সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
শিশুদের মধ্যে যে সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়, সেগুলোর বেশিরভাগই ইএনটি (ইয়ার, নোজ, থ্রোট) বা নাক কান ও গলা সংক্রান্তই হয়ে থাকে। এগুলোর মাধ্যমে ভাইরাস ও নানা সংক্রমণের শিকার হয় শিশুরা।
শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম থাকায় এক্ষেত্রে তাদের ভোগান্তি বেশি হয়ে থাকে। শিশুদের তো বটেই, এক্ষেত্রে বাবা-মাকেও অনেক বেশি ভুগতে হয়। আপনার বাসায় কি একজন শিশু রয়েছে? তাহলে চলুন, ইএনটি ডিজঅর্ডার সম্পর্কে চিকিৎসকদেরকে করা কিছু প্রশ্ন এবং সেগুলোর উত্তর জেনে নেওয়া যাক-
১। কোন রকমের ইএনটি সমস্যা শিশুদের বেশি হয়ে থাকে?
শিশুদের মধ্যে এ সংক্রান্ত নানারকম সমস্যাই দেখা যায়। তবে সবচাইতে বেশি দেখতে পাওয়া যায় অ্যালার্জি, সাইনাস, ঘুমের সময়ে হওয়া নানা সমস্যা, এই যেমন- নাক ডাকা, নিঃশ্বাসে সমস্যা হওয়ার মতো কিছু ব্যাপার। দুই বছর বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়ে থাকে।
২। বর্তমান সময়ে কোন রকমের অ্যালার্জিগুলো শিশুদের মধ্যে বেশি দেখতে পাওয়া যায়?
শিশুদের মধ্যে সব রকমের অ্যালার্জিই দেখতে পাওয়া যায়। তবে এদের মধ্যে সবচাইতে বেশি দেখতে পাওয়া যায় ডাস্ট অ্যালার্জি। ত্বক, নাক, মুখ, কান ইত্যাদি মাধ্যমে এই অ্যালার্জি হতে পারে। স্প্রে, নাক পরিষ্কার করা এবং ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলোকে দূর করার চেষ্টা করেন সাধারণত চিকিৎসকেরা। ওষুধের ক্ষেত্রেও এমন সব ওষুধ প্রদান করা হয় যেগুলো শিশুদের খেতে ও শরীরের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না।
৩। শিশুদের অ্যালার্জি থেকে দূরে রাখার কোনো উপায় আছে কী?
শিশুদের অতিরিক্ত পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা থেকে বিরত রাখুন। আর তাছাড়াও, শিশুদের পাশে ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। শিশুরা অসুস্থ হলেই তাকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। বরং তাকে নিজ থেকে সুস্থ হতে উৎসাহিত করুন।
সম্প্রতি গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, জীবাণুর মধ্য থেকেই একজন শিশুর শরীর রোগ প্রতিরোধ করতে শিখে যায়। সম্ভব হলে শিশুকে যতটা সম্ভব বেশি মায়ের বুকের দুধ পান করান। এতে করে সে অন্যদের চাইতে বেশি সুস্থ থাকবে।
৪। আমার শিশুর ইতোমধ্যেই অ্যালার্জি আছে। এখন কী করবো?
এই অবস্থায় যতটা সম্ভব অ্যালার্জিকে বাড়িয়ে দেয় এমন কোনোকিছুর সংস্পর্শ থেকে শিশুকে দূরে রাখুন। পুতুল বা এমন কিছু যেগুলোতে ধুলো আটকে থাকে, সেখান থেকে তাকে দূরে রাখুন। এছাড়াও ঘরে পোষা প্রাণী না রাখার চেষ্টা করুন।
৫। শিশুর জ্বর ও ঠান্ডা হলে কী করবো?
তাকে ওষুধ না খাইয়ে বেশি করে পানি ও ভিটামিন সি আছে এমন খাবার খাওয়ান। শিশুর শরীর বারবার মুছে দিন এবং তাকে আলোযুক্ত স্থানে রাখুন। জ্বর খুব বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
৬। ইএনটি সমস্যা নিয়ে শিশুকে কখন চিকিৎসকের কাছে দেখাবো?
যদি আপনার শিশুর-
১। একদিনের বেশি সময় ধরে পানি পান করতে সমস্যা হয় ২। জ্বর বেড়ে যায় ৩। কফ হয় ৪। ঘাড় আটকে যায় এবং প্রচন্ড ব্যথা করে
ইত্যাদি ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে তাকে নিয়ে যান। মূলত, যে সমস্যাগুলো স্বাভাবিকভাবেই চলে যায়, সেগুলো যখন অনেকটা সময় ধরে চলবে এবং অসুস্থতা বেড়ে যাবে, তখন দেরী না করে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
আর যদি শিশুর নাক কান বা মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়, ব্যথা প্রচণ্ড পরিমাণ বেড়ে যায়, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে দেরী না করে জরুরী চিকিৎসা দিন তাকে।
সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রদান করা হয়। আপনার শিশুর দিকে নজর রাকুন। তার মধ্যে যদি খুব বড় কোনো পরিবর্তন দেখতে পান তাহলে সেটা নিয়ে গুরুত্ব দিন এবং খুব বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন।
মূল লেখক- লাউ পাং চেং ডেভিস, গ্লেনাগ্লেস হসপিটাল।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড