• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এবার চিরতরে মুক্তি মিলবে অ্যালার্জি থেকে!

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২০ নভেম্বর ২০১৯, ১৫:০৩
অ্যালার্জি
ছবি : সংগৃহীত

বাদাম থেকে অ্যালার্জিতে ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। বাদামের এই অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকতে অনেক চিকিৎসকই ডিসেন্সিটাইজেশনের কথা বলে থাকেন। আর শুধু বাদাম কেন, এই একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় অন্যান্য অ্যালার্জির ক্ষেত্রেও।

এতে করে নির্দিষ্ট কোনো খাবারের প্রতি একজন মানুষের অ্যালার্জির প্রবণতা কমে যায়। তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন একটি ওষুধের কথা বলা হয়েছে যেটি অ্যালার্জির বিরুদ্ধে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে সম্প্রতি ১৫ জনের ওপরে একটি গবেষণা চালানো হয়। এর ফলাফল থেকেই এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকেরা। সত্যিই অ্যালার্জির বিরুদ্ধে এই প্রতিষেধক কি কার্যকর? চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত-

সাধারণত, অ্যালার্জির ভুক্তভোগীরা নির্দিষ্ট কিছু খাবার খেতে পারেন না। কিছু ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকতে হয় সবসময়। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা খাবার বাদ দেওয়ার পাশাপাশি খাবারের সাথে শরীরকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য ডিসেন্সিটাইজেশন পদ্ধতিও ব্যবহার করেন। কিন্তু এতসব ঝামেলা ছাড়াই এখন একটি প্রতিষেধকের মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করা যায় বলে ভাবছেন গবেষকেরা।

গবেষণায় পাওয়া তথ্যানুসারে, এই প্রতিষেধক গ্রহণ করেছেন যারা তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ ব্যক্তি কোনো সমস্যা ছাড়াই বাদাম খেতে পারছিলেন। এমনকি, প্রতিষেধক গ্রহণের ৪৫ দিন পরেও এর কার্যকারিতা বজায় ছিল।

অন্য দিকে, যারা প্রতিষেধক নেননি তারা অন্যান্য অ্যালার্জির ওষুধ সেবন করেও কমবেশি অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তাই গবেষকদের মতে, এই উপায়ে খুব সহজেই অ্যালার্জির সমস্যাকে দূর করে দেওয়া সম্ভব হবে।

তবে হ্যাঁ, এই পদ্ধতির ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন থেকেই যায়। আর সেটি হলো এর অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা। উক্ত গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ছিল কম। তাই ছোট আকারে করা এই গবেষণাটির সাফল্য পুরোপুরি বুঝতে হলে আরও বড় আকারে পরীক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

অ্যালার্জির নতুন সমাধান-

এখন পর্যন্ত খাবারের অ্যালার্জিকে থামানোর জন্য কোনো পাকাপাকি বন্দোবস্ত করা হয়নি। গবেষকদের কথা সত্যি হলে এবং এই পরীক্ষা সফল হলে এটিই হতে পারে সেই একমাত্র সমাধান। ডিসেন্সিটাইজেশনের চাইতে অনেক বেশি সহনীয় পদ্ধতি এটি।

ডিসেন্সিটাইজেশনের ক্ষেত্রে একজন অ্যালার্জির রোগীকে সে যে খাবারে অ্যালার্জিক সেটি একটু একটু করে খাওয়ানো হয়। ৬ থেকে ১২ মাসের লম্বা এই প্রক্রিয়ায় ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণের ফলে একটা সময় শরীর খাবারটির প্রতি সহনীয়তা বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে আমাদের শরীরকে বেশ কষ্টকর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং অ্যালার্জির ব্যাপারটি পুরোপুরি যায় না। এমনকি এই সময়ে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন ঘটে বড় কোনো ঝামেলা হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।

নতুন প্রতিষেধকের ইতিবাচক দিকটিই হলো এই যে, এতে করে মানুষকে অ্যালার্জি হয় এমন খাবার খেতে হয় না এবং কোনো সমস্যা ও অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা ছাড়াই তারা যেকোনো খাবার খেতে পারে। এক্ষেত্রে দীর্ঘ সময়েরও দরকার পড়ে না।

অ্যালার্জিকে তাড়ানোর এই পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানতে চান? এর নাম এটোকিমাব। শরীরের ভেতরে অ্যালার্জি তৈরি করে এমন উপাদান ইন্টারলিউকিন-৩৩ এর বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করে অ্যালার্জির সমস্যা থেকে মানবদেহকে রক্ষা করে এই উপাদানটি। মূলত, প্রাথমিকভাবে বাদামের জন্য তৈরি করা হলেও এই ওষুধটি নানাবিধ অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের বিরুদ্ধেও ভালো কাজ করে।

আরও পড়ুন- কিডনির সুরক্ষায় আপনার করণীয়

এছাড়া এটি আমাদের শরীরে ইমিউনোগ্লোবিন উৎপন্ন করে, যেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। মুখ ও জিভে নানাবিধ সমস্যাকে দূর করতে এটি বেশ সাহায্যকারী ভূমিকা পালন করে। ইতোমধ্যেই অনেক হাসপাতালে অ্যালার্জির চিকিৎসা বিদ্যমান থাকলেও এখনো অব্দি উপরে বর্ণিত চিকিৎসা পদ্ধতিটি পাকাপাকিভাবে ব্যবহার করা হয়নি।

তবে হ্যাঁ, কোনো খাবার খাওয়ার পর অ্যালার্জি হলে সেটার বিরুদ্ধে কাজ করার চাইতে আগে থেকেই যেন অ্যালার্জি না হয় খাবার থেকে সেই ব্যবস্থা করাটা বেশি কার্যকরী বলে মনে করেন সবাই।

তাই, আশা করাই যায় যে, খুব দ্রুতই উপরিউক্ত সমাধানটি নিয়ে বড় আকারে গবেষণা হবে এবং সবার হাতের কাছেই পৌঁছে যাবে অ্যালার্জির প্রতিষেধক।

সূত্র- হেলথলাইন

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড