নিশীতা মিতু
আজকাল বেশ ঝিমিয়ে থাকে সায়মা। বয়স মাত্র ৮, সমবয়সীরা যেখানে খেলাধুলো আর চঞ্চলতায় মুখর তখন এসব থেকে বেশ খানিকটা দূরেই থাকে সে। অল্প কথাতেই রেগে যাওয়া হয়ে গেছে নিত্য দিনের অভ্যাস। ডাক্তারের কাছে নেওয়ার পর জানা গেল টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সায়মা। বেশ অবাক হলো মা-বাবা। পরিবারের কারোরই এই রোগ নেই, তবে ওর কেন?
অনেকেই মনে করেন, ডায়াবেটিস কেবল বড়দের রোগ। কেউ কেউ আবার ভাবেন মা-বাবা বা পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকলে শিশুর ডায়াবেটিস হতে পারে, কারও না থাকলে সেই সম্ভাবনা কম। তবে সত্য হলো শিশুদেরও ডায়াবেটিস হতে পারে এবং তা পরিবারিক ইতিহাস ছাড়াই।
পরিবর্তিত আবহাওয়া, ফাস্টফুড নির্ভর জীবন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, শারীরিক চর্চা ও খেলাধুলার অভাবসহ নানা কারণে শিশুরা ডায়াবেটিস আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি সকালে নাস্তা না করার অভ্যাসও শিশুকে ঠেলে দিতে পারে এ রোগের দিকে।
গত কয়েক বছরে শিশুদের ডায়াবেটিস হওয়ার হার বেড়ে গেছে অনেকখানি। সাধারণত শিশুরা টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় অনেক মা-বাবাই বুঝতে পারেন না শিশুর ডায়াবেটিস হওয়ার ব্যাপারটি। ফলে নীরবেই বাড়তে থাকে এ রোগ।
কখন হয় ডায়াবেটিস?
বিশেষজ্ঞদের মতে যখন শিশুর প্যানক্রিয়াস ঠিক মতো ইনসুলিন তৈরি করতে ব্যর্থ হয়, তখনই টাইপ-১ ডায়াবেটিস দেখা দেয়। একে ইনসুলিন ডিপেনডেন্ট ডায়াবেটিস নামেও চেনেন অনেকেও। এ রোগে আক্রান্ত হলে শিশুকে বাইরে থেকে ইনসুলিন দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
কীভাবে বুঝবেন আপনার শিশুর ডায়াবেটিস হয়েছে কি না?
ডায়াবেটিসের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে। এগুলো শিশুর মধ্যে সক্রিয়ভাবে দেখা গেলে আপনি অনুমান করতে পারেন যে শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। চলুন লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া যাক-
শিশু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হলে কী করবেন?
একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। যেহেতু টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয় তাই অবিভাবকরা তা ভালো করে শিখে নিন। শিশু ইনজেকশন পুশ করার মতো বড় হলে তাকেও বুঝিয়ে দিন।
অনেক মা-বাবাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশুকে মিষ্টি খাবার একদমই খেতে দেন না। এটি কিন্তু ঠিক নয়। বরং ইনসুলিন গ্রহণ করলে যে কোনো সময় রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অনেকখানি কমে যেতে পারে, যা শিশুর শরীরের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর।
ইনসুলিন দেওয়ার পরপর শিশুকে গরম পানিতে গোসল করাবেন না। এতে ইনসুলিন খুব দ্রুত রক্তে মিশে গ্লুকোজের মাত্রা খুব কমিয়ে দেয়।
শিশুকে ডায়াবেটিস নিয়ে ভয় না দেখিয়ে, ভালোবেসে বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিন। তাকে অনুভব করান, এমন সমস্যা যে কারও হতে পারে। নিজেও সন্তানের ব্যাপারে থাকুন সচেতন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড