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ব্যবহার করা হতো মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। সাধারণ মানুষ কিংবা কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো না। এখন অবশ্য ব্যাপারটি তেমন নয়। বিশেষ করে, এই গবেষণাটি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, বর্তমানে শুধু হতাশায় ভুগছেন এমন ব্যক্তি নয়, একইসাথে উদ্বিগ্নতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্যও কিছু ওষুধ কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে অতীতে বাঁধাধরা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ওষুধগুলো কার্যকরী হলেও, এই গবেষণাকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করলে, এখন সেটা সবাই ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে এখন ব্যাপারটি মোটেই পুরোপুরি পরীক্ষিত নয়। আপনি যদি ভাবেন যে, আপনার মানসিক অস্থিরতা ও উদ্বিগ্নতার জন্য অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণ করবেন, তাহলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করুন। এমন নয় যে, এই ওষুধগুলো আপনাকে মানসিক স্থিরতা দেবে না, উদ্বিগ্নতা কমাবে না। অন্তত, উপরোক্ত পরীক্ষায় সেটাই পাওয়া গিয়েছে।

তবে এখনো এ নিয়ে বিস্তারিত পরীক্ষা চলছে। এমনকি, এই গবেষণা চালিয়েছেন যারা, তারাও পরবর্তী গবেষণা চালাচ্ছেন। হতাশা দূর করতে সাহায্যকারী ওষুধগুলো মানসিক উদ্বিগ্নতাও কমাবে- এ ব্যাপারটি পুরোপুরিভাবে স্বীকৃত করার চেষ্টা চলছে। ততদিন একটু অপেক্ষা না হয় করলেন!

হতাশা ও মানসিক উদ্বিগ্নতা আমাদের প্রাত্যহিক সমস্যা। প্রতি ৩ জন মানুষের মধ্যে ২ জনই কোনো না কোনোভাবে এই সমস্যায় ভুগছেন। তাই নিজেকে এমন কোনো সমস্যায় দেখলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। সঠিক চিকিৎসা নিন। মানসিক সাহায্য নিন।

আপনার পাশের মানুষটি এই সমস্যায় ভুগলে তাকে মানসিকভাবে সাহায্য করুন। থেরাপি, ওষুধ- উপায়গুলো প্রয়োগ করুন। এতে করে মানসিকভাবে আপনি সুস্থ থাকবেন আরও সহজে!

সূত্র- মেডিকেল নিউজ টুডে

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড