নাবিলা বুশরা
মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের মাঝেই কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে। এদের মাঝেই আবার কিছু মানুষ থাকে যারা অন্যের থেকে একদম আলাদা। চোখ বা চুলের রঙ, কোঁকড়ানো চুল অথবা ঘুম কম হয় এমন মানুষ দেখলে কিন্তু আমরা একটু ভিন্ন চোখেই তাকাই।
অন্যের মাঝে আলাদাভাবে চেনা যায় সেরকম কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেই আজ জানাতে চাই আপনাদের। মিলিয়ে দেখুন তো এগুলোর মাঝে কোনো বৈশিষ্ট্য আপনাকে আলাদা করে কিনা।
রঙ দেখার এক অসাধারণ ক্ষমতা
বেশিরভাগ মানুষের মৌলিক রঙগুলোর পাশাপাশি সেগুলোর প্রায় দশ লক্ষ ধরণ দেখা সম্ভব। যেখানে বর্ণান্ধ মানুষের রয়েছে ১ লক্ষ রঙ এর ভিন্নতা দেখার ক্ষমতা। অপরদিকে, কিছু মানুষের মাঝে টেট্রাক্রোমেসি (tetrachromacy)নামক এক ধরণের বৈশিষ্ট্য আছে যার কারণে সে ৯ কোটি ৯৯ লক্ষ রঙের ধরণ দেখতে পায়! এই ধরণের মানুষদের রয়েছে রঙ দেখার এক অসাধারণ ক্ষমতা।
সোনালী চুল
বেশিরভাগ শিশু জন্মের সময় স্বর্ণকেশী অর্থাৎ সোনালী চুল নিয়ে জন্ম নিলেও বড় হতে হতে তাদের চুল স্বাভাবিক কালো রঙের হয়ে যায়। কিন্তু এদের মাঝে মাত্র ২-১৬% মানুষ রয়েছেন যাদের চুল বড় হয়ে গেলেও সোনালীই রয়ে যায়। অন্যের মাঝে নিজেকে আলাদা করার জন্য তারা ভাগ্যবান বটে!
লাল চুল
প্রাকৃতিকভাবে লাল চুলের অধিকারী মানুষের সংখ্যা সমগ্র বিশ্বে মাত্র ২% মানুষের! এই ধরণের মানুষগুলো অন্যের থেকে একদম আলাদা হবেন এটা আর এমন কি!
লাল চুলের অধিকারী মানুষের সংখ্যা সমগ্র বিশ্বে মাত্র ২% মানুষের (ছবি: ব্রেইন বেরিস)
নীল চোখ
বিশ্বে মোট জনসংখ্যার ৮% মানুষ নীল চোখের অধিকারী। আপনি বা আমি যতটা ভাবি এই জিনগত পরিবর্তন আসলে তার চেয়ে অনেক বেশি। ধারণা করা হয় প্রথম নীল চোখের মানুষ দেখা গিয়েছিল ৬০০০-১০০০০ বছর আগে। এরপর বিবর্তনের ধারায় এটি বর্তমানে কিছু মানুষের মাঝে দেখা যায়।
বিশ্বে মোট জনসংখ্যার ৮% মানুষ নীল চোখের অধিকারী (ছবি: গিজমোডো)
কম ঘুমায় এমন ব্যক্তি
শুধুমাত্র রাত জেগে ভিডিও গেইম খেলা হয় বলে রাতে ঘুম হয় না এমন কিন্তু সব মানুষের ক্ষেত্রে নয়। কিছু সংখ্যক মানুষ রয়েছে যাদের ক্ষেত্রে কম ঘুমানোর একটি জিন কাজ করে। এই জিনটি বিএইচএলএইচই৪১ (BHLHE41) নামে পরিচিত।
অতিরিক্ত হাঁচি
উজ্জ্বল আলোর মাঝে গেলে অনেকের অতিরিক্ত হাঁচি হতে থাকে। কেন এমনটি হয় সেটি নিয়ে এখনও সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে জানা গেছে বিশ্বের ১৮-৩৫% মানুষ এই সমস্যার ভুক্তভোগী।
উজ্জ্বল আলোর মাঝে গেলে অনেকের অতিরিক্ত হাঁচি হতে থাকে (ছবি: ব্রেইন বেরিস)
যুগল আইল্যাশ
ভিন্ন ধরণের এই শারীরিক বৈশিষ্ট্যটি পরিচিত ডিসটিকিয়াসিস নামে। মাত্র ৫% এর কম মানুষের এমনটি রয়েছে! যুগল আইল্যাশের কারণে খুব বেশি সমস্যা হয়েছে এমন কোনো তথ্য অবশ্য তেমন পাওয়া যায়নি।
মাত্র ৫% এর কম মানুষের যুদল আইল্যাশ রয়েছে (ছবি: ব্রেইন বেরিস)
ভিন্ন রঙের দুই চোখ
অতিরিক্ত বেশি অথবা কম মেলানিনের কারণে হেটারোক্রমিয়া আইরিডিস (heterochromia iridis) নামক একটি অবস্থার সৃষ্টি হয়। আর যার কারণে দুই চোখের রঙ হয় দুই ধরণের। ১০০০ এর মাঝে মাত্র ৬ জন এমন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মাতে পারে।
১০০০ এর মাঝে মাত্র ৬ জন দুই চোখে দুই রঙ নিয়ে জন্মাতে পারে (ছবি: ব্রেইন বেরিস)
টোল পড়া চিবুক
টোল পড়া চিবুকটাও এসেছে পরিবর্তিত হয়ে। ইউরোপিয়ান আর মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের মাঝে এই বৈশিষ্ট্য অনেক বেশি।
ইউরোপিয়ান আর মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের মাঝে টোল পড়া চিবুকের মানুষের সংখ্যা বেশি (ছবি: ব্রেইন বেরিস)
কোঁকড়ানো চুল
মজার বিষয় হচ্ছে স্ট্রেইট চুলের অধিকারী ব্যক্তিরা প্রায়ই ভাবেন তাদের চুল যদি কোঁকড়ানো হত তাহলে কী ভালোই না হত। অপরদিকে প্রাকৃতিকভাবে কোঁকড়ানো চুলের অধিকারীদের চাওয়াটা ঠিক উল্টো! কিন্তু এই কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী মানুষগুলো নিজেদের নিয়ে গর্ব করতেই পারেন কারণ বিশ্বে মাত্র ১১% মানুষ এমন বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়!
তথ্যসূত্র: ব্রেইন বেরিস
ওডি/এএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড