সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
মশার প্রকোপের সাথে সাথে চারপাশে জিকা ভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তাটাও বেড়েছে। বিশেষ করে নতুন মা ও বাচ্চাদের জন্য এই সময়টা বেশ বিপদজনক। চলুন, আজ তাই জেনে নেওয়া যাক জিকা ভাইরাস ও মা এবং সন্তানের উপরে এর প্রভাব সম্পর্কে-
জিকা ভাইরাস কী?
ডেঙ্গু আর চিকনগুনিয়ার মতোই মশাবাহীত একটি রোগের নাম জিকা। জিকা ভাইরাস আছে এমন কোনো মানুষকে মশা কামড়ালে, সেই মশা থেকে অন্য কোনো মানুষের শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সরাসরি মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে না।
জিকা ভাইরাসের লক্ষণ কী?
সাধারণ ভাইরাল জ্বরের মতোই জিকা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জিকা ভাইরাস খুব বেশি ক্ষতিকর হয় না। ৮০ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই জিকা ভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। মাত্র ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা যায়। জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে র্যাশ ও ব্যাথা ইত্যাদি সাধারণ লক্ষণগুলোই এক্ষেত্রে দেখতে পাওয়া যায়।
গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে জিকা ভাইরাস কতটা ক্ষতিকর?
গর্ভবতী নারীদের জন্য জিকা ভাইরাস বেশ বড় সমস্যা তৈরি করে। জিকা ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হওয়ায়, এটি মায়ের শরীর থেকে সন্তানের শরীরে প্রবাহিত হয়। গবেষণায় দেখা যায় যে, ভাইরাল ইনফেকশন হলে শিশুদের মস্তিষ্কে মাইক্রোচেফালির মতো সমস্যা দেখা যায়। এতে করে মস্তিষ্কের গঠন ছোট হয়ে যায়।
এতে করে শিশুদের বড় হওয়া ও অন্যান্য অনেক ব্যাপারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যদিও এখনো জিকা ভাইরাস ও মাইক্রোচেফালির মতো সমস্যার মধ্যকার সম্পর্ক পুরোপুরি বোঝা যায়নি। তবে, চিকিৎসকেরা গর্ভবতী নারীদের জ্বর, র্যাশ ও অন্যান্য ভাইরাল ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলেই পরীক্ষা করতে ও বাড়তি সতর্কতা গ্রহন করতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
মাইক্রোচেফালি গর্ভের শিশুকে কীভাবে প্রভাবিত করে?
মাইক্রচেফালি খুব মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে ভ্রূণ গর্ভেই মৃত্যুবরণ করতে পারে। আর যদি সেটা না হয়, সেক্ষেত্রেও মানসিকভাবে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। শিশুদের জন্য তো বটেই, বাবা-মায়ের জন্যও এই ব্যাপারগুলো পরবর্তীতে আরো বড় সমস্যা সৃষ্টি করে।
জিকা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে কী করবেন?
এই ভাইরাস থেকে দূরে থাকার সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে মশার উৎপত্তি কমিয়ে আনা। আপনার চারপাশে মশা যেন জন্ম না নেয় সেটা নিশ্চিত করুন। যদি রগের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের সাথে দ্রুত কথা বলুন। মশার প্রতিরোধক হিসেবে স্প্রে বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
বিশেষ করে, আপনার বাসায় যেন মশা জন্ম না নেয় সেটা নিশ্চিত করুন। জিকা ভাইরাসের কোনো টিকা বা প্রতিষেধক নেই। তাই এর চাইতে সবচাইতে ভালো উপায় হিসেবে ভাইরাসটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে পারেন আপনি।
আপনি যদি জিকার প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন কোনো স্থানে ভ্রমণ করেন, তাহলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। বিশেষ করে আপনি যদি সন্তানধারণ করেন, তাহলে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে পরীক্ষা করিয়ে নিন যে আপনার জিকা ভাইরাস সঙ্ক্রান্ত কোনো সমস্যা রয়েছে কিনা।
এতে করে শুরু থেকেই চিকিৎসক এই ভাইরাসের মোকাবেলায় দরকারি পদক্ষেপ নিতে পারবেন। আপনিও সুস্থ থাকবেন, সুস্থ থাকে আপনার অনাগত সন্তানও।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড