• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনা নিয়ে ভয় আর নয়, ডা. জাকিরের আশার বাণী

  নিশীতা মিতু

০৮ মার্চ ২০২০, ১২:৫২
ডা. জাকির
ছবি : সম্পাদিত

সময় যত যাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) যেন তত বেশি মহামারি আকার ধারণ করছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী, রবিবার (৮ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে নতুন করে ২২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ হাজার ৫৯৯ জনে। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। চীনের বাইরে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ইতালি ও ইরানের নাগরিকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি, করোনা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশি ডাক্তার জাকির হোসেইন সবুজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পুরো বিশ্ব যখন এই ভাইরাসকে নিয়ে হতাশায় ভুগছে, তখন তিনি করোনা ভাইরাসের কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন যা আশার আলো বলা যায়।

ভিডিওর শুরুতে ডা. জাকির বলেন, ‘আজ আমি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সম্পর্কে এমন কিছু আশা জাগানিয়া কথা বলব যা আপনার আশেপাশের মানুষ, চারপাশের মিডিয়া বা তথাকথিত বিশেষজ্ঞরা—কেউ বলছে না। তারা বলছে না কারণ, তারা চাইছে আপনি ভয় পান।’

প্রথমে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নিয়ে কথা বলেন তিনি। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে যে এই ভাইরাসে ৯০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এই বেড়ে যাওয়া সংখ্যার কথা জানানো হলেও এটা জানানো হচ্ছে না যে ৫০ হাজার ব্যক্তি এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।

দ্বিতীয় যে বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করেন তা হলো- করোনা ভাইরাস কতটা ভয়াবহ বা মারাত্মক। অর্থাৎ, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার কত? পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায়, ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্তে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশ, মার্সের ক্ষেত্রে তা ৩০ শতাংশ এবং সার্সের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ। অন্য দিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২ শতাংশেরও কম।

অনেকেই মনে করেন করোনা আক্রান্ত হওয়া মানে মৃত্যু নিশ্চিত। ডা. জাকির এ রোগ কতটা মারাত্মক সে সংক্রান্ত একটি ছবি দেখান। যেখানে দেখা যায়, আক্রান্ত ৮১ শতাংশের ক্ষেত্রেই এটি সাধারণ সর্দি-কাশির মতো যা ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই সেরে যায়। ১৫ শতাংশের ক্ষেত্রে এটি কিছুটা জটিল হতে পারে। আর মাত্র ৫ শতাংশের ক্ষেত্রে ভাইরাসটি গুরুতর প্রভাব ফেলে। এই ৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে বয়স্ক, অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত, হার্ট বা কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন কিংবা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে এমন ব্যক্তিরা। অর্থাৎ, করোনা হলেই জীবন শেষ, এমন ধারণা সঠিক নয়।

এরপর ডা. জাকির যে তথ্যটি দেন তা হলো, শিশুরা এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় না। এই কথাটি অনেকেই জানেন না। চায়নাতে ৮০ হাজারের মতো মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও সেখানে মাত্র ৪১৯ শিশু আক্রান্ত হয় এবং তাদের সবার ক্ষেত্রে এটি খুব সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের মতো। কিশোর বা তরুণদেরও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো ভয় নেই। এখন পর্যন্ত একজনও তরুণ বা কিশোর (৯ থেকে ৩৯ বছর) এতে আক্রান্ত হয়নি।

সর্বশেষ তিনি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন তা হলো- করোনা ভাইরাসের সঙ্গে তাপমাত্রার সম্পর্ক। যেসব দেশের তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রির ওপর সেখানে এ রোগ ছড়ায় না। এই বিষয়টি নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছেন। তাদের মতে, করোনা ভাইরাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় মারা যায়। তাহলে কীভাবে বলা যায় যে ২৩ বা ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় এটি আক্রমণ করবে না?

এর ব্যাখ্যা হিসেবে ডা. জাকির বলেন, ‘একটি বিষয় হলো জীবাণুটি মারতে ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস লাগবে। আরেকটি বিষয় হলো, জীবাণুটি ছড়ায় কত ডিগ্রির নিচে? ২৩ ডিগ্রির ওপরে জীবাণুটি ছড়াতে পারে না। কারণ, এই রোগটি মূলত ছড়ায় সর্দি, কাশির সময় মুখ থেকে যে লালা জাতীয় জিনিস বের হয় তার মাধ্যমে। এই লালা মাটিতে পড়ে, কিংবা কোনো জিনিসে পড়ে। সেটি আরেকজন যখন ধরে এবং তার হাতে লাগে। এরপর সেই হাত যখন মুখে যায় তখন জীবাণু ছড়ায়।

কিন্তু ২৩ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রায় এই লালা মাটিতে বা অন্য কোথাও পড়লে তাপমাত্রায় কারণে তা শুষে যায়। এবং ২৩-এর বেশি তাপমাত্রায় এটি কয়েক মিনিটের বেশি বাঁচে না। অর্থাৎ, এ বিষয়ে আমি একটা চ্যালেঞ্জ দিয়েই দিতে পারি যেসব দেশের তাপমাত্রা ২৩-এর ওপর চলে গেছে অর্থাৎ শীতকাল পার হয়ে বসন্ত বা গ্রীষ্ম চলে এসেছে সেখানে এটি অত গুরুতর কিছু না।’

এ সময় তিনি আরও জানান, অনেকে বলতে পারে ইরান তো গরমের দেশ। সেখানে কেন করোনা আক্রান্ত হচ্ছে? তাদের উদ্দেশে তিনি জানান, ইরানে এখনো শীত চলছে। সেখানকার তাপমাত্রা এখনো ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির নিচে।

সবার উদ্দেশে আশার বাণী ও চ্যালেঞ্জ দিয়ে ডা. জাকির বলেন, ‘মার্চ মাসটা যাক, দেখবেন এপ্রিল থেকে আর এই রোগ অতটা গুরুতর থাকবে না। আশার এই বাণী ও তথ্যগুলো চারপাশের মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড