সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
যকৃতে মেদ হওয়া বা ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না? ভাবছেন, এই সমস্যাটি শুধু মদ্যপান থেকেই হয়ে থাকে? উঁহু, একদম নয়। মোট দুই রকমের ফ্যাটি লিভার ডিজিজ রয়েছে। একটি অ্যালকোহলের মাধ্যমে হয়, আর অন্যটি নন-অ্যালকোহলিক। আপনারও এই সমস্যাটি নেই তো?
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ কী?
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ মূলত যকৃতের বাড়তি মেদের কারণে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মেদের কারণে যকৃত নিজের কাজগুলো করতে পারে না এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থগুলো নিঃসরণ করতে পারে না। ফলে একটু একটু করে শরীর খারাপ হতে শুরু করে। অনেকসময় মেদের কারণে যকৃত কাজ করা বন্ধও করে দেয়। এই সমস্যা থেকে দূরে থাকার জন্য এবং সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য আপনার ওষুধের সাথে প্রয়োজন নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করা।
ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে কী কী খাবার খাবেন?
আপনার যদি ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হয়েই থাকে, সেক্ষেত্রে নিচের খাবারগুলো গ্রহণ করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এছাড়া ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থেকে দূরে থাকতেও এই খাবারগুলো আপনাকে সাহায্য করবে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক খাবারগুলো সম্পর্কে।
১। সবুজ শাক-সব্জি
মা ছোটবেলায় শাক-সব্জি খেতে বললেও খেতে ইচ্ছে করতো না? তবে এবার আপনার এই খাবারগুলো খাওয়া শুরু করা উচিত। সবুজ খাবার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি যকৃতে মেদ কমাতেও সাহায্য করে। সব মিলিয়ে, আপনার ওজন যদি কম থাকে এবং অন্যান্য সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে আপনার যকৃতও সুস্থ থাকবে।
২। সামুদ্রিক মাছ
মজার ব্যাপার হলো, সামুদ্রিক মাছ যেমন- টুনা, সার্ডিন ইত্যাদিতে ফ্যাট থাকলেও সেটা ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে। যকৃতের ফ্যাটের সাথে সাথে শরীরের নানারকম প্রদাহও দূর করতে সাহায্য করে এই মাছের চর্বি। আপনি যদি মাংস না খেয়েই নিজের ত্বক ও শরীরের সুন্দর এবং সুস্থ রাখতে চান, তাহলে সামুদ্রিক মাছ আপনার জন্য যথাযথ।
৩। বাদাম
সামুদ্রিক মাছ যদি আপনার খেতে ভালো না লাগে সেক্ষেত্রে আপনি বাদাম খেতে পারেন। এটিও আপনাকে ঠিক সেই ওমেগা ৩ দেবে যেটি সামুদ্রিক মাছ দেয়। এতে করে আপনাকে মাছও খেতে হবে না। অন্যদিকে, আপনার শরীর যথেষ্ট পুষ্টি উপাদান পাবে। সারাদিন কিছুটা করে বাদাম গ্রহণ করুন।
৪। গ্রিন টি
গ্রিন টি শরীরের জন্য ভালো। এটি কোলেস্টোরল কমাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি ঘুমের জন্যও সহায়ক। আর ভালো ঘুম আমাদের শরীরের ওজন এমনিতেও কমতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে, দিনে অন্তত দুইবার গ্রিন টি পান করলে সেটি আপনাকে ইতিবাচক ফলাফলই দেবে।
৫। রসুন
আপনার যদি ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থাকে, তাহলে রসুন খাওয়া আপনার জন্য অসম্ভব ভালো ফল আনবে। তবে রসুন খেতে ভালো না লাগলে আপনি গার্লিক পাউডার সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন। এতে করে আপনার ওজন কমে যাবে।
৬। সূর্যমুখীর বীজ
ফ্যাটি লিভার ডিজিজের বিরুদ্ধে ভিটামিন ডি খুব কার্যকরী। আর এই ভিটামিন আপনি খুঁজে পাবেন সূর্যমুখীর বীজে। চেষ্টা করুন সালাদে সূর্যমুখীর বীজ ব্যবহার করতে।
৭। কফি
কফি নিয়ে অনেক নেতিবাচক ধারণা থাকলেও ফ্যাটি লিভার ডিজিজের বিরুদ্ধে কফি ভালো কাজ করে। এটি যকৃতের জন্য ভালো নয় এমন সব এনজাইমকে দূরে রাখে এবং শরীরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তবে, চেষ্টা করুন কফি পান করার সময় চিনিবিহীন কফি পান করতে।
৮। দুধ
প্রোটিন শরীরের টিস্যু ঠিক করতে সাহায্য করে। আর দুধে অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন থাকে। তাই চেষ্টা করুন দিনে এক গ্লাস দুধ পান করার। এতে করে আপনার যকৃত ভালো থাকবে।
এছাড়াও ফাস্ট ফুড, বাড়তি তেল ইত্যাদি খাবারগুলো থেকে দূরে থাকুন। এতে করে আপনার খানিকটা সময় খারাপ লাগবে বটে, তবে ভবিষ্যতে সুস্থ থাকতে চাইলে বা সুস্থ হয়ে উঠতে চাইলে এখন থেকেই গড়ে তোলা এই খাদ্যাভ্যাস আপনাকে অসম্ভব সাহায্য করবে।
মূল লেখক- লুইস ইয়াপ, ডায়েটিশিয়ান, মাউন্ট এলিজাবেথ নভেনা হসপিটাল।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড