• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস : হিপ ড্যামেজ মোকাবেলা করুন সহজেই!

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

১৮ মার্চ ২০১৯, ১৫:৩৮
অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস
ছবি : সম্পাদিত

খুব কম পরিচিত একটি ব্যাপার হলেও সত্যি যে, নিতম্বের ব্যথার পেছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করে অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস। আমাদের শরীরের হাড়ে রক্ত সঞ্চালনের দরকার পড়ে। কিন্তু হাড়ে রক্ত সঞ্চালন না হলে হাড়ের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না করলে ব্যথা বাড়তে থাকে এবং ধীরে ধীরে পা, কনুই, কাঁধ ইত্যাদি অংশকে প্রভাবিত করে।

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস কেন হয়?

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস হওয়ার পেছনে সবচাইতে বড় কারণ হিসেবে কাজ করে স্টেরয়েড গ্রহণ। এক্ষেত্রে শরীরের ফ্যাট ভাঙার ক্ষমতা কমে আসে। রক্তনালী সংকীর্ণ হয়ে পড়ে এবং হাড়ে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। তবে স্টেরয়েড বাদেও মদ্যপান, উচ্চ কোলেস্টেরল, গভীর সমুদ্রে সাঁতার কাঁটা ইত্যাদি অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস তৈরি করতে পারে।

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের লক্ষণগুলো কী?

প্রথম কয়েক বছরে অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তাই, এই সময় সমস্যাটিকে চিহ্নিত করা কঠিন। তবে সময়ের সাথে সাথে কিছু লক্ষণ, এই যেমন-

ভারী কিছু তুলতে গেলে হাড়ের নির্দিষ্ট স্থানে প্রচণ্ড ব্যথা বোধ করা এবং নিয়মিত বা থেমে থেমে ব্যথা করা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এমনটা দেখা দিলে চিকিৎসকের সাথে দ্রুত কথা বলুন। না হলে দেরি করে হাড়ের জন্য বাজে কোনো সমস্যা তৈরি হতে পারে।

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের সমাধান কী?

যদি সমস্যাটি প্রথমদিকে ধরা পড়ে তাহলে চিকিৎসক আপনাকে কিছু ওষুধ দিতে পারবে ব্যথা কমানোর জন্য। তবে এছাড়াও শরীরে বেশি ওজন যাতে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করতে আপনাকে ক্র্যাচ ব্যবহার করতে হতে পারে। এছাড়া, সার্জারির মাধ্যমে হাড়ে রক্ত সঞ্চালন করিয়ে এবং হাড়ের ওপরে চাপ কমিয়েও এই সমস্যার খানিকটা সমাধান করা যেতে পারে। তবে কোনোকিছুতেই কোনো কাজ না হলে সেক্ষেত্রে হাড়ের প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন হতে পারে।

জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি বা হাড় প্রতিস্থাপন কী?

আপনার হাড়ের সমস্যার সমাধান করার ক্ষেত্রে যে ব্যাপারগুলো চিকিৎসকের মাথায় থাকে সেগুলো হলো-

১। ব্যথা কমিয়ে আনা ২। হাড়ের ক্ষয়রোধ করা ৩। হাড়ে রক্ত সঞ্চালন করা ৪। পুরো শরীরের অবস্থান ঠিক পর্যায়ে আনা ইত্যাদি।

আর এই কাজগুলো করা সম্ভব জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আপনার হাড় ও হাড়ের সংযোগস্থলকে সিনথেটিক জয়েন্ট দিয়ে পাল্টে ফেলা হবে। রোগী যেন ব্যথা ছাড়াই হাঁটাচলা করতে পারেন সেটাই নিশ্চিত করাই এই সার্জারির মূল লক্ষ্য।

নিতম্বের দুই পাশেই অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস হলে কী করবো?

সাধারণত, একটি নিতম্বে অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস হলে সেটা অন্যপাশের নিতম্বেও প্রভাবিত করতে পারে। এক্ষেত্রে কখনো কখনো দুই নিতম্বের সার্জারি করার প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্য চিকিৎসকেরা অনেক বেশি সাবধানতা অবলম্বন করে থাকেন। কারণ, আমাদের একটি নিতম্বের সার্জারি করার সময় সেখানে যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে অন্য নিতম্বেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সার্জারিতে বড় ক্ষত ও ছোট ক্ষত- দুইটিই তৈরি হতে পারে। এটা নির্ভর করবে আপনার চিকিৎসক কোন পদ্ধতিকে আপনার জন্য সঠিক ও নিরাপদ বলে ভাবছেন তার উপরে।

হাড়ের নির্দিষ্ট কোনো স্থানে ব্যথা বোধ করছেন? যদি তাই হয়, আর এই ব্যথা যদি আপনি নিতম্বের একটি নির্দিষ্ট স্থানে অনুভব করে থাকেন, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। কারণ, সমস্যা ছোট থাকলে তার সমাধান যতটা সহজে হওয়া সম্ভব, সেটি বড় আকার ধারণ করলে সেই সমাধান এতটা সহজ নাও হতে পারে।

মূল লেখক- ডক্টর সুরেশ নাথান, কার্ডিওলজিস্ট, মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল।

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড