• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কোন ধরনের প্রসব প্রক্রিয়া সবচাইতে ভালো?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৩:০৭
প্রসব
ছবি : প্রতীকী

প্রথমবারের মতো মা হতে চলেছেন? প্রসবের নানারকম উপায় রয়েছে। কখনো সেটা প্রাকৃতিকভাবে হতে পারে, কখনো চিকিৎসকদের খানিকটা সহযোগিতায়। তবে যেহেতু এই কষ্টটির মধ্য দিয়ে আপনি যাবেন, তাই এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আপনার খানিকটা জেনে রাখা উচিত। চলুন, দেখে নেওয়া যাক ডেলিভারির কিছু প্রচলিত প্রক্রিয়াকে-

প্রাকৃতিক প্রসব-

প্রাকৃতিক প্রসব বা ভ্যাজাইনাল ডেলিভারিতে আপনি প্রসবের প্রত্যেকটি ধাপকেই বুঝতে পারবেন। প্রথমে আপনার গর্ভে থাকা তরল পদার্থ বের হয়ে আসবে। এটাকে ওয়াটার ব্রেক বলা হয়। এই সময় আপনার যোনিপথে খানিকটা রক্তপাত হতে পারে। এরপর আপনি প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করবেন।

কারণ, সার্ভিক্স এসময় বড় হতে শুরু করবে। শিশু বাইরে আসার মতো পথ সৃষ্টি হলে চিকিৎসকেরা শিশুকে বের করে আনবেন। পরবর্তীতে শিশুর এবং আপনার সাথে যুক্ত নাড়ি কেটে দেবেন চিকিৎসকেরা। এই নাড়ি স্বাভাবিকভাবেও বেরিয়ে আসতে পারে, আবার তেমনটা না হলে চিকিৎসকরা আপনার পেটে খানিকটা ঘর্ষণের মধ্যমে নাড়ি বাইরে নিয়ে আসতে পারেন।

চিকিৎসক যদি না বলেন তাহলে প্রাকৃতিকভাবেই সন্তান জন্ম দেওয়া উচিত। তবে কখনো কখনো শিশুর অবস্থান, মায়ের শারীরিক অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে চিকিৎসকেরা প্রাকৃতিক প্রসব না করার পরামর্শ দিতে পারেন। প্রাকৃতিকভাবে প্রসব করলে নারীর শরীরে খুব একটা বেশি প্রভাব পড়ে না এবং খুব দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়।

সিজারিয়ান সেকশন (সি সেকশন)-

কোনো কারণে প্রাকৃতিক প্রসব না করা গেলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা গর্ভে খানিকটা কাটাছেঁড়া করে শিশুকে বের করে নিয়ে আসেন। আর এই প্রক্রিয়াটিকে সিজারিয়ান সেকশন বলা হয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা আপনার উপরে অল্প সময়ের জন্য অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করবেন। এছাড়া আরও কিছু ইঞ্জেকশন দেওয়ার মাধ্যমে সন্তানের জন্ম যেন ঠিকঠাকভাবে হয় সেটা নিশ্চিত করবেন তারা।

চিকিৎসকেরা সাধারণত সিজার করতে চান না। তবে যদি-

১। আপনার শিশুর মাথা বড় হয় ২। শিশু যদি ঠিক অবস্থানে না থাকে ৩। আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে ৪। আপনার প্রসবব্যথা যদি না হয় আর ইত্যাদি কারণে চিকিৎসকেরা সিজারিয়ান সেকশন করতে পারেন।

এক্ষেত্রে আপনি রক্তপাত, ভবিষ্যৎ গর্ভধারণে সমস্যাসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। তবে, চিকিৎসকেরা আপনার ও আপনার সন্তানের ভালোর জন্য সিজারিয়ান সেকশন করতে বললে সেটা করাই নিরাপদ। একবার এই পদ্ধতি গ্রহণ করলে পরবর্তীতে স্বাভাবিক প্রসব করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই এই ব্যাপারগুলো মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিন।

ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড ডেলিভারি-

এই প্রক্রিয়ায় আপনি ঠিক স্বাভাবিক পদ্ধতির মতোই সব রকমের অভিজ্ঞতা পাবেন। শিশু যখন বার্থ ক্যানেলে অবস্থান করবে তখনই ভ্যাকুয়াম অ্যাসিস্টেড ডেলিভারি ব্যবহার করা হয়। অনেকসময় প্রসবে বেশি সময় লাগার কারণে মায়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ফলে সার্ভিক্স শিশুর বাইরে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেও শিশুর বাইরে আসা কঠিন হয়ে পড়ে।

সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা বাইরে থেকে এই বাড়তি চাপ প্রয়োগ করেন শিশুকে বাইরে টেনেন আনার জন্য। এতে করে হয়তো কিছু আভ্যন্তরীণ রক্তপাত হতে পারে। তবে আর কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

ফরসেপস ডেলিভারি-

ফরসেপস হচ্ছে এক ধরণের ডাক্তারি যন্ত্র। এটি শিশুকে বার্থ ক্যানেল থেকে বের করে আনার জন্য ব্যবহার করা হয়। মা ক্লান্ত হয়ে পড়লে ভ্যাকুয়ামের পরিবর্তে অনেকসময় ফরসেপস ব্যবহার করা হয়। শিশুকে বের করে আনতে এবং অনেকসময় শিশুর মাথা ভুল অবস্থানে থাকলে মাথাকে ঠিকঠাক অবস্থানে আনার জন্যও এই প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়। এটি বিপদজনক কিছু নয়। মাঝেমধ্যে কোনো সমস্যা তৈরি করলেও সেটাও আপনার জন্য খুব একটা ভোগান্তির কারণ হবে না।

কী ভাবছেন? আপনার শিশুর ক্ষেত্রে কোন প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করবেন? ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনার শিশুর জন্য সবচাইতে সেরা প্রক্রিয়াটি বেছে নিন।

মূল লেখক- ডক্টর ক্রিস্টাল চীন, মাউন্ট এলিজাবেথ নভেনা হসপিটাল।

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড