• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তিতুমীরে মুগ্ধতার শীত

  মামুন সোহাগ

৩০ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:৩৭
সরকারি তিতুমীর কলেজ
ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে নবীনদের পদচারণা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

আমি যদি মরে যেতে পারতুম এই শীতে, গাছ যেমন মরে যায়, সাপ যেমন মরে থাকে সমস্ত দীর্ঘ শীত ভ’রে।

কবি বুদ্ধদেব বসুর কল্পনার মতো শক্তপোক্ত শীত না এলেও প্রকৃতির পুরোটা জুড়ে হাড় কাঁপানো শীত ছিল। রাত্রিতে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে জুবুথুবু হয় নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। একইসঙ্গে শীতের সকালে খুব ভোরে গায়ে কুয়াশা মেখে একা হাটার মধ্যেও অন্যরকম এক আনন্দ রয়েছে।

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রাজধানীতে শীতের তীব্রতা একটু পরিলক্ষিত হয়েছে। আর এদিক থেকে বলতে গেলে সরকারি তিতুমীর কলেজের শীত মানেই জাঁকালো। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি পায়ে শীতের শেষ সময়ে ক্যাম্পাস আসছে নবীনরা।

পরীক্ষা, শীতকালীন ছুটি আর নানা ছুতোয় কলেজের বাতাসে জেঁকে বসেছিলো শূণ্যতা। তবে জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে নবীনদের আগমন বেশ জমজমাট করে তুলেছে।

সরেজমিনে কলেজের বিভিন্ন আড্ডার গোল অংশে মুখরিত পরিবেশ দেখা গেছে। সদ্য ভর্তি হওয়া নাজমুন নাহার নামে পদার্থবিজ্ঞানে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এ বছরের শীত রাজশাহীতে কাটিয়েছি। ওখানে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। ছোট করে বলতে বললে হাড় কাঁপানো শীত। ঢাকায় তেমন শীত পাইনি তবে কলেজে অনেক সকালে যখন আসি তখন কিছুটা শীত লাগে।’

শীতের সকালে মুখর ক্যাম্পাস (ছবি : দৈনিক অধিকার)

তিতুমীর কলেজ নাট্যদলের সভাপতি বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে শীতের যে বর্ণিল রূপ তাতে একটুও ছেদ পড়েনি। গত বছরেও শীতকে খুব বেশি অনুভব করেছি। কলেজের সামনের সড়কটা খুব ব্যস্ত। তবে প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই নীরব নিথর প্রাণ খুঁজে পাই আমি। যা শীত তার কুয়াশা মাখিয়ে আগলে রেখেছে। আর আমি তা সূক্ষ্ম চোখে দেখি, অনুভব করি।’

কলেজে ঢুকতেই শেখ রাসেল পুষ্পকানন। সকালের শিশির ভেজা সাদা-হলুদ আর বেগুনি রঙে একাকার হয়ে যায় বাগানের গাছগাছালি।

পুষ্পকাননের সামনে দাড়িয়ে থাকা রিতু নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, তিতুমীর কলেজের মাঠে দাড়িয়ে কুয়াশা মেখেছেন কখনো? আমি রোজ ভোরে এসে দাড়িয়ে থাকি। কলা ভবন থেকে বিজ্ঞান ভবন, বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের অংশের পুরোটা অংশে শীতের হিম ছড়ানো থাকে।

কলেজের ভেতরের প্রাকৃতিক পরিবেশই নয় শুধু বাইরেও বিস্তৃত আছে নানা আয়োজন। ক্যাম্পাসের খুব কাছাকাছি কয়েক জায়গায় ভাপা পিঠা বিক্রি হয়। এগুলোরও খোঁজ জানে শিক্ষার্থীরা। হলের সামনের চায়ের দোকানগুলোতে মেলে খাটি দুধের চা। তাতে গলা ভেজাতে ভিড় জমে শিক্ষার্থীদের।

আরও পড়ুন : ১ম সমাবর্তনেই ভুলে ভরা সনদ!

সমাজবিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া নাজমুস সাকিব বলেন, ‘আগে শীতের সকালটা শুধু ঘুমানোর জন্য মনে হতো। তবে এখন নিয়ম করে রোজ ভোরে উঠি। কলেজের মসজিদে রোজ ফজরের নামাজ আদায় করে ক্যাম্পাসের মাঠে হাটতে শুরু করি। প্রথম দিকে একাই যেতাম। পরে আমার সঙ্গে আরও দুজন বন্ধু সঙ্গ দিয়েছে। হাটাহাটি শেষে কুয়াশা গায়ে জড়িয়েই হলের সামনের টংঘরের মামার দুধ চা হাতে করে খেতে খেতে হলে ফিরি। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

ওডি/এমএ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড