হোসনে আরা হ্যাপি
একটি শহরের স্থাপত্য তার চারিপাশের সামগ্রিক ভূ-প্রকৃতি ও পরিসরকে সুবিন্যস্ত করে গড়ে ওঠে, কখনো ক্ষুদ্র পরিসরে, কখনো বৃহৎ পরিসরে (ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে)। আমাদের স্মৃতি বিজড়িত ৪০০ বছরের ঢাকা শহরকে দেখলে বুঝতে পারি, কালে ভদ্রে দশকে দশকে এসেছে নানা বিবর্তন।
বেশি দিন আগের কথাও নয়, ৬০ বছর আগের ঢাকার চিত্রের কথা বলল এখন গল্পের মতো শোনাবে। সময়ের বদলের সাথে স্থাপত্যের রূপ বদলে গেছে। তাই, নগর জীবনে মানুয়ের সাথে স্থাপত্যের সম্পর্ক নিবিড় বললে অত্যুক্তি হবে না।
১৯৯৯ সালে (বাংলাদেশ ইউন্সটিটিউড অব প্লানার্স) এক জরিপে দেখা যায় যে, ঢাকা শহরে (২০-২৫)% গাছ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু (১০-১৫)% গাছ আছে।
পরের দশ বছরের জরিপে দেখা গেছে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজী খালেদ আশরাফ তার ডিজাইনং এ ঢাকা জীবনে ল্যান্ডস্কেপ এর রূপ বদলে গেছে।
এখন শহরের ইকো সিস্টেমকে রক্ষা করার জন্য ল্যান্ডস্কেপ চর্চা অনেক বেশী অগ্রসর। ঢাকা শহরে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বা ইকো সিস্টেম বজায় রাখার তুলনায় ল্যান্ডস্কেপ ইনস্টলেশন অনেক বেশি উন্নত, যা এখন একটি যান্ত্রিক ও দূষিত শহর।
একটি বাগান হিসেবে শহরের ধারণাটি একটি কল্পনা নয় বরং একটি শহরে আদর্শ যা নাগরিক কল্যাণ এবং পরিবেশগত স্থায়িত্বকে একত্রিত করে। মাস্টার আর্কিটেক্ট মাজহারুল ইসলাম পুরো দেশকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব হিসেবে কল্পনা করেছিলেন।
কিন্তু তারপরও বাগানের মধ্যে, তিনি ঢাকাকে শুধু বৃহৎ উদ্যানের সমাহার নয়, শহরটিকেই একটি উদ্যান হিসেবে দেখেছিলেন। বাংলাদেশের শহরে জীবনে ল্যান্ডস্কেপ অনুশীলন শুরু হয়েছিল স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্থাপত্যের জনক মাজহারুল ইসলামের শিল্পকর্ম দিয়ে। স্থাপত্যের নতুন ভাষা নতুন রূপ নতুন জ্যামিতিক নিদর্শন এবং তার চারুকলা অনুষদে প্রকৃতিকে একত্রিত করেছে। সময় ল্যান্ডস্কেপিং শিল্পের জয়নুল আবাদেনিনের তত্ত্বাবধানে, নান্দনিক দৃষ্টি সমগ্র প্রাঙ্গণটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। একজন স্থাপিত, শিল্পী এবং একজন ভাস্কর্যশিল্পীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি ল্যান্ডস্কেপ স্থাপত্য সম্পূর্ণরূপে পুনর্বিন্যাস বা সাজানো হয়েছে।
আমরা যদি বিগত দুই দশকের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব আমাদের দেশের স্থপতির তাদের মেধা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বিশ্ববাজারে স্থাপত্যকে আলাদা জায়গায় নিয়ে গেছেন। ঘরে ঘরে এসেছে আগা খান পুরস্কার। ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার হল গাছের গুড়ি বা গাছ।
ছোট আকারের আবাসিক ভবন, রেস্তোরাঁ এবং বাণিজ্যিক ভবনে। ঢাকা শহরের অভিজাত এলাকায় যেমন গুলশান, বনানী এবং ধানমন্ডির ল্যান্ডস্কেপিং সবুজ সমারোহে ইট-পাথর, কংক্রিট দিয়ে সবুজ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। চীনে সবুজ বেড়া ব্যবহার হরা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, মেক্সিকো ইত্যাদি সময়ের জন্য এই সবুজ বন্ধনীগুললি নিচতলায় বা ছাদের উপরে দেখা যায়। এটি কেবল সবুজের আভাই দেয় না, এটি একটি প্রকল্পের নকশাকেও একটি ভিন্ন মাত্রা দেয়।
অন্য দিকে ছাদে একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করে একটি বহুতল ভবন, মেইন, বন্ধন তৈরি করা হচ্ছে গাছ, জল এবং মাটির সংযোগের মাধ্যমে। একই পরিবেশের একটি গ্রামীণ পটভূমি তৈরি, যেমন ইচ্চভূমি, পুকুর, বেড়া, বিভিন্ন ধরনের গাছ।
গ্রিনারি রুফ টপ রেস্তোরাঁ বৃহৎ পরিসরে বা বৃহৎ আকারের উদ্যোগে ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচারের পরিধি আগের তুলনায় দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দশকে এই পরিবর্তন লক্ষণীয় হয়েছে। পরিবেশের উপর উপকরণ করে বিভিন্ন মিশ্রণের মাধ্যমে ল্যান্ডস্কেপিং করা হচ্ছে। বর্তমানে, হার্ডস্কেপ এবং ওয়াটারস্কেপ শহরের উন্মুক্ত স্থানে ব্যবহার হরা হচ্ছে।
হাতিরঝিলের কথা বলি, ঢাকা শহরের যানজট কমাতে, পূর্ব ও পশ্চিম ঢাকাকে এক করতে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সারি সারি সাজানো হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। পানির সাথে ইন্সটলেশনের কাজ হয়েছে। সাধিত হয়েছে হাঁচা ও দৌড়ানোর জন্য বিভিন্ন লেন তৈরি করা হয়েছে। রাতের হাতিরঝিল লেকর পানিতে দিনের চেয়ে অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় এবং সবুজের বন্ধ্যত্ব।
গুলশান সোসাইটির উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছিল। না, এই পার্কের আরও উন্নয়ন করা হয়েছে। এটি ২০০৭ সালের রাজউকের দায়িত্ব নেয়। শেষ পর্যন্ত এটি ২০১৬ সালের উদ্বোধন করা হয়েছিল। যদিও দেরি হয়ে গিয়েছিল, এই পার্কটি এবং সুন্দর গ্রাম বাংলার অভ্যন্তরীণ চেহারা দিয়ে তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন গাছের শ্রেণিবিন্যাস, পুকুর এবং জলের হায়াথিংসের দৃশ্য, কাছের বিড়াল এবং গাছ, পাখির কিচিরমিচির সত্যিই চোখ ধাঁধানো। এখানে হাটার জন্য ৩০০ ফুট জায়গা রয়েছে, আলাদা। বিভিন্ন বয়সের জন্য স্থান। এখানে রয়েছে এমপি থিয়েটার, ক্যাফেটেরিয়া, ইনডোর এবং আউটডোর স্কেট, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ এবং সামাজিক আরাম। প্রাকৃতিক দৃশ্য স্পর্শ করার পাশাপাশি, সময় এবং বয়স বিবেচনা করে বর্তমান সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্য দিকে নবনির্মিত গুলশান লেক পার্ক বা জাস্টিস শাহবুদ্দিন পার্ক অনেক কার্যকরী বিনোদন। ১৬ একর এলাকা জুরে সবুজ ক্যানোপিট ১৮০০ প্রজাতির ফল ও ঔষধ গাছ, লতানো এবং ফুলের গাছের বিস্তৃত। সুগন্ধির নাম জানি না।
গুলশান টাস্ক পার্কের দাম ১৬ কোটি টাকা। মিউজিক্যাল ফাউন্টেনসহ একটি পাঠাগার, বঙ্গবন্ধু কর্নার, তিনি পুকুরের ঘাট দশকসহ একটি হাঁটার পথ নির্মাণ করা হয়েছে। লাইব্রেরি, সাইকেল লেন, বাস্কেপবল মাঠ। ব্যাডমিন্টন কোচ, জিনিয়াম, এবং লেকের ধারে খোলা মঞ্চ। সজ্জিত ল্যান্ডস্কেপ এবং সুন্দর ছোঁয়া শহরের বাইরে একটি ভিন্ন চিত্রকে নতুন প্রেরণা দেয় বলে মনে হচ্ছে।
একটি শহর নিছক ভবন, রাস্তা এবং স্থান নয়; এটি সামাজিক কর্মের একটি থিয়েটার আমি শহরটিকে আমাদের কর্ম অনুশীলন, স্বপ্ন এবং কল্পনার একটি অস্তিত্বের থিয়েটার হিসাবে দেখি। নান্দনিক এবং পরিবেশগত সম্ভাবনার সাথে ডিজাইন করা এবং বসবাস করা শহরের আমাদের সংজ্ঞা সংশোধন করতে হবে, এবং পরিকল্পনাবিদদের শিখতে হবে কিভাবে শহরের অস্তিত্বগত ভাগফলের সাথে যুক্ত হতে হয়। ঢাকার প্রাথমিক শহরে চ্যালেঞ্জ হল কল্পনাপ্রবণতা, অনুপ্রেরণাদায়ক সংকেত থাকা স্বত্বেও উপযুক্ত রূপের কথা ভাবতে না পারা।
এক সময় ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে প্রশস্ত সবুজ স্থান রাজকীয় গাছ, ক্রসক্রসিং খাল সভ্য নদীতীর এবং নৌকার আয়োজন করেছিল। ঢাকা আসলে বাগানের শহর হতে পারে এবং জলের ধারে এমন একটি জায়গা যা সবসময় ছিল। আপনি যদি ঢাকা শহরের ইচ্চভূমি ব্যবহার করে এই উঁচু দালানগুলো করতে পারেন, আর্কিটেক্ট মাজাহারুল ইসলাম পরামর্শ দিয়েছিলেন। এখনও আপনি এখানে জনসংখ্যাকে বর্তমান সংখ্যার তিনগুণ রাখতে পারেন এবং একই সময়ে নিম্নভূমিগুলোকে নিম্নভূমি হিসাবে রাখতে পারেন জলাশয় রাখুন, এবং বাগান তৈরি করুন।
লেখক : ডিজাইন ও আইডিয়া আর্কিটেক্টস কনসালটেন্সি ফার্ম, প্রধান স্থপতি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড