• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ল্যাসিক, নাকি আই ল্যাসিক- কোনটা ভালো?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২৫
ল্যাসিক
ছবি : সংগৃহীত

চশমা চোখে ঝুলিয়ে বা কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে আর কতদিন? অনেকেই একটা সময় বিরক্ত হয়ে পড়েন এসব পদ্ধতিতে। আর নানারকম ঝক্কি ঝামেলাও তো কম নেই এতে। তাই কম ঝুঁকি আর ভালো মানের জন্য দিনকে দিন ল্যাসিক পরিচিত হয়ে উঠছে সবার মধ্যে।

আপনিও কি ল্যাসিক করার কথা ভাবছেন? ল্যাসিকের রিফ্রেক্টিভ সার্জারির মাধ্যমে চোখের নানারকম সমস্যা, এই যেমন- মায়োপিয়া, হাইপারোপিয়া, অ্যাস্টিগম্যাটিজম ও প্রেসবায়োপিয়া ইত্যাদিকে একেবারের মতো ঠিক করে ফেলা সম্ভব।

আর বর্তমানে শুধু ল্যাসিক নয়, পরিচিত হয়ে উঠেছে আইল্যাসিকও। আপনিও যদি এই পদ্ধতি অবলম্বন করে দেখতে চান, তাহলে চলুন, আজ আইল্যাসিক নিয়ে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক-

ল্যাসিক কী?

লেজার ইন সিটু কেরাটুমিলেউসিসের সংক্ষিপ্ত নাম হলো ল্যাসিক। চোখের কর্ণিয়ার আকৃতিকে লেজার ব্যবহার করে অপারেশনের মাধ্যমে বদলে দেওয়া হয় এতে। প্রতি চোখে এই কাজটি করতে মোট ৪ মিনিট করে সময় লাগে।

এক্ষেত্রে, প্রথম ধাপে কর্ণিয়াল ফ্ল্যাপ তৈরি করা হয়। এতে মাইক্রোকেরাটম বা ফেমটোসেকেন্ড নামে একটি মোটোরাইজড ব্লেড সিস্টেম ব্যবহার করে কর্ণিয়ার ভেতরে ফ্ল্যাপ তৈরি করা হয় এবং সেটা যাতে বাকি কর্ণিয়ার সাথে খুব ভালো কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়।

পরবর্তী ধাপে কর্ণিয়ার ফ্ল্যাপটি উঠিয়ে এনে তার নিচে কর্ণিয়ার আকৃতি ঠিকঠাক করে দেওয়া হয়। এরপর ফ্ল্যাপকে নিচের আগের স্থানে বসিয়ে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিতে কোনোরকম ব্যথাবোধ হয় না। এমনকি, অপারেশনের ১-২ দিনের মধ্যেই কাজে ফিরতে পারেন রোগী।

আই ল্যাসিক কী?

আই ল্যাসিকের ক্ষেত্রে কোনো ব্লেড ব্যবহার করা হয় না। আর এখন পর্যন্ত এই পদ্ধতিটিকে আরো বেশি উন্নত আর নিরাপদ পদ্ধতি হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এতে করে আপনার চোখের স্বতন্ত্র আকৃতিকে বুঝে নিয়ে সেটা ঠিক করে ফেলা হয়। এটি এতোটাই নিরাপদ ও কার্যকরী পদ্ধতি যে, নাসা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতেও এটি ব্যবহার করা হয়।

কী পাবেন আই ল্যাসিকে?

আই ল্যাসিক কিছু বাড়তি সুবিধা দেবে আপনাকে, সেটা পুরো প্রক্রিয়াটিকে আরও বেশি সহজ করে তুলবে আপনার জন্য। চলুন, দেখে নেওয়া যাক আইল্যাসিকের ইতিবাচক দিকগুলো-

ব্লেডলেস সার্জারি-

ব্লেড ব্যবহারের মাধ্যমে ল্যাসিক সার্জারি সম্পাদন করা হয়। তবে আইল্যাসিকে ফেমটোসেকেন্ড ব্যবহার করা হয়। যেটি লেজারের মাধ্যমে চোখের ফ্ল্যাপকে ঠিকঠাক করে দেয়। সার্জারির উপরে চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণকে আরও বাড়িয়ে দেয় পদ্ধতিটি। ফলে নিরাপত্তাও অনেক বেশি বেড়ে যায়।

এই সার্জারির মাধ্যমে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যান রোগী। আর কেবল দ্রুত সেরে ওঠাই নয়, অনেক বেশি ভালো দৃষ্টিশক্তি পাওয়া যায় এতে করে। স্বাভাবিকের চাইতেও অনেক বেশি ভালো দেখতে পারেন রোগীরা আইল্যাসিকের পর।

এই পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাওয়া রোগীদের মতে, রাত ও দিনের বেলা চোখের যে খানিকটা সমস্যাও দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে একজন মানুষের, সেটাও চলে যায় এই সার্জারির পর। সার্জারির পর রোগীর দৃষ্টিশক্তি ২০/২০ হয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে। তরঙ্গের মাধ্যমে কাজ করা হয়।

সাধারণত, স্বাভাবিক ল্যাসিকের মাধ্যমে একজন রোগীর চোখের সাধারণ সব সমস্যা এই যেমন- মায়োপিয়া বা অ্যাস্টিগম্যাটিজম ইত্যাদি দূর করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে, চোখে কোনো ত্রুটি থাকলে শুধু সেটাই ঠিক করে নেওয়া হয়।

তবে লেজারের মাধ্যমে করা ল্যাসিকে কেবল নির্দিষ্ট ত্রুটির সমাধান করা হয় না। একইসাথে, একজন মানুষের চোখের যে যে ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা থাকে, সবটাই ঠিক করে ফেলা হয়। চশমার মাধ্যমেও এতোটা ঠিকঠাক দেখা সম্ভব হয় না।

ল্যাসিক অবশ্যই উন্নত ও ভালো একটি পদ্ধতি ছিল। তবে আই ল্যাসিক সেই মানকে আরও অনেক বেশি বাড়িয়ে তুলেছে, নিরাপদ করেছে। তাই, চোখের সুরক্ষায় আই ল্যাসিক ব্যবহার করতেই পারেন।

মূল লেখক- আং পেক কিয়াং লিওনার্দ, মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল।

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড