• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নোবেলজয়ী ন্যাশ এবং সিজোফ্রেনিয়া

  রাকিব রওনক

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:২৯
সিজোফ্রেনিয়া
জন ফোর্বস ন্যাশ (ছবি : সংগৃহীত)

জন ফোর্বস ন্যাশ একজন আমেরিকান গণিতবিদ, যিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি গ্রাজুয়েট। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চলুন আমরা একটু জেনে আসি। ভার্সিটিতে ন্যাশের চার্লস নামে এক বন্ধু ছিল যার সঙ্গেই তিনি অধিকাংশ সময় কাটাতেন।

গ্রাজুয়েশন শেষ করে তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি তিনি করতেন তা হচ্ছে শত্রুপক্ষের কোড ব্রেক করা। ডিফেন্স ডিপার্টমেন্টের পার্চার নামক এক গোয়েন্দার নির্দেশনায় তিনি অনেক কোড ব্রেক করেন, কিন্তু রাশিয়ান গুপ্তচররা তার ব্যাপারে জেনে যায়। ন্যাশ তাই স্ত্রীসহ পালাতে চায়, কিন্তু স্ত্রীর সন্দেহ হয় তার এরকম আচরণ দেখে।

হায়! একি! মনোবিজ্ঞানী ন্যাশকে দেখে বলল তিনি সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। তিনি যে পার্চারের সঙ্গে কোড ব্রেক করেছেন কিংবা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু চার্লস তারা কেউ বাস্তবে নেই। সবই ছিল তার কল্পনা তথা হ্যালোসিনেশন। ন্যাশ তার পরবর্তী জীবনে বুঝতে পেরেছিলেন যে চার্লস এবং পার্চারের অস্তিত্ব নেই এবং অনেকটা স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছিলেন এবং ১৯৯৪ সালে অর্থনীতিতে তিনি নোবেল লাভ করেন, কিন্তু কী এই সিজোফ্রেনিয়া চলুন আমরা তা জেনে নেই।

সিজোফ্রেনিয়া অর্থ ‘স্প্লিটিং অব মাইন্ড’ তথা মস্তিষ্কের বিভক্তি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে মস্তিষ্কের বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনাই সিজোফ্রেনিয়া। একথা শুনলে অনেকেই ভাবতে পারেন বিক্ষিপ্ত চিন্তাভাবনা তো আমারও হয়, তাহলে কি আমি সিজোফ্রেনিক? এর উত্তর হচ্ছে না, আপনি সিজোফ্রেনিক নন। সিজোফ্রেনিয়ার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যদি এসব বৈশিষ্ট্যের বেশিরভাগই আপনার মধ্যে থাকে তবে ব্যাপারটা সন্দেহের।

১. ডিলিউসন অথবা হ্যালোসিনেশন :

ডিলিউশন হচ্ছে কোনো কিছু সমন্ধে ভুল ধারণা করা এমনকি যদি আপনাকে সত্যটা জানানো হয় তারপরও আপনি তা বিশ্বাস করতে রাজি নন। আর হ্যালোসিনেশন হচ্ছে এমন কিছু দেখা কিংবা শোনা যার অস্তিত্ব বাস্তবে নেই। যাদের এই লক্ষণগুলো পাওয়া যায় তাদের অ্যাকটিভ সিজোফ্রেনিক বলা হয়।

২. অসংলগ্ন কথাবার্তা কিংবা আচরণ :

সিজোফ্রেনিকদের কথায় অসংলগ্নতা সুস্পষ্ট এবং ব্যবহারও অস্বাভাবিক। রোগের শুরুতেই তারা নিজেদের আলাদা করে ফেলে। পরে বিভিন্ন আচরণ যেমন : হঠাৎ করেই রেগে যাওয়া আবার পরক্ষণেই হাসাহাসি করা। আবার দেখবেন প্রচণ্ড গরমে তারা শীতের কাপড় পড়ে আছে।

৩. স্মৃতি কমে যাওয়া :

এটি সচরাচর দেখা যায় না। সাধারণত নাম্বার কিংবা ঠিকানা মনে রাখতে না পারা, পরিচিত কাউকে চিনতে না পারা এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে সিজোফ্রেনিয়ার কারণ এখনও আমাদের অজানা। তবে তার মানে এই নয় সিজোফ্রেনিয়ার কোনো চিকিৎসা নেই।

ধারণা করা হয়, ডোপামিন রিসপ্টেরের আধিক্য কিংবা ডোপামিনের অতিরিক্ত কর্মক্ষমতার ফলেই সিজোফ্রেনিয়া হয়। বর্তমানে এর চিকিৎসায় অ্যান্টিসাইকোটিক ড্রাগ ব্যবহার করা হয় যাদের অধিকাংশই এই ডোপামিনের কর্মক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং অনেক ক্ষেত্রেই এই ড্রাগ কার্যকরী।

লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড