• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অল্প করে বারবার খাওয়া- স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী?

  সাদিয়া ইসালাম বৃষ্টি

২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:০১
খাবার
ছবি : প্রতীকী

অল্প করে দিনের পুরোটা জুড়ে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর খাবার গ্রহণ করা কোনো ফুল-টাইম চাকরির চাইতে কম কিছু নয়। মাথায় তো একটা বাড়তি চাপ থাকেই। সেইসাথে থাকে খাবার কেনা, তৈরি করা, গ্রহণ করা- এই ধাপগুলো। ভাবুন তো একবার! সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক টুকরো রুটি খাওয়া, এর কিছুক্ষণ পর একটা ফল আর এক গ্লাস দুধ, দুপুরের খাবারের আগে আগে হালকা নাশতা, এরপর দুপুরের খাবার ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।

পুরো প্রক্রিয়াটি কি আদৌ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে? এতোটা সময় খাবারের পেছনে খরচ করা কি বুদ্ধিমানের কাজ? চলুন, আজ এই ‘অনেকবার অল্প করে খাওয়া’ ব্যাপারটি নিয়ে জেনে নেওয়া যাক।

‘অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়া’ কাদের জন্য উপযোগী?

সাধারণত, চিকিৎসকেরা কিছু নির্দিষ্ট রোগীকে এই রকমের খাদ্যতালিকা অনুসরণ করতে বলেন। যদি কোন ব্যাক্তির গ্যাস্ট্রেক্টোমি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তিনি অবশ্যই অনেকটা খাবার একসাথে হজম করতে বা পেটে রাখতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে তিনি অনেকবার একটু একটু করে খাবার গ্রহণ করতে পারেন। আবার পেটের সমস্যায় ভুগছেন, ডাম্পিং সিনড্রোমে ভুগছেন বা হুইপেল প্রসিডিউরের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও এমন খাবার অভ্যাস বেশ স্বাস্থ্যকর।

সাধারণত, এমন সব সমস্যায় পেটে অনেকটা খাবার না রাখতে পারায় রোগী পুষ্টিহীনতায় ভুগে থাকেন। এই পুষ্টি যেন তার চাহিদা পূরণ করেন সেজন্যই চিকিৎসকেরা তাদেরকে বারবার অল্প করে খাবার খেতে পারেন। এতে করে তাদের ওজন কমে না, তারা সঠিক পরিমাণে পুষ্টি পান এবং সুস্থ থাকেন।

অনেকে আবার অনেকটা খাবার খেয়ে ফেললে গ্যাস্ট্রিক, পেটব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি নানা সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেকের শরীরে খাদ্য পরিপাকের ক্ষমতা খুব ভালো অবস্থায় থাকে না। অনেকে খাবার পেটে না রাখতে পারার কারণে বমি করে ফেলেন। এই সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে চলতেই এমন খাদ্যতালিকা দেওয়া হয় যার মাধ্যমে মানুষ খেতেও পারবে এবং তার পেটের উপরেও কোন বাড়তি চাপ পড়বে না। তবে বারবার অল্প করে খাওয়ার এই অভ্যাসটির রয়েছে নেতিবাচক দিকও।

এমন খাদ্যাভ্যাসের নেতিবাচক দিক :

আপনি যদি এমনিতেই ভেবে থাকেন যে, এই খাদ্যতালিকা অনুসরণ করবেন, সেক্ষেত্রে আপনার বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সেগুলো হলো-

১। দিনের অনেকটা সময় আপনার খাবার কেনা, রান্না করা, খাওয়া- ইত্যাদি কাজেই চলে যাবে। আপনি মোট মিলে একটা বাড়তি চাপের মধ্যে থাকবেন। আর খাবারের মান ভালো না হলে সেক্ষেত্রে এই বারবার খাওয়ার ব্যাপারটি আপনাকে আরও অসুস্থ করে তুলতে পারে।

২। অনেকবার খাবার খেলে আপনার ক্ষুধা না লাগলেও শরীরের পুষ্টির জন্য আপনাকে খাবার গ্রহণ করতে হতে পারে। যেটি দীর্ঘমেয়াদে আপনার কাছে বিরক্তিকর বলেও মনে হতে পারে।

৩। খাবার খাওয়ার ব্যাপারে আপনার মধ্যে অরুচি কাজ করতে পারে একটা সময় গিয়ে। অনেক বেশিও খেয়ে ফেলতে পারেন আপনি এই প্রক্রিয়ায়। সেক্ষেত্রে, আপনার মূল ইচ্ছা যদি হয় ওজন কমানো, সেটা সবসময় এই খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে নাও হতে পারে।

তবে হ্যাঁ, আপনি যদি চান এই খাদ্যাভ্যাসটিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে সেক্ষেত্রে কিছু ব্যাপার মাথায় রাখুন-

১। একদিনের পুরো খাবার একসাথে তৈরি করে রাখুন। যাতে করে বারবার খাবার তৈরির ঝামেলায় না যেতে হয়। এতে আপনার সময় ও ক্লান্তি দুটোই বাঁচবে।২। এই রকমের খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করার আগে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নিন। ৩। খাবার ছোট ছোট টুকরো করুন এবং ভালো করে চিবিয়ে খান। ৪। খাবারের সাথে এমন পানীয় নিন যেটি আপনাকে হজমে সাহায্য করবে। ৫। বারবার খেতে সমস্যা হলে এবং আপনার নির্দিষ্ট ক্যালোরির দরকার হলে খাবারের সময় কমিয়ে পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে নিতে পারেন।

তবে হ্যাঁ, এই সবকিছুই করুন চিকিৎসকের সাথে কথা বলার পর। অন্যথায়, উল্টো বুমেরাং হয়ে এই খাদ্যাভ্যাস আপনাকেই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান, পরিমিতভাবে খান। সুস্থ থাকুন।

মূল লেখক- লুইস ইয়াপ, মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল।

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড