• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আমাদের শৈশব রাঙানো টম অ্যান্ড জেরির বয়স এখন ৮০

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:১৯
টম অ্যান্ড জেরী
১৯৫০ এর মাঝের দিকে এসে টম এন্ড জেরী প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় (ছবি- ইন্টারনেট)

বিড়াল তো ইঁদুর ধরবেই। আর ইঁদুরও বিড়ালকে ভয় পাবে। এটাই স্বাভাবিক, তাই না? বিড়াল টম সেটা মোটেই করে উঠতে পারে না। না জেরী তাকে ভয় পায়, না টম জেরীকে ধরতে পারে। উল্টো টমকেই উচিত শিক্ষা দিয়ে ফাঁদে রাখা খাবার খেয়ে ভরপেট দিন পার করে ইঁদুর জেরী।

একই বাসায় থাকে তারা। বিড়াল আর ইঁদুরের একে অন্যের পেছনে ছোটাছুটি করার গল্পটাও একরকম। কিন্তু এই ফেব্রুয়ারি মাসে টানা ৮০ বছর ধরে দর্শকদের নিজেদের এই গতানুগতিক, অথচ মজাদার পাকড়াও কররা গল্প দিয়ে আকৃষ্ট করে রেখেছে টম আর জেরী।

শুরুটা হয়েছিল সেই ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তবে এমন বিখ্যাত দুটো চরিত্র তৈরি করা কিন্তু মোটেও সহজ হয়নি নির্মাতা বিল হ্যানা ও জো বারবারার পক্ষে। সেসময় মিকি মাউস আর পর্কি পিগের মতো কার্টুন চরিত্র জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তাদেরকে টেক্কা দেওয়ার চাপ ছিল বিল আর জোয়ের মাথায়। তবে কোন বুদ্ধিই কাজে দিচ্ছিল না।

শেষমেশ হ্যানা নিজের ভালোলাগার গল্প নিয়ে এগোতে চাইল। এমন একটা বিড়াল বানাতে চাইল যেটা কিনা ইঁদুর ধরতে ব্যস্ত। যদিও এর আগে এমন অনেক কার্টুন তৈরি হয়েছিলো। তবে প্রথমেই তারা 'পুস ইন দ্য বুটস' নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, ১৯৪০ সালে। এই শর্ট অ্যানিমেশন ফিল্ম তাদের অস্কার মনোনয়ন এনে দেয়। তবে নির্মাতারা কোনোভাবেই তাও সবার নজরে আসতে পারছিলেন না।

নির্মাতারা তখন এই একই ইঁদুর-বিড়াল নিয়ে আবার কাজ করবেন কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধায় ভুগছিলেন। সেসময় তাদের কাছে একটা চিঠি আসে। চিঠিতে এমন ইঁদুর আর বিড়ালের কার্টুন আবার বানানোর জন্য অনুরোধ করেন এক দর্শক। ব্যস! যেই ভাবা সেই কাজ।

আগে যে ইঁদুর আর বিড়াল জ্যাসপার ও জিঙ্কস নামে পরিচিত ছিল, তাদের নাম হয়ে যায় টম ও জেরী। তৈরি হয় কার্টুন।

কার্টুন চরিত্রগুলো কথা বলতে পারবে না এমন কিছু আগে থেকে কেউ চিন্তা করেনি। তবে হ্যাঁ, চার্লি চ্যাপলিনকে দেখে সবাই বুঝতে পেরেছিলেন যে, কথা না বলেও মানুষকে হাসানো যায়। কার্টুনের সুর করেন স্কট ব্র্যাডলি। আর টমের চিৎকারটা দেন হ্যানা নিজেই।

তবে এতকিছুর পরেও ১৯৫০ এর মাঝের দিকে এসে টম এন্ড জেরী প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। টেলিভিশনের জন্য নতুন করে খরচ না করে পুরনো কার্টুনগুলোই আবার প্রচার করতে শুরু করে এমজিএম স্টুডিও। অবসর নেন স্টুডিওর প্রযোজক ফ্রেড কুইম্বিও। ফলে ১৯৫৭ সালে হ্যানা ও বারবারা নিজেদের প্রোডাকশন শুরু করেন।

১৯৬১ সালে এমজিএম আবার নতুন করে টম এন্ড জেরী তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে খরচ কমিয়ে প্রাগে নতুন অ্যানিমেটর জিনি ডিচের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরো ব্যাপারটাকে। আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া, কম খরচে তৈরি এই কার্টুনের অবস্থা বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। তিনি মোট ১৩টি কার্টুন তৈরি করেন। অবশ্য অনেক মারামারি থাকায় এই কার্টুনকে মোটেও পছন্দ করতেন না ডিচ।

আরও পড়ুন : এমনও আইন হয়!

এরপর কার্টুন আবার হাতবদল হয়ে চলে যায় চাক জোনাসের কাছে। তিনি মোট ৩৪টি এপিসোড তৈরি করে টম এন্ড জেরীর। এসময় কার্টুনে শুধু পরিবর্তনই আসেনি, একই সঙ্গে কমে আসে জনপ্রিয়তাও। পরে অবশ্য হ্যানা আর বারবারা আবার ফিরে আসেন টম এন্ড জেরীতে। কার্টুনের পাশাপাশি সিনেমাও বানান তারা। বর্তমানে এই কার্টুন তৈরি করছে ওয়ার্নার ব্রোস স্টুডিও।

খুব ছোটবেলায় যে টম এন্ড জেরী দেখে বড় হয়েছেন, আজও টেলিভিশনের পর্দায় হুট করে কার্টুন চলতে দেখলে নিশ্চয় আটকে যান। অনেকটা সময় তাকিয়ে থাকেন। ভালো লাগে দেখতে। আসলেও তাই। মানুষের বয়স হয়। এমনকি মানুষের তৈরি চলচ্চিত্রগুলোও পুরনো হয়ে যায়। কিন্তু অ্যানিমেশন আর কার্টুন চরিত্রগুলো যেন সবসময় হাসায় আমাদের।

সেই একইভাবে প্রভাবিত করে আর আনন্দ দেয়। এমনই এক ছোটবেলার স্মৃতি কার্টুন টম এন্ড জেরী আজ ৮০ বছরে পা রাখল।

সূত্র : বিবিসি

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড