মোঃ সাইফুল ইসলাম
সুদূর অতীতে ব্রিটেনের উত্তরাঞ্চলীয় দ্বীপের আদিম অধিবাসীরা সব সময়েই শুকনো ভূমিতে বাস করত না। স্কটল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও ওয়েলসে হাজার হাজার বছর পূর্বের রহস্যজনক কৃত্রিম দ্বীপের দেখা মেলে। যেগুলোকে বলা হয় ক্রানগ। এই কৃত্রিম দ্বীপগুলো প্রাগৈতিহাসিকযুগে নদী, হ্রদ ও সাগরের প্রবেশমুখের শীতল পানিতে তৈরি করা হয়েছিল।
কৃত্রিম দ্বীপগুলো ঠিক কখন থেকে তৈরি করা হয়েছিল সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ধারণা করেন সেগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ অব্দ থেকে তৈরি করা হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় এই কৃত্রিম দ্বীপের তৈরিকরণের সময় আরও প্রাচীন বলে জানা যায়। রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে সময় বের করে জানা যায়, কৃত্রিম দ্বীপগুলো ৩৬৪০-৩৩৬০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে তৈরি করা হয়েছিল। অর্থাৎ এগুলো আজ থেকে ৫ হাজার ৫০০ বছর পূর্বে তৈরি করা হয়েছিল।
যদি তাই হয়, তবে এগুলোর বয়স ৫ হাজার বছরের পুরনো রহস্যময় স্টোনহেঞ্জের চেয়েও অধিক বলা যায়। রহস্যময় স্টোনহেঞ্জ ব্রিটেনে অবস্থিত। যার অনেক বিষয় আজও বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যই রয়ে গেছে।
কৃত্রিম দ্বীপগুলো কৃষকদের দ্বারা তৈরি হয়েছিল। সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক ফ্রেশার স্টার্টের মতে, অনেক পাথর জমিয়ে কৃষকরা কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছিল।
২০১২ সালে রাজ ডুবুরি ক্রিস মারে নব্যপ্রস্তরযুগের পূর্বের অথবা মাঝামাঝি দিকের বেশকিছু পাত্রের সন্ধান পান। ক্রিস মারে ও তার সহযোগীরা সে সময় বেশ কিছু কৃত্রিম দ্বীপেরও সন্ধান পান। এরা ২০০টি নব্যপ্রস্তরযুগের সিরামিকের পাত্র সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যা দ্বীপের অধিবাসীদের রহস্যজনক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেয়।
জল-স্থলে প্রাপ্ত উপকরণ, মাটি খনন ও রেডিওকার্বনের পরীক্ষায় পরিষ্কারভাবে জানা যায় দ্বীপগুলো মানুষই তৈরি করেছিল। প্রাচীন নির্মাতারা নুড়ি পাথর ফেলে তৈরি করেছিল দ্বীপগুলো। ধারণা করা হয় দ্বীপগুলোয় নৌকা অথবা কাঠের সেতু দিয়ে যাওয়া হতো। তবে দ্বীপের আশেপাশে কাঠের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
কৃত্রিম দ্বীপগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হতো তা এক রহস্য। ধারণা করা হয়, আনন্দভোজনের জন্য কিংবা মৃত ব্যক্তির জন্য ধর্মীয় রীতি পালনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়াও কেউ কেউ মনে করেন স্বাভাবিক জীবনযাপনের রীতি থেকে বেরিয়ে ক্ষণিক সময় কিছুটা প্রশান্তির জন্যও দ্বীপগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল।
রহস্যজনক দ্বীপগুলো প্রশান্তির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃহ হয়েছিল কি না তা হয়তো রহস্য। তবে পর্যটকরা সেখানে গেলে প্রশান্তির ছোঁয়া পাবেন এ কথা নিশ্চিন্তে বলা যায়।
তথ্যসূত্র : সায়েন্স অ্যালার্ট।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড