সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
তরুণরা কি একটু বেশিই ভালোবাসেন নিজেকে? গবেষকদের মতে, কথাটি অনেকটাই সত্যি। শুধু তাই নয়, গবেষণায় আরও প্রকাশ পায় যে, বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের নিজের প্রতি এই ভালোবাসা একটু একটু করে কমতে থাকে।
এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন এবং একটু চুপচাপ হন, তাদের নার্সিসিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। কেন এমনটা হয়? কারণ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একজন মানুষ নিজের চারপাশকে বুঝতে থাকেন। কর্মক্ষেত্রে একত্রে কাজ করা, চারপাশের অনেক মানুষের সঙ্গে মেশা- এই ব্যাপারগুলো ধীরে ধীরে তাকে প্রভাবিত করে। তার চিন্তাধারাকে নতুন রূপ দেয়। ফলে, পূর্ণবয়স্ক একজন মানুষ মানসিকভাবেও পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতার পরিবর্তন
গবেষণা শুরু হয় অনেক আগে। ১৯২৩ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া মত ৭৪৭ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন গবেষকেরা। এতে দেখা যায় যে, সে সময় যারা জন্মেছেন তাদের মধ্যে নার্সিসিজম অনেক বেশি পরিমাণে বিদ্যমান ছিল। যা কিনা ২১ শতকের মানুষের মধ্যে অনেকটা কম। কেন এমনটা হয়েছিল?
এজন্য মূলত দায়ী করা হয় আর্থ-সামাজিক অবস্থাকে। ইতোপূর্বে যে মানুষগুলো জন্মেছেন তাদের বাইরে কাজ করার ক্ষেত্রটা ছিল কম। বিশেষ করে নারীদের কথা এখানে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, আর্থিক স্বাধীনতা কম থাকায় ব্যক্তির মধ্যে নিজের কাজে ডুবে থাকার একটা প্রবণতা ছিল বেশি। ফলে, নিজেকে কেন্দ্র করে ভালোবাসা গড়ে ওঠার ব্যাপারটিও এখনকার চাইতে বেশি ছিল।
তুলনা করে দেখা যায় যে, বর্তমানের তরুণদের মধ্যে নিজেকে ভালোবাসার এই প্রবণতা অনেক কম। তবে দুই প্রজন্মকে একসঙ্গে দেখলে এটা বেশ সহজেই বলা যায় যে, কম বয়সে একজন মানুষের মধ্যে যে নার্সিসিজম থাকে সেটি বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে।
নার্সিসিজম কি ভালো, না খারাপ?
ওপরে যে কথাগুলো বলা হয়েছে সেটি নিয়ে আরও অনেক গবেষণা করা দরকার বলে মনে করেন সবাই। তবে এই গবেষণায় যে নার্সিসিজমকে দেখানো হয়েছে সেটি নিজেকে ভালোবাসা নয়। এটি হলো নার্সিসিস্টিক পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার। একজন মানুষ নিজেকে ভালোবাসতেই পারেন। নিজেকে ভালোবাসা অনেক বেশি ইতিবাচক একটি ব্যাপার। যেখানে সাধারণ নার্সিসিজম জীবনের একটা সময় বেশি থাকে, এনপিডি সারাজীবন খুব বাজেভাবে একজন মানুষের সঙ্গে থেকে যায়। যেটি কিনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আরও পড়ুন- রাগ সামলাবেন যেভাবে
বর্তমান সময়ে নিজেকে ভালোবাসার স্বাভাবিক যে প্রক্রিয়া সেটাও অনেক কম এই প্রজন্মের মধ্যে। আর সেটাকে ইতিবাচক না বলে খারাপ কিছুরই ইঙ্গিত বলে মনে করেন গবেষকেরা। কারণ, এই একটি ছোট্ট ব্যাপারই নতুন প্রজন্মকে হতাশা ও আত্মহত্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেটি মোটেই কাম্য নয়।
আপনি নিজেকে ভালোবাসেন? এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। নিজেকে ভালোবাসুন। কারণ, এটি আপনাকে ভালো থাকতে ও বাঁচতে শেখাবে। তবে, কোনো কিছুই অতিমাত্রায় ভালো নয়। তাই, নিজের প্রতি ভালোবাসাকেও সীমিত ও স্বাভাবিক রাখুন। এতে করে মানসিকভাবে আপনি সুস্থ থাকবেন অন্যদের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে।
সূত্র- হেলথলাইন
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড